আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫০

যাযাদি ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিল তাহে রূপ-রস-সূধা-গন্ধ সুনির্মল’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নারী কবিতার এই পঙক্তিগুলোর মর্মার্থ মননে গেঁথে নিতে পারলে এ বিশ্ব নারীদের জন্য হয়ে ওঠবে আরও নিরাপদ। নারীর অধিকার আদায়ের জন্য করতে হবে না যুদ্ধ। নারীকে থাকতে হবে না অবহেলিত এক প্রাণ হয়ে। 

তবুও নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের প্রতি ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে বিশ্বে প্রতি বছর ৮ মার্চ ঘটা করে পালিত হয় নারী দিবস।

এবছর ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হবে দিবসটি। ঢাকা মেইলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের সব নারীদের জন্য নির্মল ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

ইতিহাস বলে, নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের পথ ধরেই আসে বিশ্ব নারী দিবস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন।

 ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।
 
১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন।

সিদ্ধান্ত হয়- ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালন শুরু করে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুই বছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেই দিন জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে নারীর অর্জনকে মর্যাদা দেওয়ার দিন। এদিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে স্বরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ পরিক্রমা নির্ধারণ করে, যাতে আগামী দিনগুলো নারীর জন্য আরও গৌরবময় হয়ে ওঠে

যাযাদি/ এসএম