মাদারীপুর সদর উপজেলার গাছবাড়িয়া এলাকার ইজিবাইক চালক সুলতান বেপারীকে (৪৫) হত্যা মামলায় সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, শরিফুল বেপারী (৩০) ও জনি বেপারী (২৫)। তারা রাজৈর উপজেলার সুতারকান্দি গ্রামের কুদ্দুস বেপারীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার ঘটকচর থেকে গাছবাড়িয়া এলাকার সুলতান বেপারীর ইজিবাইকে যাত্রীবেশে ওঠেন আসামি জনি বেপারী, শরীফুল বেপারী, শাওন জমাদ্দার ও সাব্বির হাওলাদার। পরবর্তীতে রাত পৌনে ১০টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার আশাপাট গ্রাম হতে কালীরবাজার যাওয়ার সময় পথে নৃশংসভাবে সুলতান বেপারীকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসামিরা জনতার হাতে ধরা পড়ে। পরে আসামিদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। একই সঙ্গে আটক ৪ জনকে সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

শপথ নিয়েছেন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি

ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ৪ আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন থানার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিল্টু দাস। যুক্তিতর্কের প্রক্রিয়া ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক দুজনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অপর দুই আসামির বিচার কার্যক্রম শিশু আদালতে চলমান রয়েছে। এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

অপরদিকে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও পরিবার।

নিহতের স্ত্রী হাফিজা বেগম বলেন, একটি ইজিবাইকের জন্য আমাকে বিধবা করেছে যারা তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় খুশি। এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাই।

মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং জানান, ২০১৮ সালের চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক চালক সুলতান বেপারীর হত্যা মামলায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক চার আসামির মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক দুজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন।

এছাড়া মামলার অপর দুজন আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বিচার প্রক্রিয়া শিশু আদালতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট এবং উচ্চ আদালতে এই রায় বহাল থাকবে বলে আমরা আশা করছি।

যাযাদি/এস