রঙ পরিবর্তন করে লুকিয়ে রাখা হয় ঘাতক কার্গোটি

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৩২

যাযাদি ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চডুবিতে ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কার্গো জাহাজটিকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বাহিনী। তবে আটক করতে বেগ পেতে হয়েছিল কোস্ট গার্ডের টহল দলকে। কারণ কেউ যেন চিনতে না পারে- সেজন্য জাহাজটির রঙ পরিবর্তন করা হয়েছিল।

 

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে ১৪ জন স্টাফসহ এসকেএল-৩ নামের কোস্টার কার্গোটিকে আটক করা হয়। বিকেল পৌনে ৩টায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আমিরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

যেভাবে ১৪ স্টাফসহ আটক হলো ঘাতক জাহাজটি

 

লে. কমান্ডার আমিরুল হক বলেন, ‘কোথাও কোনো দুর্ঘটনা, ডাকাতি বা দস্যুতার ঘটনা ঘটলেই আমাদের টহল টিমগুলোর সক্রিয় থাকে। লঞ্চডুবি ও হতাহতের ওই ঘটনায় কোস্ট গার্ডের টহল টিম নজরদারি বৃদ্ধি করে।’

 

তিনি বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড টিম জানতে পারে যে, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এলাকায় ঘাতক কার্গোটি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত টহল টিম গজারিয়ায় পৌঁছে। কিন্তু দেখা যায় যে, ওই কার্গোটির রঙ পরিবর্তন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় কার্গোটি যে রঙ ছিল অভিযানের সময়কার কার্গোর রঙয়ের অনেক পরিবর্তন। ভালো করে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট হয় যে, কার্গোটির গায়ের রঙ সম্প্রতি লাগানো।’

 

আমিরুল হক বলেন, ‘এরপরই টহল টিম ১৪ জন স্টাফসহ কার্গোটি আটক করে। কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে না পারলেও জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে এটিই সেই ঘাতক কার্গো। এরপরই আটক ১৪ জনসহ কার্গোটি আমরা মুন্সিগঞ্জ নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

 

এর আগে, রোববার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টা ৫৬ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে সাবিত আল হাসান নামে লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে মুন্সিগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনালের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট এলাকায় একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি নদীতে তলিয়ে যায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

 

এদিকে, লঞ্চডুবির ঘটনায় ৩৪ যাত্রীকে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় মামলাটি করেন বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপপরিচালক (নৌ নিট্রা) বাবু লাল বৈদ্য।

 

মামলায় হত্যার উদ্দেশে বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী জাহাজ চালিয়ে লঞ্চটি ডুবিয়ে ৩৪ জনের প্রাণহানি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে মামলায় আসামি হিসেবে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি।

 

যাযাদি/এসআই