নওগাঁয় আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার ১১ দিনেও কেউ আটক হয়নি

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৪৭

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি

 

 

 

 

নওগাঁর মান্দায় স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে মারপিট করায় অভিমানে জেসমিন আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে প্ররোচণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেসমিন আক্তারের বাবা সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে মান্দা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

নিহত জেসমিন আক্তার মান্দা উপজেলার গণেশপুর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের আবদুস সাত্তার মোল্লার স্ত্রী ও দুই সন্তানের জননী।

তিনি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের ঘোনপাড়া প্রসাদপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের তৈয়মুর মোল্লার ছেলে আবদুস সাত্তার মোল্লার সঙ্গে প্রায় ৯ বছর আগে প্রসাদপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে জেসমিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় জামাইকে টাকাসহ বিভিন্ন উপঢৌকনও দেওয়া হয়েছিল।

মামলার বাদী সাইদুর রহমান জানান, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক ছোটখাটো বিষয় ও নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরে মেয়েকে প্রায়ই নির্যাতন করে আসছিল জামাই আবদুস সাত্তার। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশও হয়েছে। কিন্তু মেয়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। শাশুড়ি সামেনা বেগমের সহায়তায় জামাই সাত্তার মেয়ের ওপর নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্যাতনের সময় জামাই সাত্তার ও তার মা সামেনা বেগম প্রায়ই আত্মহত্যার জন্য প্ররোচিত করতেন মেয়েকে।

 গত ৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার বিষয় নিয়ে আবারও মারপিট করা হলে মেয়ে জেসমিন অভিমানে বিষপান করে। এরপর অসুস্থ অবস্থায় মান্দা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় জামাই সাত্তার মোল্লা ও তার মা সামেনা বেগমের বিরুদ্ধে মান্দা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে তারা পলাতক রয়েছেন। তবে স্থানীয়রা বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ১০ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে সূর্যনারায়ণপুর গ্রামে নেওয়া হলে সেখানে হাজার-হাজার উৎসুক জনতা ভিড় জমাতে থাকে। ওই সময় নিহতের বাবা-মা এবং তাদের পরিবারের লোকজন শেষবারের মতো নিহতের লাশ দেখতে যান। কিন্তু ওই সময়ও তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং মারপিট করে বেইজ্জতি করা হয়। তাদের অভিযোগ, যেই মেয়েটির সাথে তাদের দুশ্চরিত্র জামাইয়ের স্থানীয় এক পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ির লোকজনেরাই তাদেরকে বেইজ্জতি করা এবং মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান জানান, আত্মহত্যার প্ররোচনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের আটকের জোর চেষ্টা চলছে।

 

যাযাদি/এস