সড়কে নিয়ম ভাঙার মহোৎসব, দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তি
প্রকাশ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৭

রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল। পাড়ার অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক-সব স্থানেই এসব রিকশার দাপট দেখা যাচ্ছে। এর রিকশা মানে না কোনো নিয়মনীতি
প্রচলিত রিকশার চেয়ে দ্রুতগতিতে চলায় ব্যাটারিচালিত রিকশা এখন নগরবাসীর আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রেক ততটা শক্তিশালী না হওয়া ও চালকদের অনেকেই অনভিজ্ঞ হওয়ায় বেড়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। এর যানজটের প্রধান কারণ এসব রিকসা।
৯ সেপ্টেম্বর দুপুর দুইটা। তেজগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে পুরো এলাকায় তীব্র যানজট। প্রচণ্ড গরমে চরম ভোগান্তি পড়েন সাধারণ মানুষ।
একই অবস্থা রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ইউলুপ এলাকায় তীব্র যানজট। প্রায় ৪০ মিনিট স্থির দাঁড়িয়ে থাকার পর গাড়ি চলা শুরু হলো। দুই মিনিট গাড়ি চলার পরে ফাঁকা রাস্তা। মানে সেখানে কোনো যানজট নয়, পাবলিক বাস সার্ভিসের সঙ্গে ব্যাটারিচলিত রিকশার মধ্যে বিবাদ লেগেছিল। মাঝ রাস্তা দিয়েই চলছে ব্যাটারিচলিত রিকশা! আবার পাবলিক বাসগুলোও যেখানে-সেখানে থামাচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের এসময় বিশেষ কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। বাইকার, রিকশাচালক যে যেভাবে পারছে সেভাবে যানজট সৃষ্টি করছে। কড়া হতে পারছেন না সড়কে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক সদস্যরা। তারা গল্প-আড্ডায় সময় পার করছেন।
রাজধানীর আসাদগেট, মহাখালী, শাহবাগ, গুলিস্তান, প্রগতি সরণিসহ অধিকাংশ এলাকায় দিনে কিংবা রাতে সড়কের চিত্র এমন। কোথাও একবার যানজট লেগে গেলে তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কমছে না।
প্রগতি সরণির নতুনবাজার থেকে কুড়িল বিশ্বরোড যেতেই প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা পার হয়ে যায়। অথচ এটি সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ। রাত ১১টার পরও এ সড়কে যানজট লেগেই থাকে। এ অবস্থায় ঢাকার সড়কে চলাচলকারীদের রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে।
নিয়ম ভাঙার মহোৎসব
ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, প্রতিদিন যারা সড়ক ব্যবহার করছেন তারাই নিয়ম ভঙ্গ করছেন। এক শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত আমাদের উদ্দেশ্যে বুলিং করছে। যত্রতত্র পার্কিং, সড়কের পাশে হকার, উল্টোপথে গাড়ি চালানো ও সিগন্যাল অমান্য করে আগে যেতে চাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে নিয়ম ভঙ্গ করছেন মানুষ।
শিক্ষার্থীরা যে ছয়দিন সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছিল তখন ভয়ে কেউ নিয়ম ভাঙতো না। সেই ভয়টা কেন যেন মানুষের মনে কাজ করছে না! এজন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কে যানজট লেগে থাকছে।
সড়কের মাঝে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, হর্ন দিলেও সরে না
আলতাফ হোসেন নামে এক প্রাইভেটকারচালক জানান, প্রায় এক মাস ধরে ঢাকা শহরে গাড়ি চালিয়ে কোনো শান্তি পাচ্ছি না। সব রাস্তায় দেদারছে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা মাঝ দিয়ে চলাচল করছে। হর্ন দিলেও সরে না। এতে গাড়ির চাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অটোরিকশা চালকরা যে যেভাবে পারছে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। যাত্রী নিয়ে উল্টো পথে চলাচলে অন্য গাড়িগুলো স্বাভাবিকভাবে যেতে পারছে না। এতে একবার যানজটের সৃষ্টি হলে সেটি দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত থাকছে।
যাযাদি/ এস