মজুতদারি ও মুনাফাখোরি নিষিদ্ধ

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২২, ১০:৪০

যাযাদি ডেস্ক

অস্বাভাবিকভাবে মুনাফা লাভের আশায় মজুতদারি করা অভিশাপ বা গুনাহের কাজ। মূলত একদল মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী অবৈধভাবে মুনাফা লাভের আশায় ঘৃণিত কাজটি করে থাকে। হানাফি মাযহাবের মতে এটি মাকরুহে তাহিরমি আর অন্যান্য মাযহাবের মতে সম্পূর্ণরূপে হারাম।

 

মজুতদারির ফলে অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্ষুণ্ণ হয় বাজারে পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। এজন্য ইসলামি শরিআতে একে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেননা এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং বেশির ভাগ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হয়। প্রসঙ্গে হযরত মামার ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘জনগণের জীবিকা সংকীর্ণ করে যে ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য গুদামজাত করবে, সে বড় অপরাধী।আরও জেনে রাখো, ‘সে পাপী হিসেবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে।’ (সহিহ্ মুসলিম :১৬০৫) রসুলুল্লাহ্ (সা.) মজুতদারকে পাপী বলে আখ্যা দিয়েছেন। যেমন নবি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পণ্যদ্রব্য আটক করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী।’ (ইবনে মাজাহ্: ২২৩৮, মিশকাত শরিফ, পৃ. ২৫০)

এছাড়াও হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মূল্য বাড়ার উদ্দেশ্যে যে ব্যক্তি ৪০ দিন পর্যন্ত খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, সে ব্যক্তি আল্লাহর দায়িত্ব থেকে মুক্ত এবং আল্লাহ্ তার প্রতি অসন্তুষ্ট। সে মজুতকৃত সম্পদ দান করে দিলেও তার গুনাহ্ মাফের জন্য যথেষ্ট হবে না।’ (মিশকাত শরিফ :২৭৭২)

 

নবি (সা.) মজুদদার কালোবাজারিদের অভিশপ্ত উল্লেখ করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমদানি করবে সে রিজিকপ্রাপ্ত হবে। আর যে গুদামজাত করবে, সে অভিশপ্ত হবে।’ (ইবনে মাজাহ্ : ২১৪৪)

 

অবৈধভাবে অর্থোপার্জনের উদ্দেশ্যে দ্রব্যমূল্যের মূল্য বৃদ্ধি করাকে ইসলামে অত্যন্ত গর্হিত কাজ। জন্য তাদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তা- নবি (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ ঘটালে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা আগুনের ওপর তাকে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।

এছাড়াও হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, ‘আমি নবি (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘মজুতদার ব্যক্তি খুবই নিকৃষ্টতম ব্যক্তি। যদি জিনিসপত্রের দর হ্রাস পায়, তখন সে চিন্তিত হয়ে পড়ে। আর যদি দর বেড়ে যায়, তখন আনন্দিত হয়।’ (মিশকাত শরিফ : ২৭৭১)

মজুতদারি করা মানব সম্প্রদায়ের ওপর এমন একটি জুলুমকার্য, যার কারণে আল্লাহ্ তায়ালা মজুতদারদের মহামারি দরিদ্রতায় নিক্ষেপ করেন। তাই নবি (সা.) মজুদদারদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কেউ যদি মুসলমানদের থেকে নিজেদের খাদ্যশস্য আটকিয়ে রাখে (মজুতদারি করে), তবে আল্লাহ্ তায়ালা তার ওপর মহামারি দরিদ্রতা চাপিয়ে দেন।’ (আবু দাউদ : ৫৫, ইবনে মাজাহ : ২২৩৮)