মানুষ পুড়িয়ে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৯ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৪১
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। এটা ভুল। অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির দরকার হয়। জনগণের পাশে থাকতে হয়। জনগণের কল্যাণ করতে হয়। জনগণের অকল্যাণ করে, পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না।’
আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত করতে হবে। যেখানে গণকবর আছে সেগুলিকে সংরক্ষিত করতে হবে। স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা জায়গা দিয়েছি, সেখানে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করে দিচ্ছি। সেখানে একটা জায়গা থাকবে বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য, একটা মিউজিয়াম হবে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে পারবে, স্মৃতিচারণ করতে পারবে। সেই ধরনের ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘অগ্নিসন্ত্রাস বা জ্বালাও পোড়াও মানুষের জীবনটাকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না একটা মানুষ কিভাবে জীবন্ত মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মারে। সেটা দেখেছিলাম একাত্তর সালে। পকিস্তানী হানাদারবাহিনীরা যা করতো, বস্তিতে আগুন দিতো, মানুষ বেড়িয়ে আসলে সাঙ্গে সঙ্গে গুলি করে মেরে ফেলে দিতো। আর এরপরে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ২০১৩-১৪ সালে, আবার এই এখন ইদানিং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। কিভাবে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে পোড়াতে পারে? এটাই দুঃখজনক। এদের চেতনা হোক সেটাই আমি চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। তার প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। কারণ নানা ধারণের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র চলে। এগুলোর উত্তরণ ঘটিয়ে আমরা এ পর্যন্ত আগাতে পেরেছি। অন্তত এটুকু বলতে পারি। ১৫ বছরে বাংলাদেশ পরিবর্তন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ পরিবর্তন হয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আর এই ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়নটা শুধু মাত্র শহর ভিত্তিক না, তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত।’
আর্থ-সামাজিক উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নতির ধারা অব্যহত রেখেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের প্রতিটি ছেলেমেয়ে যাতে উন্নত জীবন পায়, সে লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তবে সবসময় মাথায় রাখতে হবে, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা একটি বিজয়ী জাতি। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে যেতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
এর আগে সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধানের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দুজনই শিখা অনির্বাণ চত্বরে রাখা পরিদর্শন বইয়ে সই করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১-এর ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা সম্মিলিতভাবে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। দিনটি প্রতি বছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
যাযাদি/ এসএম