শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান স্বাধীনকে প্রধান করে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলাটি দায়ের করেন আহত ছাত্র আশিকুর রহমান। এ মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মুনীর বলেন, নয়জনের নাম উল্লেখ করে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে ১২ জনকে। মামলার পর রাতে দুইজন ও সকালে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের ছোট ভাই মিঠু ও স্ত্রী বিউটি রয়েছেন। হামলার ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নত করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অপর দুইজনের নাম পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

শ্রম আইন লঙ্ঘন / জামিনের মেয়াদ বাড়ল ড. ইউনূসের

তিনি বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাকি আসামি গ্রেপ্তারের পুলিশ অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর বেসরকারি শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরিরুজ্জামান স্বাধীনের ভাই মিঠু ও টিটুসহ একদল ক্যাডার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হলে তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত আদেশের বলে দ্রæত সময়ে অন্য প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে তাদের মাইগ্রেশান সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে, দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল কলেজটি পরিদর্শন করেছেন। শর্ত পূরণ না হওয়ায় গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রাণলয় কলেজটি বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের নির্দেশ দেয়। তবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার প্রেক্ষিতে শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল কলেজটি পরিদর্শনে আসেন।

এরা হলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর একেএম আমিরুল ইসলাম মোরশেদ, বিএমএন্ডডিসির প্রতিনিধি প্রফেসর ডা. সরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাপকম এর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কলান বিভাগের উপ-সচিব আবদুল কবীর ও স্বাস্থ্য শিক্ষা দপ্তরের সহকারি পরিচালক ডা. উৎপল কিশোর। তারা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।

পরে প্রফেসর ডা. সরফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখলাম। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। কি কি জিনিস নাই আর কি কি জিনিস আছে তা দেখেছি। মেডিকেল কলেজের যে পরিবেশ থাকা প্রয়োজন তা না থাকলে সেটি চলবে না। তবে যদি পরিবেশ তৈরী করতে পারে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারে তবে ঢাকায় গিয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিব।

হামলার ঘটনায় ঘৃণা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার হবে।

তিনি বলেন, কোন দিন যদি এ মেডিকেল কলেজ চালু হয় তবে শিক্ষক নিয়ে আসতে হবে। যতদিন শিক্ষক নাই ততদিন শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি পারি তাদের অন্য কলেজে পাঠানো হবে।