বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সংকটে দেশ

প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৫, ১৬:৫৮ | আপডেট: ২০ জুন ২০২৫, ১৯:০৬

যাযাদি ডেস্ক
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে প্রাণের ভয়ে নিজ দেশ রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা। যে সংখ্যা এখন ১২ লাখের বেশি। মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েও বেকায়দায় পড়েছে বাংলাদেশ। গত প্রায় আট বছরেও একজন রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণ নিয়েও সংকট বাড়ছে। এরই মধ্যে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে দিন দিনই অপরাধমূলক তৎপরতা বাড়ছে। যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর চেয়ে ভালো বিকল্প আর হতে পারে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এমন বাস্তবতায় আমাদের সামনে এসেছে বিশ্ব শরণার্থী দিবস। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর উদ্যোগে ২০০১ সাল থেকে ২০ জুন বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শরণার্থীদের সঙ্গে সংহতি’, অর্থাৎ শুধু কথায় নয়, বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলছে, ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২২ দশমিক ১ মিলিয়ন, যা রেকর্ড পরিমাণ। এর মধ্যে ৪২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষ আন্তর্জাতিক শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃত, বাকিরা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত ও আশ্রয়প্রার্থী। সুদান, মিয়ানমার, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলের সংকট পরিস্থিতি এ সংখ্যা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে, রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দ্রুতই এই সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়নঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।