আখিরাতের জন্য নিজেকে তৈরি করুন

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২২, ০৯:৫৫

যাযাদি ডেস্ক

 

 

দুনিয়ার জিন্দেগি শুধু ভোগ-বিলাসের জন্য নয় এর প্রতিটি সময় আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় করাই মুমিনের কাজ মুমিনের কাছে আখিরাতের চেয়ে দুনিয়া অতি নগণ্য সে দুনিয়ার কোনো কর্ম দিয়ে আখিরাতকে হারাতে চায় না, বরং দুনিয়ার কর্মকে আখিরাতের সামান বানিয়ে নেয়দুনিয়ার জীবন ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়’ (সূরা আল ইমরান-১৮৬)দুনিয়া মুমিনের জন্য কারাগার ...’ (মুসলিম-২৯৫৬) তাই কোনো মুমিন দুনিয়ার মোহে পড়ে আখিরাতকে ভুলে যেতে পারে না

 

সব কাজে আখিরাতকে স্মরণে রাখুন অন্তরে মৃত্যুর ভয় আনুন হৃদয়ে আল্লাহর মহব্বত জাগ্রত করুন আপনার প্রতিটি কাজ সুন্দর থেকে সুন্দরতর হয়ে উঠবে কেয়ামতের দিন আপনিও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভকারী বান্দাদের কাতারে শামিল হয়ে যাবেন

 

যখন মানুষের মাঝে বিচার-ফয়সালা করবেন ন্যায়ের পক্ষে থাকুন সত্যের পক্ষে রায় দিন আপনি কাউকে ন্যায় থেকে বঞ্চিত করবেন না পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন মানুষের মাঝে (কোনো বিষয়ের) বিচার-ফায়সালা করে থাকো তখন তা ন্যায় ইনসাফের ভিত্তিতে করবে’ (সূরা নিসা-৫৮) অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তোমরা দুটো দলের মধ্যে ন্যায় ইনসাফের ভিত্তিতে ফায়সালা করে দেবে আর তোমরা ন্যায়বিচার করবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ন্যায়বিচারকদের ভালোবাসেন’ (সূরা হুজরাত-)

 

তারুণ্য জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কখনো এই সময়কে হেলায় হারাবেন না এই সময়ের ইবাদতগুলো আপনাকে আল্লাহর নিকটতম মানুষে পরিণত করে দিতে পারে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে অনেকে পাপ কাজে লিপ্ত হয়, যা ব্যক্তির নিয়তকে খারাপ করে দেয় ভবিষ্যতে সে অনেক ভালো কাজ করবে বলে ধারণা করে অসৎ কাজ চালিয়ে যায় মানুষের এই প্রতারণা আল্লাহর বড়ই অপছন্দ এটি শয়তানের ধোঁকা তাই ভালো কাজকে কখনো আগামীর জন্য ছেড়ে দেবেন না আজকের এই স্বর্ণালি সময় জীবনে আর কখনো না- আসতে পারে তাই সময়কে হেলায় না হারিয়ে সময়ের কদর দিতে শিখুন মহানবী সা: বলেন, ‘কেয়ামতের দিন মানুষকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া ব্যতীত এক কদমও নড়তে দেয়া হবে না, তার মধ্যে একটি হলো- সে তার যৌবনকাল কোন পথে ব্যয় করেছেহজরত আবু বকর রা: বলেন, ‘যৌবনের ইবাদত বৃদ্ধ বয়সের ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি দামি...হজরত শেখ সাদী রা: বলেন, ‘দুনিয়া পরকালের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা এই যৌবনকালেই সংগ্রহ করে নাও

 

সময়ের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন হয়ে উঠুন সময় পেলেই ইবাদতে মশগুল হন ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি বেশি করে নফল ইবাদত করুন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করার চেষ্টা করুন রাসূল সা: বলেছেন, ‘যেদিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সে দিন আল্লাহ তায়ালা সাত ব্যক্তিকে তাঁর আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন তাদের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তি সে যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে’ (বুখারি-৬৬০)

 

সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখবেন না ভালো কাজে ব্যয় করুন যা কিছু দান করবেন সওয়াবের নিয়তে দান করুন দুনিয়ার ফায়দাকে উদ্দেশ্য বানাবেন না তাহলে সওয়াবের খাতায় কিছুই যোগ হবে না আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান করো ভালো কথা, তবে তা যদি গোপন রাখো আর তা গরিব-দুঃখীকে দিয়ে দাও, তা হবে তোমাদের জন্য বেশি উত্তম... তোমরা যাই করো না কেন সে সম্পর্কে আল্লাহ অবগত’ (সূরা আল বাকারা-২৭১)

 

বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদত করুন রাতের আঁধারে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কাঁদুন নিজের পাপের কথা আল্লাহর কাছে বলুন আপনার অন্তরটা নরম হয়ে আসবে ইবাদতে আপনি অনেক বেশি মনোযোগী হতে পারবেন বান্দার চোখের পানি আল্লাহর বড়ই প্রিয় আপনি বিনয়ের সাথে আপনার দাবিগুলো আল্লাহর কাছে পেশ করতে পারলে আল্লাহ আপনাকে ফিরিয়ে দেবেন না হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সা:-এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা সে দিন তাঁর আরশের ছায়া দান করবেন; যে দিন তাঁর ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না তাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি একজন, যে নির্জনে আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করে আর চোখের পানি ছেড়ে দেয়’ (বুখারি মুসলিম)

 

যাযাদি/ এস