ভারতে পালানোর সময় সঙ্গে করে প্রায় ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যান সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু সেই টাকা ভারতীয়রা তাকে মেরে নিয়ে যান বলে তিনি জানান।
জানা যায়, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটকের সময় একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয় মানিকের। ভিডিওতে দেখা যায় বিজিবি সদস্যরা তার পরিচয় জানতে চান।
নিজের পরিচয় স্বীকার করে মানিক বলেন, ‘আমি বিচারপতি মানিক।’
আটকের পর স্বীকারোক্তিতে তিনি বলেন, ‘আমি ১৫ হাজার টাকার কথা বলে সীমান্ত পার হতে চাচ্ছিলাম। পরে আমাকে দুই ছেলে ভারত সীমান্তে নিয়ে আমার সঙ্গে থাকা সব টাকা এবং মোবাইল নিয়ে যায়।’
ভিডিওতে দেখা যায়, কেউ সাবেক বিচারপতি মানিকের গলায় গামছা পেছিয়ে হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানায়।
সঙ্গে কী আছে জানতে চলে মানিক বলেন, ‘আমার কাছে অনেক টাকা ছিল। আমাকে মেরে ৬০-৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুজন। এখন আমার সঙ্গে ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট আর কিছু টাকা আছে।’
পরে কয়েকজন তাকে জিজ্ঞেস করেন যে, আপনি পালিয়ে যাচ্ছিলেন কেন। তখন বিচারপতি মানিক বলেন, ‘প্রশাসনের ভয়ে পালিয়ে যেতে চাচ্ছিলাম। তখন অপর পাশ থেকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি তো অনেক জুলুম করেছেন।’
বিজিবি সদস্যদের এক প্রশ্নের জবাবে মানিক বলেন, ‘আমি কোনো জুলুম করিনি।’
বিজিবি জানায়, সাবেক বিচারপতি মানিক সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এসময় স্থানীয় জনগণের হাতে তিনি ধরা পড়েন। পরে তাকে আটক করা হয়।
জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করা হয়েছে। যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এর আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট নোয়াখালীর আদালতে মামলা করা হয়।
এছাড়া কোটা আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে আলোচক হিসেবে হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
যাযাদি/ এস