ভর্তি সৈনিকদের জন্য কিছু কথা

প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:০৪

বিথী হোসাইন

মাধ্যমিকের সোপান পেরিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। শিক্ষার্থীদের মুক্তমনা চিন্তা ভাবনার উন্মেষ ঘটিয়ে আত্মপ্রত্যয়ী করে গড়ে তোলে, এছাড়া শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষনায় সমৃদ্ধ করে বিশ্বের দ্বার প্রান্তে তুলে ধরে নতুন পরিচয়। জাতীয় কবি কাজী নজরুলের উপলব্ধিতে " বিদ্যাপীঠ এমন একটি জায়গা যেখানে সবাইকে সাম্য, মৈত্রী  ও মুক্ত বুদ্ধির চর্চা করানো হয়। যে জাতির যত বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয় বিরাজমান সে জাতি ততো ঊর্ধ্বে "। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধ শিক্ষা জীবনের অন্যতম অধ্যায়।এই সময়ে দরকার যথাযথ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা। তাই আসন্ন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি উপলক্ষ্যে কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করছি।

অধ্যবসায়ঃ
একটি আসনের বিপরীতে শত শত শিক্ষার্থী থাকে তাই নিজেকে পুরোপুরি ভাবে মনোযোগী হতে হবে। অন্তরে লালনকৃত স্বপ্নের দ্বার প্রান্তে পৌছানোর জন্য থাকতে হবে অবিচল আস্থা " আমাকে একটি আসন পেতেই হবে"। স্টিভ জবসের মতে, " নিজের চিন্তাকে সরল করার জন্য পরিষ্কার ভাবে চিন্তা করতে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, কারণ পরিষ্কার ভাবে চিন্তা করতে পারাটাই সবচেয়ে বড় কথা"।

সময়ের অপচয় না করাঃ
জীবনকে সময়ের ছকে আবদ্ধ করা যায় না। আর চাইলেও অতীত সময় গুলো ফেরানো যাবে না। তাই ভর্তি যুদ্ধে জয়ী হতে হলে সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।এছাড়া আড্ডা ও খোশগল্পে যেন সময় নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।কার্ল স্যান্ডবুর্গের মতে,"সময় আপনার জীবনের সর্বাধিক মূল্যবান মুদ্রা। এই মুদ্রাটি কিভাবে ব্যয় হবে তা আপনি এবং আপনি একাই নির্ধারণ করবেন। আপনি যাতে অন্য লোকদের এটি ব্যয় করতে না দেন সেদিকে খেয়াল রাখুন"।


প্রতিদিন রুটিন মাফিক পড়াশোনা করাঃ
প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় টিকে থাকতে হলে যেমন কৌশলী হতে হবে তেমনি প্রতিদিন রুটিন মাফিক পড়াশোনা করতে হবে।
       গন্তব্যহীন  পথিক ভবঘুরে
       যাকে বলে বাউন্ডুলে;
       স্বপ্ন বিহীন প্রচেষ্টা অর্থহীন,
       সাফল্য নাহি মিলে।


সোশাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দুরে রাখাঃ
জ্ঞান-বিজ্ঞানের জয় ধ্বনিতে সোশাল মিডিয়া অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন গেম, ফেইসবুক, টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। জনশুমারি ও গৃহ গণনা-২০২২ তথ্য মতে, " আঠারো বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে ৭২.৩১% জনসংখ্যার নিজ ব্যবহারের মোবাইল ফোন রয়েছে। বর্তমানে সময়ের অপচয়ের অন্যতম মাধ্যম সোশাল মিডিয়া। যতটা সম্ভব সোশাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দুরে রাখতে হবে এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে।

গুছিয়ে পড়াশোনা করাঃ
ভর্তি যুদ্ধে সময়ের তুলনায় সিলেবাসের পরিধি তুলনামূলক ভাবে বড়। সুতারং স্বল্প সময়ে কীভাবে  সব বিষয়ে দক্ষ হওয়া যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। বেশি গুরুত্বপূর্ণ টপিক গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে। সেই সাথে সংক্ষিপ্ত সময়ে গুছিয়ে পড়াশোনার জন্য কৌশলী হতে হবে।


শারিরীক ও মানসিক দিক থেকে আত্নপ্রত্যয়ী হতে হবেঃ
স্বপ্ন যাত্রার অন্যতম সোপান ভর্তি পরীক্ষা। এই সময়ে স্বাস্থ্যের প্রতি যেমন যত্নশীল হতে হবে তেমনি মানসিক ভাবেও নিজেকে শক্ত রাখতে হবে। অনেকেই বেশি পড়াশোনা করেও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে ফলে পরীক্ষায় গুছিয়ে উপস্থাপন করতে পারে না। নিজেকে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে হলে দৃঢ় মানসিকতা রাখতে হবে।


ভর্তি সংক্রান্ত দিক নির্দেশনার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবেঃ
ভর্তি  পরিক্ষা সংক্রান্ত দিক নির্দেশনার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সামান্য একটা ভুলের জন্য অনেকের পছন্দের ক্যাম্পাস, পছন্দের সাবজেক্ট হাতছাড়া হয়ে যায়। পরীক্ষার সময়সূচি, যাতায়াত, আবাসন ইত্যাদি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা। এছাড়াও দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিক্ষার তারিখ পরিবর্তন বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে হবে।

শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

যাযাদি/ এস