শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু আজ

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৫৬

আজ ভোরে উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হতে পারে। এজন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়েছে। এর আগে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম ঘিরে বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপ ঘুরে আসে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধি দল। ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মজুত করা হয়েছে ৬৬ টন খাদ্যসামগ্রী।

অনেক বিতর্কের পর কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসানচর যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ৫০০ রোহিঙ্গার একটি দল আজ বৃহস্পতিবার ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হবে। স্বেচ্ছায় যারা যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের পাঠানোর মাধ্যমেই এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে একাধিক কাপড়ের প্যান্ডেল ও বুথ তৈরি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপক আয়োজন চোখে পড়ার মতো।

ক্যাম্প-২০ এর হেডমাঝি মোহাম্মদ হোছন বলেন, ক্যাম্প-২০ এবং ২০ এক্সটেনশন থেকে ৮টি রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। ক্যাম্প-১৭ এর হেডমাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, তার ক্যাম্প থেকে ৭০ পরিবারের নাম দেওয়া হলেও ৯টি পরিবার ভাসানচরে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। ক্যাম্প-৫ এর হেডমাঝি জাফর আলম বলেন, এ ক্যাম্প থেকে ৫টি রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক।

এদিকে শেষ পর্যন্ত ১ লাখ রোহিঙ্গা ভাসানচর যাচ্ছে- এমন খবরে উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করছেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার আগে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সরকারের পরিকল্পিত আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।

এদিকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজ। প্রথম দুই মাস তাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। এরপর নিজ নিজ বাসস্থানেই তারা রান্না করতে পারবেন।

সম্প্রতি দ্বীপটি ঘুরে দেখে গেছে পালস বাংলাদেশ সোসাইটি, কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ, ফ্রেন্ডশিপ, এসএডব্লিউবি, শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল : বাংলাদেশ, গ্লোবাল উন্নয়ন সংস্থা, আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার, সনি ইন্টারন্যাশনাল, আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন, হেলথ দ্য নিডি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, জনসভা কেন্দ্র, কারিতাস বাংলাদেশ, সমাজকল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস), সোশ্যাল এইড, সিডিডি, মুক্তি- কক্সবাজার, ভলান্টারি অরগানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট, আর টি এম ইন্টারন্যাশনাল, মাল্টি সার্ভ ইন্টারন্যাশনাল, আল্লামা ফয়জুল্লাহ ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর অল। এসব এনজিও সেখানে কাজও শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে ঠাসাঠাসির বসবাস ছেড়ে ভাসানচরে যেতে তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা রাজি হয়েছে। তবে চার থেকে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত।

যাযাদি/এমএস/১০:২১এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে