প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘দ্য গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’ অভিযান সম্পন্ন শাকিলের

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২৩, ১০:১৪

যাযাদি ডেস্ক

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নেপালের দ্য গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল অভিযান সম্পন্ন করলেন বাংলাদেশের শাকিল। গত ৯ জুলাই কাঞ্চনজঙ্ঘা উত্তর বেসক্যাম্পে (প্যাঙপেমা, ৫,১৪২ মি.) শেষ হয়েছে এই অভিযান।

জুলাইয়ের ৯ তারিখ ভোর সাড়ে চারটায় লোনাক থেকে রওনা হয়ে সকাল ৭.৫০ মিনিটে কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্পে পৌঁছায় শাকিল।

২০২২ সালের পহেলা আগস্ট শুরু হওয়া এই অভিযানে শাকিলকে হাঁটতে হয়েছে ৯৬ দিনেরও বেশি। শুরুর জায়গায় যাওয়া আসা মিলে মোট ১০৯ দিনের অভিযান।

হিমালয় পর্বতের পশ্চিমে নেপাল-তিব্বতের হিলশা এলাকার সীমান্ত গেইট থেকে শুরু করে পূর্ব নেপালের কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত ১ হাজার ৭ শত কিলোমিটার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। মূলত দীর্ঘ এই পথকেই ‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’ বলা হয়ে থাকে।

নেপালের সব থেকে রিমোট, সীমাবদ্ধ, দুর্গম ও বিপদজনক এই দীর্ঘ উচ্চ হিমালয়ের পথ পাড়ি দিতে অতিক্রম করতে হয়েছে ২৯টি কঠিন পর্বতের পাস। যার মধ্যে ১৪টি পাঁচ হাজার মিটারের অধিক উচ্চতার দুর্গম ও বিপদজনক কঠিন পাস। এই ট্রেইলে পাড়ি দিতে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পথ হারিয়েছেন অসংখ্যবার, অনাহারে দিন-রাত কাটাতে হয়েছে, কখনো কখনো পাথুরে পথ নামতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিপদের সম্মুখীনও হতে হয়েছে, পাহাড় ধ্বসের মতো মৃত্যুকুপ থেকে ফিরে আসতে হয়েছে, বরফ ফাটল ও হিমালয়ের বিপদজনক গ্লেসিয়ার পাড়ি দিতে হয়েছে, অসংখ্য বরফগলা খরগ্রোতা ঠান্ডা পানির নদীতে নেমে পাড় হতে হয়েছে, অর্থের অভাবে স্থানীয় মানুষদের কাছে হাত পাততে হয়েছে, তবুও হাল ছাড়েননি শাকিল। স্বপ্ন ভঙের ভয়ে ভেঙে পড়েনি। স্বপ্ন জয়ের পথে ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সেখান থেকে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

এই অভিযানে হিমালয় পর্বতের কোল ঘেঁষে কতশত গ্রাম, নদী, জঙ্গল, পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অসংখ্য রোমাঞ্চকর বৈচিত্র্যময় সুন্দর ও ভয়ানক অভিজ্ঞতাও পেতে হয়েছে শাকিলের। হিলশা থেকে শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত হিমালয়ের দুর্গম ও বিপদজনক ১৭০০ কিলোমিটারের অধিক পথ পাড়ি দিয়ে শাকিল এখন কাঠমান্ডুতে অবস্থান করছে।

অত্যন্ত বিপদসঙ্কুল এবং কষ্টসাধ্য পর্বতাভিযান এই ‘গ্রেট হিমালয়া ট্রেইল’। যা সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত পঞ্চাশ জনেরও কম পর্বতারোহী এই অভিযান পুরোটা সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। আর এই অভিযান সফল ভাবে শেষ করে হিমালয়ের ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের নাম লিখিয়ে তুলে ধরেছেন লাল-সবুজের গর্বের পতাকা।

যাযাদি/ এসএম