জামায়াত প্রসঙ্গে আপিল বিভাগ : আমরা দেখব, আদালতের হাত অনেক লম্বা

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৫১

যাযাদি ডেস্ক

জামায়াতে ইসলামীর মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধের আবেদনের শুনানিতে আপিল বিভাগ বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন। আমরা সব বিষয় দেখব, আদালতের হাত অনেক লম্বা।’ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

শুনানির শুরুতে জামায়াতের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন ৮ সপ্তাহ সময় আবেদন করেন। তিনি বলেন, সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কেন বারবার সময় নিচ্ছেন। সময় নিয়ে কোর্টে আসেন না কেন। এখানে সময় নেবেন আর অন্য কোর্টে মামলা করবেন তা হতে পারে না। আমরা সবই সিসি ক্যামেরায় দেখতে পাই।

এ সময় ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর সময় আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, তারা আদালত থেকে সময় নিয়ে যায়, আর তলে তলে মিটিং-মিছিল চালিয়ে যাচ্ছে। একটি বৈধ দলের মতো সব কর্মসূচি পালন করছে। গত ১৫ অক্টোবরেও মিছিল সমাবেশ করেছে। 

তখন আপিল বিভাগ বলেন, অপেক্ষা করুন আমরা সব বিষয় দেখব। আদালতের হাত অনেক লম্বা। এ সময় আপিল বিভাগ জামায়াতের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর সময় দেওয়া হবে না।

পরে আদালত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির মিছিল-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। এছাড়া আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগের আবেদনের শুনানিও একইদিন হবে।

এর আগে গত ২৬ জুন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে চলা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দলটির মিছিল-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর পক্ষে এ আবেদন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।

এ ছাড়া আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক আরেকটি আবেদন করেন মাওলানা রেজাউল হক চাঁদপুরী। এটিও দাখিল করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। 

এই আবেদনের পর ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেছিলেন, আমরা দু’টি আবেদন করেছি। একটা হচ্ছে হাইকোর্টের রায় বলবৎ থাকার পরও ১০ বছর পরে জামায়াত কর্মসূচি পালন করেছে। আমরা জামায়াতের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি। আরেকটি আদালত অবমাননার। কারণ তারা রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে, যেখানে আদালত অবমাননার বিষয় আছে। অথচ হাইকোর্টের রায়ে তাদের নিবন্ধন অবৈধ।

আপিলে পক্ষভুক্ত ৮ নেতা : এদিকে এ দিন আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সমাবেশ করে রেজিস্ট্রেশন দাবি করায় আদালত অবমাননার আবেদনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবর রহমানসহ বর্তমান নেতৃত্বে থাকা ৮ নেতাকে পক্ষভুক্ত করেছেন আপিল বিভাগ। 

অন্যরা হলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, প্রচার সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ডক্টর শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমির আব্দুর রহমান মুসা, সেক্রেটারি ডক্টর রেজাউল করিম, জামায়াত নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া।

যাযাদি/ এস