সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
সহযোগিদের বিশেষ প্রতিবেদন

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী

যাযাদি ডেস্ক
  ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০
আপডেট  : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী
ফাইল ছবি

সমকাল

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী

1

বিশেষ প্রতিনিধি

ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মতভেদ। অন্তর্বর্তী সরকার ও অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব দলটিকে জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী করে নির্বাচনে দেখতে চায় না। বিএনপি আগের মতোই সিদ্ধান্তের ভার জনগণের বললেও আওয়ামী লীগের অবস্থানে এসেছে নাটকীয় বদল। ক্ষমতাচ্যুত দলটি ১৪ বছরের বক্তব্য পাল্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছে। অন্তর্বর্তী সরকার, ছাত্র নেতৃত্ব ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতি কঠোর মনোভাব দেখালেও বিএনপির প্রতি নমনীয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপিকে দমনে কথা বললেও এখন একসঙ্গে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইচ্ছার জানান দিচ্ছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা এবং ছাত্রদের দল গঠন নিয়ে কথা বলার পর আওয়ামী লীগও সেটাতে তাল দিচ্ছে। বিএনপির মতো করে বলছে, জনগণের নির্বাচিত সংসদ প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে। এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেই দিয়েছেন, বিএনপির ‘কথার টোন’ আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সমকালকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা কারও কারও মধ্যে দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের একটি সফট ভার্সনকে ভোটের মাঠে আনার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। এর পরিণতি ভালো হবে না।’

এ ভাষ্যকে নাকচ করে গতকাল শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপিকে আওয়ামী শিবিরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। উনাদের কথাবার্তায় মনে হয়, বিএনপি যেন আওয়ামী লীগের দোসর। উদ্দেশ্যটা কী? বিএনপির গায়ে আওয়ামী লীগের সিল মারতে চান। আমাদের তাড়াতে চান, এই কথা কখনও চিন্তা করবেন না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ভারতের দোসর আওয়ামী লীগ; তাদের দিকে যারা বিএনপিকে ঠেলে দিতে চায়, তারা চেহারা আয়নায় দেখুন।’

ছাত্র নেতৃত্বের বিশ্লেষণ, আওয়ামী লীগ ভোটের মাঠে না থাকলে নির্বাচন হবে ‘বিএনপি বনাম বাকিরা’। এতে সুবিধা হবে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক দল ও জোটের। এবার ক্ষমতায় না এলেও অন্তত প্রধান বিরোধী দলে থাকবে। বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক সরকারের পাঁচ বছরের বেশি জনসমর্থন ধরে রাখার নজির নেই। তাই পরেরবার সুযোগ তৈরি হবে ছাত্র নেতৃত্বের। আওয়ামী লীগ থাকলে রাজনীতি আবার দ্বিদলীয় বৃত্তে ঢুকে যাবে। তৃতীয় শক্তির বিকাশের পথ রুদ্ধ হবে।

জামায়াতের একাধিক নেতারও একই মূল্যায়ন। তাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ মনে করে ছাত্র এবং জামায়াতের কারণেই তাদের পতন হয়েছে। তাই বিএনপির প্রতি নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে। জামায়াতের এক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সমকালকে বলেন, অন্যদের সঙ্গে বিএনপির নির্বাচনী প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হওয়ায় আওয়ামী লীগ সুযোগ নিতে চাইছে। বিএনপির নেতারা এখন জামায়াত ও ছাত্রদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আওয়ামী লীগও একই সুরে কথা বলে আসলে বন্ধুত্ব পাতাতে চাইছে। এ সমীকরণ জানানোর পর জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সমকালকে বলেন, অভ্যুত্থানে অবদান রাখা কোনো দল বা জনগণ এগুলো মানবে না।

লুকিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বক্তব্য এবং তাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি তাদের কাছে তুলনামূলক নিরাপদ। বিএনপি ক্ষমতায় ফিরলে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে কিছুটা হলেও স্থান পাবে। তাই সরকার, ছাত্র নেতৃত্ব ও জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া বিএনপির অবস্থানকে আগ বাড়িয়ে সমর্থন দিচ্ছে। তবে নাম প্রকাশ করে সমকালকে কেউ বক্তব্য দেননি।

ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্পর্কে ‘কুকথা’ বললেও সম্প্রতি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ তাঁর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধারে’ বিএনপি এবং তারেক রহমানে সঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথা জানান।

সহানুভূতি পাওয়া এবং অভ্যুত্থানের শক্তিকে ভাগ করতেই আওয়ামী লীগের কৌশল বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, এতে কাজ হবে না। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সমকালকে বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সবচেয়ে বড় শিকার বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতির প্রশ্নই আসে না। বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কাউকে নিষিদ্ধের পক্ষে নয়। বিএনপি মনে করে, আওয়ামী লীগের কী হবে, তা জনগণই ঠিক করবে।

তবে গতকাল চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘যারা বাংলাদেশপন্থি তাদের মধ্যে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশবিরোধী, আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে না।’

তিনি আওয়ামী লীগকে ভারতপন্থি আখ্যা দিয়ে আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বিশেষে যত রাজনৈতিক দল, ছাত্র ‎সংগঠন আছে, শ্রমিক, নারী, আলেম-ওলামা আছেন; যারা বাংলাদেশপন্থি ‎সবাই বাংলাদেশে থাকবেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তারা ইতিবাচক প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন।

শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের আকস্মিক পতন ঘটানো অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ খ্যাতি পাওয়া মাহফুজ আলম বলেন, ‘সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে খুনিদের বিচার, গুম-খুন, ধর্ষণের বিচার করা, সংস্কার করা এবং অবশ্যই বাংলাদেশপন্থি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া, যা গত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি।’

শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করে নির্বাচন দাবির এক দিনের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে ভোটের বাইরে রাখার ঘোষণা দিয়ে মাহফুজ আলমের বক্তব্য গুরুত্ব পাচ্ছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারবে না।

মোহাম্মদ আরাফাত নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শুক্রবার লেখেন, ‘আগামী নির্বাচন ইউনূসের অবৈধ সরকারের অধীনে হবে না। এই গণশত্রু সরকারকে বিদায় নিতে হবে। একটি নতুন (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের অধীনে হতে হবে পরবর্তী নির্বাচন। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল এবং ব্যক্তির জন্য যেন সমান সুযোগ থাকে, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে। জনগণের নির্বাচিত সংসদ প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। নির্বাচিত সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সরকার গঠন করবে, দ্বিতীয় বৃহত্তম দল সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসবে।’ এ লেখা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করায় দলীয় অবস্থান হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি নির্বাচনের চেয়ে সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছে। এ দলগুলো ভোটে আগে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার চায়। দ্রুত নির্বাচন চাওয়া বিএনপি চায় ন্যূনতম সংস্কার করে ভোট হোক। নির্বাচিত সংসদ সংবিধানসহ অন্যান্য সংস্কার করবে। মোহাম্মদ আরাফাতও একই দাবি জানিয়েছেন। এ বক্তব্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগও অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে বলে অভিমত অন্তর্বর্তী সরকার সূত্র এবং ছাত্র নেতৃত্বের।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন সমকালকে বলেন, বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হবে। মাহফুজ আলম সে কথাই বলেছেন। দলটির যারা ছাত্র-জনতাকে হত্যায় জড়িত তাদের রাজনীতি ও নির্বাচনের সুযোগ নেই। যদি কেউ সংসদে আওয়ামী লীগকে এনে একটি বহুদলীয় ব্যবস্থা দেখাতে চায়, তাহলে তাদের পরিণতি শেখ হাসিনার মতোই হবে। বিএনপি এক/এগারোর শিকার বলে তাদের এই ভূত তাড়া করে। বিএনপি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ছিল, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রয়েছে, ফ্যাসিবাদ নির্মূলে তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাহাত্তরের সংবিধান রেখে, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে তা হবে না।

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, সরকারকে সফল করতেই সমালোচনা করা হচ্ছে। এতে বিরক্ত হওয়ার কিছু নেই। সহ্য করতে হবে। সমালোচনা করলে পরবর্তীতে নেতাদের অপমান করা হয়। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা নানা ষড়যন্ত্র করছে ঐক্যে ফাটল ধরাতে।

তবে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে ছাত্র নেতৃত্বই নমনীয় বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি সুযোগ পায়, তাহলে কাউকে ছাড়বে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এজেন্ট কাজ করবে, ফান্ড দেবে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে কোনো ছাত্রকে শক্ত অবস্থানে দেখছি না। এ বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক আন্দোলন চালানোর দরকার ছিল। কিন্তু বুঝতে পারছি না তারা কেন সুবিধাবাদী অবস্থানে আছে।

গত শুক্রবার তিন উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার দুই বিশেষ সহকারী অভ্যুত্থানের ৪০ শহীদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ কথা জানিয়ে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গতকাল বলেন, তাদের ন্যায্য দাবিগুলো হলো বিচার, পুনর্বাসন এবং ফ্যাসিবাদ যাতে ফিরতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার। দাবি পূরণ না হওয়ার আগে তারা নির্বাচন হতে দেবেন না। এ সময় দাবি আদায়ে সচেষ্ট থাকার প্রতিশ্রুতি দেন উপদেষ্টারা।

কালবেলা

নানা ‘প্যাঁচে’ রাজনীতি!

ভিন্ন মত, বিভিন্ন সুর

শফিকুল ইসলাম

দিন যতই যাচ্ছে, রাজনীতির মাঠ ততই গরম হচ্ছে। মূলত ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরাজিত আওয়ামী লীগের বিচারসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবের কিছু মন্তব্য ঘিরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও কিন্তু চুপ নেই। তারাও বিএনপির বিভিন্ন বক্তব্য এবং দাবির বিষয়ে সমালোচনার সুরে কথা বলছেন। রাজনীতিবিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও সরকারের দায়িত্বশীলদের প্রতিদিনের নানা মন্তব্য নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—রাজনীতি কী তাহলে প্যাঁচের আবর্তে পড়েছে? তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনীতিতে যা কিছু হচ্ছে তার সবই সংশ্লিষ্টদের কৌশল। রাজনৈতিক দলগুলো এবং সরকারের এই টানাপোড়েনের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।

গত বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ থাকতে না পারলে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। বিএনপি মহাসচিবের ওই মন্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আসে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও বিএনপির বক্তব্যের সুরকে আওয়ামী লীগের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। গত শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিএনপির কথার টোন কিন্তু আওয়ামী লীগের টোনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এ নিয়ে রাজনীতিতে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেও দৃষ্টি আকর্ষণকারী মতবিরোধ চলছে। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবাইকে আবারও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় কেউ যদি বাধা দিতে চায়, তাদের পরিণতি হবে শেখ হাসিনার মতোই। তিনি বলেন, ৭২-এর সংবিধান দিয়ে এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র সম্ভব নয়। তাই গণপরিষদের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী সংবিধান প্রয়োজন।

এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে যে, রাজনীতিতে যেখানে ঐক্য থাকার কথা সেখানে কি ঐক্যে ফাটল দেখা দিয়েছে? কেননা, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে যেভাবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, সেটি কি তাহলে ফিকে হতে শুরু করেছে। রাজনীতিকদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ডে সেটিই ফুটে উঠছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে যে কোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রেখে সামনে এগোনোর কথা বলছেন তারা। অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা ও সমালোচনা থাকবে। তবে দেশ ও জাতীয় স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বিভিন্ন মহলের বক্তব্যে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডা দেখা গেলেও নাহিদ ইসলাম ও মির্জা আব্বাস দেশ গঠনে সংঘাত এড়িয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। নির্বাচন ঘিরে বিএনপি ও সরকারের এই টানাপোড়েনের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে নানা আলোচনা।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারকে স্বাগত জানানো হলেও গত বছরের ২৪ আগস্ট দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন প্রশ্নে ‘অতি দ্রুত’ সংলাপের দাবি জানান। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেই সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে সেই সংস্কার যাতে অনন্তকাল ধরে না হয়। এরপর জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস তার সরকারের যে কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, সেখানে নির্বাচন প্রশ্নে কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। সর্বশেষ প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন ইস্যুতে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতেও সন্তুষ্ট নয় বিএনপি। এমতাবস্থায় বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের পক্ষে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জোরালো হচ্ছে।

জানা গেছে, মূলত সাড়ে পাঁচ মাসেও সংস্কার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে—এ প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এমন অবস্থায় গত বুধবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ থাকতে না পারলে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে।’ তার ওই বক্তব্যকে উদ্দেশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বিএনপি এক-এগারো ও মাইনাস টু-এর আলোচনা শুরু করেছে, যা সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে।’ একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির অবস্থান দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে উসকে দিতে পারে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে বর্তমান সরকারকে ‘অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানান। নাহিদ ইসলাম মনে করেন, আওয়ামী লীগ নেতার এ ধরনের মন্তব্য বিএনপির বক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং বিভ্রান্তি তৈরি করছে।

গত শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এক-এগারোর ভয়াবহতা বিএনপির মতো আর কেউ ভোগ করেনি। তিনি আওয়ামী লীগকে ‘ভারতের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বিএনপিকে এভাবে আক্রমণ না করতে সতর্ক করেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার যদি নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে সমালোচনা করা যাবে না কেন? এক-এগারোর পুনরাবৃত্তির ভয় দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা উচিত নয়।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানান, নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সরকারের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সমঝোতার প্রয়োজন। বিএনপি কেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, তা স্পষ্ট করা উচিত। অন্যদিকে মির্জা ফখরুল বলেছেন, সরকার নিরপেক্ষ থাকলে তারা নির্বাচন পরিচালনা পর্যন্ত থাকতে পারবে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে বাংলাদেশের নতুন ভোটারদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কি ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে। যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না—আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।

বিশ্লেষকের মত: চলমান পরিস্থিতিতে দেশের রাজনীতি কি তাহলে প্যাঁচের আবর্তে পড়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ গতকাল কালবেলাকে বলেন, এখনই সেটি মনে হচ্ছে না। কারণ মাঠে-ময়দানে সেরকম কিছু দেখি না। রাজনীতিবিদরা নানা কারণে বিভিন্ন রকমের কথা বার্তা বলেন। সেটা অনেক সময় বাস্তবে রূপ নেয় না। এটি কেবলই তাদের যার যার নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করার একটি ব্যাপার। তিনি বলেন, ‘সরকার নিরপেক্ষ না থাকলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্ন বা দাবি উঠতে পারে’ বিএনপি মহাসচিবের এমন প্রশ্ন প্রসঙ্গে ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ওই বাক্যে কিন্তু মির্জা ফখরুল বলেননি যে, সরকার নিরপেক্ষ না। তিনি বলেছেন ‘নিরপেক্ষ না থাকলে।’ কাজেই এটা নিয়ে হাইপ তোলা আমি মনে করি, দেশের রাজনীতির জন্য খুবই বিপজ্জনক। দেশের অনেক সমস্যা জটিল হয় শুধু প্রচারের কারণে। সুতরাং যারা দেশ সম্পর্কে চিন্তা ও দেশের মঙ্গল কামনা করেন, তারা চেষ্টা করবে বিরোধটা যাতে সংঘাতে রূপ না নেয়। রাজনীতিতে বিরোধ থাকবেই। এটা দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়।

তবে বিএনপি যা বলছে, সেটি ঘুরিয়ে বলা যে, সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষ থাকে। বিএনপির দাবিকে আওয়ামী লীগের মতোই মনে করে সরকারের পক্ষে যা বলা হচ্ছে, সে প্রসঙ্গে বরেণ্য এই বিশ্লেষক বলেন, নাহিদরা তো একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। স্বাভাবিক কারণেই তারা নিজেদের বিএনপির চেয়ে আলাদা ভাববে। তারা নানা ভাবে দেখানোর চেষ্টা করবে। আজকের দিনে কেউ আওয়ামীমনা হয়ে গেছে; এটা দেখাতে পারলে তার রাজনীতি যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে এ ব্যাপারে সবাই এমনভাবে কথাবার্তা বলবেন বা বলা উচিত যে, তিনি বা তারা আওয়ামীমনা হয়ে গেছেন।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি

নেতৃত্বে আসছেন কারা

তরুণদের দলের গঠনতন্ত্র তৈরিসহ প্রস্তুতি চলছে

শরিফুল ইসলাম সীমান্ত

পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী তরুণদের রাজনৈতিক দল আসবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। সময় আছে মাত্র তিন সপ্তাহ। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা। দলীয় গঠনতন্ত্রে কী থাকবে, কারা আসবেন নেতৃত্বে- এ নিয়ে চলছে জোর প্রস্তুতি। বেড়েছে মাঠের তৎপরতা।

জাতীয় নাগরিক কমিটি সূত্রে জানা যায়, দল ঘোষণার একদম শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত করা হবে গঠনতন্ত্র। দলের শীর্ষ নেতৃত্বে কে বা কারা থাকবেন সেটিও চূড়ান্ত হবে শেষ পর্যায়ে। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের শর্টলিস্টে রয়েছেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের ১১ পরিচিত মুখ।

সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক দফা ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’ বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে তারুণ্যনির্ভর রাজনৈতিক দল গঠনে কাজ করছেন অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা। ফেব্রুয়ারির ১০ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে যে কোনো দিন ঘোষণা করা হবে নতুন এই দলটির নাম এবং আহ্বায়ক কমিটি। কমিটির শর্টলিস্টে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা তিন ছাত্র উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। আরও রয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্যসচিব আরিফ সোহেল ও মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।

জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা তিন ছাত্র উপদেষ্টাকে নিয়ে। তাঁদের নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দল ঘোষণার আগ পর্যন্ত তাঁদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলবে। দল এবং অন্তর্বর্তী সরকার উভয় পক্ষের সুবিধা বিবেচনা করে যে কোনো একজন কিংবা দুজন সরকার থেকে পদত্যাগ করে রাজনৈতিক দলে এসে যোগ দেবেন। প্ল্যাটফরম দুটির নেতারা জানান, দলে যোগদান এবং নেতৃত্ব গ্রহণের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নাম। তবে শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তার নিশ্চয়তা না থাকায় কেউ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। রাজনৈতিক দলের নাম কী হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, বিভিন্ন পর্যায় থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক নামের প্রস্তাবনা এসেছে। নামগুলো থেকে এরই মধ্যে কিছু নাম শর্টলিস্টে তোলা হয়েছে। আত্মপ্রকাশের দিন চূড়ান্ত নামটি ঘোষণা করা হবে।

গঠনতন্ত্রের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এবং সহ-মুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তৃণমূল থেকেও যোগ্যতার বলে একজন ব্যক্তি যাতে শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসতে পারেন, এমন একটি সাংগঠনিক কাঠামো নির্মাণ করতে চাই আমরা। দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিতে জোর দেওয়া হবে। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের দিনগুলোর মতোই দেশের মানুষ যেন নতুন দলের গঠনতন্ত্রকেও নিজেদের বলে গ্রহণ ও ধারণ করতে পারে- এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। নতুন দিনের বাংলাদেশ নির্মাণের মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা রাখার মতো গঠনতন্ত্র আমরা দেশের রাজনীতিপ্রেমী মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজের সামনে তুলে ধরতে চাই।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে