সহজ রান্নার প্রণালী
নারকেল কোরা ও ছোলা দিয়ে কচুর শাকের ঘন্ট
প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২৫, ১০:০৭

কচুর শাকের ঘণ্ট দুই বাংলাতেই জনপ্রিয়। কচু বেছে, কেটে রান্নার ঝক্কি অনেক। তাই রেস্তরাঁ থেকেই আনিয়ে খাওয়া হয়। তবে নিরামিষ কচুর শাকের ঘন্ট রাঁধা খুব কঠিন নয়। রান্নার সহজ প্রণালী রইল শুধু আপনার জন্য।
বাঙালির ঘণ্ট রান্নার ঐতিহ্য আজকের নয়। দেশভাগ, ভিটেমাটি ছেড়ে আসা, ছিন্নমূলের ব্যথা তখনও নীল করেনি বাঙালিকে। মিলেমিশে এই অবিভক্ত বাংলাতেই তৈরি হয়েছে একের পর এক স্বাদ। বাঙালি হেঁশেলে ফলের খোসা থেকে ডগা, কাণ্ড থেকে শিকড়, ফুল থেকে পাতা, সব কিছু দিয়েই তৈরি হয় নানা ব্যঞ্জন।
শুক্তো, ঘণ্ট, ছ্যাঁচড়া, ছেঁচকি, চচ্চড়ি, ছক্কা, দোলমা, ডালনা— রেসিপির শেষ নেই। কচুর শাকের ঘণ্ট তেমনই একটি। দুই বাংলাতেই অত্যন্ত প্রিয় এই রান্নাটি। কচুর ডাঁটার সঙ্গে নারকেল, ভেজানো ছোলা, কখনও চিংড়ি, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে বেশ কষিয়েই রাঁধা হয় কচুর শাক। বর্ষার দিনে বাজারে ভাল কচু পাওয়া যায়। এই সময়ে কচুর শাকের ঘণ্ট রান্না করতেই পারেন। রইল নিরামিষ কচুর শাক রান্নার একটি প্রণালী।
নিরামিষ কচুর শাকের ঘণ্ট
উপকরণ
৫০০ গ্রাম কচুর শাক; আধ কাপ নারকেল কোরা; ১/৪ কাপ ছোলা ভিজিয়ে রাখা; ২-৩টি শুকনো লঙ্কা; ১ চামচ পাঁচফোড়ন; ১ চামচ আদাবাটা; ১ চামচ জিরে গুঁড়ো; ১ চামচ ধনে গুঁড়ো; ১ চামচ হলুদ গুঁড়ো; আধ চামচ লঙ্কাগুঁড়ো; ৩টি কাঁচালঙ্কা; ৪ চামচ সরিষার তেল; পরিমানমত লবন ও চিনি স্বাদমতো; লেবুর রস বা তেঁতুলের পেষ্ট।
প্রণালী
কচুর শাকের ডাঁটা ও পাতা ভালো করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। খেয়াল রাখবেন, কচি অংশগুলোই ব্যবহার করবেন। এবার পানি ও লবন মিশিয়ে ভাল করে কচুশাক সেদ্ধ করে নিতে হবে। শাক সেদ্ধ হয়ে নরম হলে নামিয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। হাত দিয়ে বা চামচ দিয়ে হালকা করে চটকে নিতে পারেন, তবে একাবারে মিহি করবেন না। অনেক সময়ে কচুতে গলা চুলকাতে পারে, তাই সেদ্ধ করার সময়ে সামান্য তেঁতুল বা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
সারারাত ছোলা ভিজিয়ে রাখলে ভাল হয়। যে দিন রান্না করবেন, তার আগের দিন রাত থেকে ছোলা ভিজিয়ে রাখবেন। এই ছোলা লবন দিয়ে অল্প সেদ্ধ করে নিন। নারকেল কুরিয়ে রেখে দিন। ছোট ছোট টুকরো করেও নিতে পারেন।
এবার কড়াইতে তেল দিয়ে শুকনো লঙ্কা ও পাঁচফোড়ন দিন। ফোড়নের সুগন্ধ বার হলে আদাবাটা ও কাঁচালঙ্কা দিয়ে হালকা কষিয়ে নিন। এবার সেদ্ধ করা কচুর শাক কড়াইতে দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করুন।
হলুদগুঁড়ো, জিরেগুঁড়ো, ধনেগুঁড়ো এবং লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে নাড়ুন। তারপর সেদ্ধ করা ছোলা এবং নারকেল কোরা দিন। সামান্য চিনি দিতে পারেন। স্বাদমতো লবন দিন। আঁচ কমিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করুন।
যতক্ষণ না শাকের পানি শুকিয়ে যায়, ততক্ষণ কষাতে হবে। মিশ্রণ ঘন হলে তখন ভাল করে ভেজে নিন। সামান্য সরিষার তেল দিয়ে নাড়ুন। শাক একদম শুকনো শুকনো হলে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন কচুর শাকের ঘণ্ট। তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন।