শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

​চসিক নির্বাচনে জয়ের পথে নৌকা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ২২:০০

কিছু কেন্দ্রে সংঘাত সংঘর্ষ, ইভিএম ভাঙচুর একজনের প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন (চসিক) মেয়র পদে বিজয়ের পথে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৭৩৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬৯ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে নৌকা প্রতীকে রেজাউল করিম পেয়েছেন লাখ ৩৭ হাজার ৮৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১৮ হাজার ০৫ ভোট। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোট গণনা চলছিল। দুই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছে।

এর আগে বুধবার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সকালে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম থেকে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান। প্রথমবারের মতো চসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে ইভিএমের মাধ্যমে। গত বছরের ২৯ মার্চ চসিকের এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সেই নির্বাচন ১০ মাস পিছিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে নির্বাচনে কারচুপি কেন্দ্র দখলের অভিযোগ আনা হলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মোটামুটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বুধবার বিকেলে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালে বিএনপির সব অপপ্রয়াস ভণ্ডুল হয়েছে। বিএনপিসমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী কর্তৃক ইভিএম মেশিন ভাঙা কেন্দ্র দখলসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছিল বিএনপি। বরাবরের মতো নির্বাচনেও বিএনপি ভোটের মাঠে অংশগ্রহণ না করে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তার দায়ভার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপরে চাপানোর চেষ্টা করেছে।

অন্যদিকে, ২৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের দিন প্রাণহানি ঘটল। বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিন কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন প্রাণ হরিয়েছেন। প্রচারণার সময় সংর্ঘর্ষে আরও দুজন মারা যান। ফলে নির্বাচনে তিনজনের প্রাণহানি ঘটল। তাছাড়া নির্বাচনের দিন গুলি, হামলা, পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভোটকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত হয়ে আরও অন্তত অর্ধশত মানুষ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষিপ্ত মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবারের নির্বাচন ঘিরে শুরু থেকেই সহিংসতার আশঙ্কা আগেই ছিল। কারণে ভোটের দিনের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে নেওয়া হয়েছিল বড় ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা। সিটি এলাকায় ভোটারদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু ভোটের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও ভোট দিয়ে সহিংসতা ঠেকানো যায়নি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত অবস্থা আগের নির্বাচনগুলোতেও ছিল। ভোটের দিন মৃত্যুর ঘটনা আগে কবে ঘটেছিল, সে কথা মনে করতে পারেন না অনেকেই। বিশেষ করে ২০১০ ২০১৫ সালের দুটি নির্বাচনে বড় ধরণের সহিংসতা ঘটেনি। ২০০৫ সালের নির্বাচনে ভোটের আগের দিন নিহত হয়েছিলেন শ্রমিক লীগের এক কর্মী। ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচন ঘিরে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে