বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘মহান মা’বুদের দরবারে অযুত শুকরিয়া আদায় করছি যে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বীনি ভাইদের সাথে এই গুনাহগার গোলামকে বসার তাওফিক দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে চলার পথে, সাংগঠনিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, লাখো মানুষের সমাবেশে শ্রোতা হিসেবে অথবা কোনো না কোনোভাবে শামিল হওয়ার সুযোগ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আমি আমার মা’বুদকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমার অতীতের মাহফিলগুলোতে আমি যে তৃপ্তি ও প্রশান্তি পেয়েছিলাম, রাব্বুল আলামীন তুমি সাক্ষী থাকো আজকে তার চাইতে শত গুণ বেশি প্রশান্তি উপলব্ধি করছি।
তিনি আরো বলেন, মুয়াজ্জাজ উলামায়ে কেরাম, আমার কাছে কেউ কেউ একটা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। আমি খুব দুর্বল মানুষ, ছোট মানুষ, ইলমে আমলে সব দিক থেকে আমি পিছনে। কিন্তু আমাদের মাওলা তো দুর্বল নন। কুরআন মাজিদের ভাষায় ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলাই সবকিছুর উপরে মহাশক্তিধর।’ সবকিছুর উপরে তাঁর কুদরতের আছর রয়েছে। আপনারা আমার জন্য দুআ করবেন, আল্লাহর এই গোলামের কারণে আল্লাহর দ্বীনের যেন কোনো অপমান না হয়, কোনো ক্ষতি না হয়। দ্বীনের জন্য যা প্রয়োজন, মহান রব অবশ্যই তা করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।’
আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন যে, ‘আমাদের জন্য মহান আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট, যিনি উত্তম অভিভাবক। তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ অভিভাবক ও সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী।’ সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় মু’মিনদের জন্য আল্লাহ তাআলাই যথেষ্ট। অনেকে হয়তো বলবেন, এমনটা কেনো আমরা আরো আগে একটু চিন্তা করতে পারলাম না। এটাও আল্লাহর হুকুম। আমরা গুনাহগার বান্দা হওয়া সত্ত্বেও পদে পদে দেখে থাকি যে আল্লাহ তাআলা তার হুকুম কিভাবে বাস্তবায়ন করেন। এবার আল্লাহ তাআলার মেহমান হিসেবে লাব্বাইক বলার সুযোগ আল্লাহ তাআলা আমাকে দান করেছিলেন। আমি হজ্জের সফরটা মাঝখানে সংক্ষিপ্ত করে দশদিনের জন্য আরেকটা দেশে গিয়েছিলাম। ওই দেশ থেকে আমার এখন বিশ্বের সব থেকে বড় মোড়ল যাকে বিবেচনা করা হয়, সেই দেশে আমার যাওয়ার দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। ওই সফরে যিনি আমার সঙ্গী হওয়ার কথা, তিনিও আজ এখানে উপস্থিত। আমরা এয়ারপোর্টে গেলাম। চেক-ইন-ডেস্ক আমাদের চেক ইন না করে আমাদেরকে আরেকটি ডেস্ক দেখিয়ে সেখানে যেতে বলল, যা শুধু দুই দেশের জন্য স্পেশালি ডেসিগ্নেটেড। চেক ইন ডেস্ক বলল, ওখান থেকে আপনাদের ক্লিয়ারেন্স আসার পর আপনাদের চেক ইন করা হবে। যেখানে যাওয়ার পর শুধু আমার সঙ্গীর ক্লিয়ারেন্স হলো। আমাকে বলা হল যে, আজ সকালেই আমরা একটা ইমেইল পেয়েছি ওমুক দেশের ওমুক সংস্থা থেকে। তারা আমাকে অনুরোধ করেছে যে আপনাকে যেন আমরা ফ্লাইটের জন্য এলাউ না করি। আমার সঙ্গী আমার চাইতে বয়সে একটু কম, তরুণ মানুষ আবেগ তাকে ঘিরে ধরেছে। আমি তার মাথা ও পিঠে হাত বুলিয়ে বললাম যে, আমরা কী আল্লাহ তাআলার ফায়সালার ওপরে তাওয়াক্কুল করি না? বললেন, করি। আমি বললাম, তাহলে আমাকে আল্লাহ তাআলার ওপর ছেড়ে দাও। আল্লাহ তাআলাই হয়তো চান না যে, আমি ওখানে যাই। হয়তোবা নিকট ভবিষ্যতে এরচাইতে বড় কোনো কল্যাণ আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দান করবেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা কুরআন নাজিলের দেশে ফিরে গিয়ে উমরাহ পালন করলাম। হজ্জের সময় মন ভরে মুলতাজিম, রুকনে ইয়ামানীতে ঝুলে থাকতে পারিনি। কিন্তু ফিরে এসে আলহামদুলিল্লাহ অনেকক্ষণ ঝুলে ছিলাম, কতক্ষণ ছিলাম আমি বুঝতে পারিনি। পরে আমার সঙ্গীরা বলেছে যে আপনি তো ৪২ মিনিট ঝুলে ছিলেন। যখন আমি অন্তরে তৃপ্তি অনুভব করেছি, তখন ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ তাআলাকে শুধু এতটুকু বলেছি, রাব্বুল আলামীন আমাদের জাতিটা বড় মজলুম। আর আলেম-উলামাকে চরমভাবে বেইজ্জুতি করা হয়েছে। যে আলেম-উলামা নবীর শিক্ষা অন্তরে ধারণ করেন, সাহাবায়ে কেরামের পথে মানুষকে চালান, তাদের ওপরেই সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন হচ্ছে। আমি তাদের বরবাদি তোমার কাছে কামনা করছি না। কিন্ত আলেম-উলামার স্বাধীনতা তোমার কাছে ভিক্ষা চাই। তুমি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে দাও, যেন দ্বীনের দাওয়াত মন খুলে দেয়া যায়।
তিনি বলেন, আমি গত ১৭ জুলাই দেশে ফিরলাম। ১৫ জুলাই থেকে মাঠ গরম হয়ে গেছে। ১৭ জুলাই ৪ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধ ছিল না। এরপরই যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। ওই দিন ছিল আশুরার দিন। চিন্তা করলাম যদি একটা দিন পরে আসি তবে আটকা পড়ে যাব। আর একদিন আগে আসলে যুদ্ধের মধ্যে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা খুব নিরাপদে আমাকে দেশে আসার সুযোগ করে দিলেন। সংগঠনের জন্য, দেশবাসীর জন্য আমি অপরিহার্য নই, কিন্তু দেশ ও সংগঠন আমার জন্য অপরিহার্য। আল্লাহ তাআলার কী মেহেরবানী! এই সময় যদি আমি বাইরে থাকতাম, তবে দেশের জন্য শুধু ছটফট করতাম। কিন্তু আল্লাহ তাআলা আমাকে দেশের জন্য কবুল করলেন। সঙ্গীকে বললাম, দেখলে আল্লাহ তাআলার পরিকল্পনাটা কী? আমরা যা চেয়েছিলাম, আল্লাহ তাআলা তা পছন্দ করেননি। বরং আল্লাহ তাআলা যা চেয়েছিলেন, তাই আমাদের কপালে জুটেছে।
জামায়াত আমির বলেন, আমি আপনাদের কৃতজ্ঞতা আদায় করে শেষ করতে পারব না। আল্লাহ তাআলার কসম, আমি কখনো কল্পনাই করিনি যে আপনারা আজকে মন খুলে এত সুন্দর কথা বলবেন। আল্লাহ তাআলা আমার মনের সাক্ষী, শুধু মা’বুদের দরবারে দুআ করি রাব্বুল আলামীন, প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের মুক্তিপাগল ইসলামপ্রিয় জনতাকে আমরা যেন বুকে ধারণ করতে পারি, এরকম একটা প্রশস্ত দিল আমাকে দান করুন। রব্বুল আলামীন শিখিয়ে দিয়েছেন ‘ওগো আমার রব! তুমি আমার হৃদয়কে শরহে সদর করে দাও, আমার সমস্ত কাজ সহজ করে দাও, আমার জবানের বক্রতা দূর করে দাও, যাতে সবাই আমার কথা বুঝতে পারে।’ সেই মা’বুদের দরবারে আকুতি রেখে আপনাদেরকে মাঝে মাঝে কষ্ট দেব। আল্লাহ তাআলার দ্বীনের জন্য আমাকে যত ছোট হতে হয়, আমি তার জন্য তৈরি আছি, আলহামদুলিল্লাহ। যেখানে যখন আপনারা প্রয়োজন মনে করবেন আপনাদের এই ছোট ভাইটিকে আপনারা দাওয়াত দিবেন। ইনশাআল্লাহ আপনাদের ডাকার সাথে সাথে লাব্বাইক বলব। আল্লাহ তাআলার দ্বীনের জন্যে আমিসহ আমাদের সংগঠনের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ সদা প্রস্তুত রয়েছেন, এই সাক্ষী আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। আল্লাহ তাআলার কাছে আরজ রাব্বুল আলামীন আমাদের মাথার ওপর সুবিধাবাদী এবং দ্বীনের দুশমনদেরকে আর কাঁঠাল খাইতে দিও না। আমাদেরকে হুঁশ দাও, আমাদেরকে হিম্মত দাও, আমাদেরকে হিকমা দাও, আমাদেরকে তোমার নিজের পক্ষ থেকে নুসরা দিয়ে তুমি আমাদেরকে চালাও। আমরা মহান মালিকের কাছে কায়মনোবাক্যে বলতে চাই ‘ও আমাদের মা’বুদ! তুমি আমাদেরকে সরল সঠিক সোজা পথের দিশা দাও। আমরা তোমারই কাছে সাহায্য চাই, এই পথটার ওপর অটল অবিচল রাখো।
তিনি আরো বলেন, শয়তান যেন আমাদের পা পিছলায়ে দিতে না পারে। তোমার শাহী খাজানায় আশ্রয় চাই, আউযুবিল্লাহি মিনাস-শাইত্বানির রাজিম।’ আজকের এই আঙ্গিনা এখন থেকে আপনাদের আঙ্গিনা। এখন থেকে আমরা সবাই একে অপরের জন্য। সবাই সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকব ইনশাআল্লাহ। অতীতের কোনো আচরণের জন্য আপনারা যদি সামান্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। আশা করি আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। আপনারা আমাদের ভাই। আপনারা যদি আমাদের ক্ষমা না করেন, তাহলে আমাদের ক্ষমা করবে কে? আমি আপনাদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা কী মন সাফ করে আমাদের ক্ষমা করলেন? যাঝাকুমুল্লাহু খাইরান। আপনারা মাফ করে দেওয়ায় আমরা মনে খুব প্রশান্তি পেলাম। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা করে পরামর্শের ভিত্তিতে আগামী দিনগুলোতে একসাথে পথ চলবো। এখানে দল মারকাজ কেউ বড় নয়, কেউ ছোটও নয়। বড়-ছোট আল্লাহ তাআলা ঠিক করবেন। মহান মা’বুদ বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে যিনি মুত্তাকী তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। সবচেয়ে বেশি সম্মানিত।’ আসুন, আমরা বড়-ছোটোর ব্যাপারটি বিশ্বমনিব মহান আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেই। এটা নিয়ে আমরা টানাটানি না করি। আমরা যেন পরস্পরকে সম্মান করতে পারি, দিলের ভেতর থেকে একটু মহব্বত করতে পারি- আল্লাহ তাআলা আমাদের সেই তাওফিক দান করুন, আমিন।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ওলামা কমিটির সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে না যে আজকে আমিরে জামায়াতের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে দেশের সকল পর্যায়ের উলামায়ে-কেরাম এখানে উপস্থিত হয়েছেন। এজন্য আমি আল্লাহ তাআলার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করেছি, আলহামদুলিল্লাহ। আগতদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা আদায় করেছি যে আপনারা এখানে এসে আজকের এই মতবিনিময় সভাকে সৌন্দর্য্যমন্ডিত ও সমৃদ্ধ করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, দল-মত-নির্বিশেষে সকল মারকাজের উলামা-মাশায়েখ ও ইসলামী নেতৃবৃন্দকে ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে, দ্বীনের স্বার্থে, দেশ রক্ষার স্বার্থে, সর্বোপরি অপরাধমুক্ত আদর্শ ইসলামী সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখা, দেশ গঠন, সমাজ উন্নয়ন, সমাজ সংস্কার ও আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ওলামায়ে-কেরাম গুরুত্বপ‚র্ণ অবদান রেখেছেন। আমরা উলামায়ে কেরাম যে মতের যে পথের বা যে দলেরই হই না কেন, আমরা যদি মৌলিক বিষয়ে এক থাকতে পারি, তাহলে এদেশে ইসলামের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, ময়দান যেদিকে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষও সেদিকেই ঝুঁকছে। এতে বোঝা যায় দেশের মানুষ নতুন কিছু পেতে চায়, নতুন একটা ধারা চায়। আর সেটি হলো ইসলামী ধারা, সেটি হলো খেলাফতে রাশেদীনের ধারা, ইনশাআল্লাহ।
হেফজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, আমিরে জামায়াত সকল মারকাজের আলেমদেরকে একত্রিত করে সকলকে ধন্য করেছেন। আমাদের এই ঐক্য বা হাজারো ঐক্য কোনো কাজে আসবে না, যদি না আমরা ব্যালটের যুদ্ধে একত্রিত হতে পারি। আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক দেশ। তাই আমাদেরকে গণতান্ত্রিক সিস্টেমে আগাতে হবে।
আল আজমাতে সাহাবার আমির আল্লামা খুরশিদ আলম কাসেমী আমিরে জামায়াতকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আমার একটা পরামর্শ- তাহলো কালেমাপন্থীদের এক হতে হবে। সেই খাইরুল কুরুনী থেকে নিয়ে বৃটিশ আন্দোলন পর্যন্ত আমরা এক ছিলাম। তাই আমাদের আবারও এক হওয়া দরকার। বিগত ৫২ বছর যাবৎ যারা আমাদের শাসন করেছে, মূলত তারা সকলেই আমাদের শাসনের নামে শোষণ করেছে। তাই আমাদের যতই একতেলাফ থাকুক না কেন, আমাদের নির্বাচন কেন্দ্রীক এক হতে হবে। দেশের মানুষ এখন তৃতীয় কাউকে চায়। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে দেখানো হয়েছে। আমাদের শাসকদেরকে যুলুমবাজ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এগুলো কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। তুরস্ককের মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে পুরা জাতিকে নাস্তিক্যবাদ বানিয়ে ফেলেছিলো। তাই আমাদের সর্বাগ্রে শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলামী ধারায় আমূল পরিবর্তন সাধন করতে হবে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী বলেন, মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহ.) থেকে আমাদের এই দলের পদচারণা। বাতিল সর্বদা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু আমাদের মাঝে হাজারো এখতেলাফ। এখন সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
খেলাফত আন্দোলনের আমিরে শরীয়ত মুফতি আবু জাফর কাসেমী বলেন, দল-মত-নির্বিশেষে আমাদের এক হতে হবে। আমাদের অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। আমাদের আর কোনো রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেয়া যাবে না।’
তরুণ ইসলামিক স্কলার মাওলানা রেজাউল করিম আবরার বলেন, ‘সকল ধরনের আলেম উলামা এক জায়গাতে দেখে আনন্দে বুকটা ভরে যাচ্ছে। আমাদের যার যে সংবিধান আছে, সেটা সাময়িক স্থগিত রেখে হলেও আমাদের এখন এক হতে হবে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্বাচনে কাজ করতে হবে।’
জামেয়া মাদানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মনিরুজ্জামান কাসেমী বলেন, “আমরা ঐক্য ঐক্য বলতেছি। কিন্তু আমরা তো ঐক্যবদ্ধ ছিলামই। মাঝে কিছুদিন আমরা দূরে সরে গেছিলাম। বিচ্ছিন্ন হয়ে আমরা সকলেই নির্যাতিত হলাম। এখন আমাদের সকলকেই আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সব থেকে বড় ইসলামী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মুহতারাম আমিরে জামায়াতের সাথে আমার অনেকবার দেখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী মানুষ। তাই আমার বিশ্বাস তিনিই পারবেন আমাদের সবাইকে এক প্লাটফর্ম-এ দাঁড় করাতে, ইনশাআল্লাহ।”
হেফাজতের আরেক শীর্ষ নেতা মুফতি আজহারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে আমরা সকলে একত্রিত হতে পেরেছি সে জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। যালিম সরকার যাদেরকে হত্যা করেছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। শাপলা চত্বরে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যদি আমাদের সাথে থাকেন তাহলে কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবেনা। আর যদি আল্লাহ আমাদের সাথে না থাকেন তাহলে আমাদের কেউ জিতিয়ে দিতে পারবেনা। আমার জানা মতে, জামায়াতে ইসলামীর আমির প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখেন। তিনি একজন মুখলিস ব্যক্তি। যদিও সরাসরি প্রশংসা করা ঠিক না, তবুও জানার জন্য বলছি। তাই আমার মন বলে যে তার দ্বারাই একটি ইসলামী রাষ্ট্রগঠন সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং উলামা কমিটির সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এবং উলামা কমিটির সেক্রেটারি ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানীর সঞ্চালনায় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-উলামা-এর এ মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও শিক্ষাবিদ, মাওলানা মুফতি মহিউদ্দীন কাসেমী, পেশ ইমাম, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, মুফতি খুরশিদ আলম কাসেমী, আমির আজমতে সাহাবা, মাওলানা আযীযুল হক ইসলামাবাদী, যুগ্ম মহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, মুফতি রেজাউল করীম আবরার, ইসলামিক স্কলার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, মাওলানা আব্দুল মজিদ আতহাবী, সিনিয়র নায়েবে আমির, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, মুফতি আজহারুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও মুহতামিম সাইনবোর্ড মাদরাসা, মুফতি ফখরুল ইসলাম, আমির জনসেবা আন্দোলন, মুফতি রাদেশ বিন নূর, নায়েবে মুহতামিম, মাখজানুল উলূম মাদরাসা,
উপস্থিতি ছিলেন মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমী, প্রিন্সিপ্যাল, জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, আমিরে শরীয়াত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, মাওলানা মুফতি আবুল কালাম, মুহতামিম মিরপুর দারুল উলূম, মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, ছোট পীর সাহেব, ছারছীনা, পীরজাদা মাওলানা আব্দুল মোমেন নাসেরী, মিরেরসরাই দরবারের পীর সাহেব, মাওলানা ফয়জুল্লাহ আশ্রাফি, মহাসচিব ইসলামিক কানুন বাস্তবায়ন পরিষদ, মুফতি আজিজুল হক আজিজ, আমির মুসলিম জনতা ঐক্য পরিষদ, মাওলানা আবুল কাশেম কাসেমী, নায়েবে আমির, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও মহাসচিব বাংলাদেশ উলামায়ে দেওবন্দ পরিষদ, মুফতি আলী হাসান উসামা, মহাসচিব, আজমাতে সাহাবাহ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুলসহ বিভিন্ন মাকতাবে ফিকার, মারকাজ, দরবার ও শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর মাওলানা আ.ন.ম রশীদ আহমদ মাদানী, ড. মাওলানা হাবীবুর রহমান, সভাপতি ঢাকা মহানগরী উত্তর উলামা বিভাগ, অধ্যক্ষ মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, সভাপতি, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উলামা বিভাগ,
আরো ছিলেন মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, সহকারী সেক্রেটারি বাংলাদেশ মাজলিসুল মুফাসসিরীন, মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমাদ, সহকারী সেক্রেটারি বাংলাদেশ মাজলিস‚ল মুফাসসিরিন, হাফেজ মাওলানা লুৎফর রহমান, আমির, জাতীয় ইমাম মোয়াজ্জিন পরিষদ ও মহাসচিব বাংলাদেশ খিলাফতে রব্বানী, শাইখ মাওলানা মোস্তাফিজ রহমানী, মহাসচিব জাতীয় ইমাম-খতিব পরিষদ ও বিশিষ্ট টিভি উপস্থাপক, মুফতি মাওলানা নূরুজ্জামান নোমানী, চেয়ারম্যান ইসলামী দাওয়াহ সার্কেল, পীরজাদা মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, পীর সাহেব, টেকেরহাট দরবার, প্রফেসর ড. মাওলানা শামসুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ড. মাওলানা মীর মানজুর মাহমুদ, ড. মাওলানা কামরুল হাসান শাহীন, মুফতি হাফেজ মাওলানা মাসউদুর রহমান জাহেদী, আমির জাতীয় খতিব পরিষদ, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ বকশী, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, অধ্যক্ষ মাওলানা মহিউদ্দীন গাজী, ড. মাওলানা মীম আতিকুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা কাওসার আহমাদ, মুফতি তাজুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন মাকতাবে ফিকারের প্রায় একশত শীর্ষ উলামায়ে কেরাম এবং পীর-মাশায়েখ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
যাযাদি/ এস