হযরত ইব্রাহমি (আ.) এর মাধ্যমে যে কোরবানীর পথা চালু তাই পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হযরত মহাম্মদ (সা.) এর উন্মতদের মধ্যে চালু হয়। যা পালন করেছেন শেষ নবী মোহাম্মদ (সা.)। এই কোরবানী নিয়ে সমাজে অনেক পথা চালু হয়ে গেছে যার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বিশ্বের অন্যদেশগুলোর মত বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশেও ইসলামের নামে অনেক কিছু চাল রয়েছে ইসলাম সমর্থন করে না।
জানা যায়, কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে অনেকেই বিয়ে বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এসব অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের নিয়তেও কেউ কেউ কুরবানি দিয়ে থাকেন। তারপর সেই পশুর মাংস দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করেন। কিন্তু কুরবানির পশুর মাংস দিয়ে বিয়ে বা কোনো অনুষ্ঠানের আপ্যায়ন করা যাবে কিনা, কিংবা এই নিয়তে কুরবানি দেয়া যাবে কিনা-তা নিয়ে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে।
পবিত্র ইসলাম ধর্মে কুরবানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানি দেয়া হয়। কুরআন ও ইসলামিক স্কলারদের মতে, কুরবানির পর পশুর মাংস নিজে যেমন খাওয়া যায়। আবার অন্যকেও খাওয়ানো যাবে। সেই সময় যদি বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তাহলে সেখানেও ওই মাংস ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ আপ্যায়ন করতে কোনো নিষেধ নেই। তাই কুরবানির মাংস দিয়ে বিয়ে, কোনো অনুষ্ঠান বা ওয়ালিমা করতে বাধা নেই।
তবে বিয়ে, কোনো অনুষ্ঠান বা ওয়ালিমার উদ্দেশ্যে কুরবানি করা হলে তা বৈধ বা সহিহ হবে না। এ জন্য কোনো অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য কুরবানি দেয়া সহিহ নয়। কারণ, কুরবানি দেয়া হয় মহান আল্লাহর জন্য। তাই আল্লাহর উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কুরবানি দেয়া সহিহ হবে না।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এগুলোর (কুরবানির পশুর) রক্ত ও গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, কিন্তু তার কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া পৌঁছে। এমনিভাবে এগুলোকে তিনি তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা কর তোমরা এ কারণে যে, তিনি পথ প্রদর্শন করেছেন তোমাদের। তাই সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।’ (সুরা হজ: আয়াত ৩৭)
হযরত ইবরাহিম (আ.) মিনায় এসে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আবেগ-ভালোবাসায় নিজের প্রিয় সন্তান হযরত ইসলামইল (আ.)-কে কুরবানি দেয়ার কার্যক্রম করেছিলেন। পরে সেখানে মহান আল্লাহর নির্দেশে তার সন্তানকে সরিয়ে পশু দেয়া হয়।
কুরবানির নিয়ত ও চুক্তি হলো এমন- ‘অবশ্যই আমার নামাজ, কুরবানি, জীবন, মৃত্যু মহান আল্লাহর জন্য। যিনি পুরো সৃষ্টি জগতের প্রতিপালক। তার কোনো শরিক নেই।’ (সুরা আনআম: আয়াত ১৬২)
যাযাদি/ এস