১২ ও ১৩ এপ্রিল নিয়ে কী ভাবছে সরকার

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০২১, ১৯:৩৫

যাযাদি ডেস্ক

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার, যা শেষ হচ্ছে ১১ এপ্রিল। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে নতুন করে দেওয়া হচ্ছে সাত দিনের কঠোর লকডাউন। মাঝখানে বাকি থাকে দুদিন, অর্থাৎ ১২ ও ১৩ এপ্রিল।

 

এ দুদিন কেমন হবে, তা জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ১৪ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে, যেটি হচ্ছে ‘কমপ্লিট’ লকডাউন। তবে ১২ ও ১৩ এপ্রিলের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

 

তিনি বলেন, যেহেতু আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, তাই যে অবস্থা এখন চলছে, এর চাইতে বেশি ওপেন করা মনে হয় এখন সঙ্গত হবে না। এ দুদিনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, সে বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। সিদ্ধান্ত আসতে কালকের দিন পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

 

দুদিন আন্তঃজেলা বাস চলাচলের বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্তঃজেলা বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়ার কোনো চিন্তাভাবনা সম্ভবত নেই।

 

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জীবন বাঁচাতে আমাদেরকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সেতুমন্ত্রীও বলেছেন যে, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়তো আমাদের শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তাই মানুষের কাছে মেসেজ, সতর্ক থাকতে হবে, বাইরে আসা যাবে না। এটি অত্যন্ত কঠিন একটি লকডাউন।

 

 

লকডাউনে মানতে হবে যা যা

 

আগামী ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউনে থাকবে বিভিন্ন নির্দেশনা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতদিন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসা যাবে না, এমন নির্দেশনা থাকবে। এছাড়া অফিস-আদালত, যানবাহন চলাচল, দোকানপাট ও শপিংমলও বন্ধ থাকবে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

 

মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

 

লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সরকারের তরফ থেকে তাদেরকে দেওয়া হবে কঠোর নির্দেশনা। নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন তারা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকবে চেকপোস্ট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। 

 

৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ

 

সংক্রমণ বাড়ার কারণে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার ফলে কর্মহীন মানুষকে মানবিক সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ৫৭২ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এ আর্থিক সহায়তা পাবে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০০ পরিবার।

 

৬৪ জেলার দায়িত্বে ৬৪ সচিব

 

করোনাসংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম সুসমন্বয়ের জন্য ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের দায়িত্ব দিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

 

অফিস আদেশে বলা হয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব/সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন।

 

বাড়তে পারে লকডাউনের সময়সীমা

 

সাত দিনের লকডাউনে করোনার সংক্রমণের চিত্রে তেমন পরিবর্তন না ঘটলে লকডাউনের সময়সীমা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সময় বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে ২০ তারিখে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 

১৪ দিনের কঠোর লকডাউন চায় কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি

 

সংক্রমণ প্রতিরোধে সাত দিন নয়, ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন চায় কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত একমাস ধরে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি এ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ থেকে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে তবুও বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না, যে কারণে করোনা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বেড়েছে এই সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণে আরও দুই সপ্তাহের লকডাউন করা যেতে পারে। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের এলাকা ও উচ্চ সংক্রমণ এলাকাগুলোয় দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন দেওয়া যেতে পারে। সংক্রমণ বিবেচনা করে আবার বিধিনিষেধ দেওয়া যেতে পারে।

 

যাযাদি/এসআই