মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন : আ.লীগ-বিএনপি'র একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে

এইচএম মোকাদ্দেস, সিরাজগঞ্জ
  ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:০১
আপডেট  : ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:০৪

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি ডিসেম্বরে। নির্বাচন উপলক্ষে পৌর এলাকায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রার্থীরা মাঠে-ময়দানে ও পাড়া-মহলাসহ বিভিন্ন দোকানপাট, মার্কেটে সাধারণ মানুষদের সাথে আগাম দেখা করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়, উঠান বৈঠক ও কর্মী সমাবেশসহ নিজের ছবি সম্মিলিত লিফলেট নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সমর্থন আদায়ে দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্র“তি। আর ভোটাররা বলছে, পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই তারা এবার বেছে নেবেন।

সবচেয়ে বেশি দৌড় ঝাপ চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে। পৌরসভায় মেয়র পদে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন পেতে বিএনপির প্রার্থীরাও বসে নেই। বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে দোয়া প্রার্থনা করছে। ক্ষমতাসীন প্রার্থীরা বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে লবিংয়ের পাশাপাশি এলাকায় ওয়ার্ড ভিত্তিক চালাচ্ছে গণসংযোগ। সেই সাথে বসে নেই বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলরাও। বিগত বছরের অর্জনের ফিরিস্তি তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে সমর্থন চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। প্রার্থীদের প্রতিযোগিতা চলায় নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে নেতাকর্মীদের মধ্যে তত উৎসাহ বাড়ছে।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভাকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি নানন্দিক পৌরসভা গড়ে তুলতে মনোনয়ন প্রত্যাশী মেয়র প্রার্থীরা মাঠে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রতিশ্র“তি দিয়ে যাচ্ছেন পৌরবাসীদের। প্রতিশ্র“তিতে রয়েছে পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত, পরিচ্ছন্ন, জবাবদিহিমুলক পৌরসভা গড়ে তুলতে। সকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে পৃথক পৃথকভাবে গণসংযোগ ও মতবিনিময়ের মধ্যদিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীরা। সিরাজগঞ্জ পৌরসভা ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা।

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৬ হাজার ৯২৯ জন ও মহিলা ভোটার রয়েছে ৫৮ হাজার ৭০৮ জন। এই পৌরসভায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মেয়র প্রার্থী রয়েছেন ৭ জন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাড. কে.এম হোসেন আলী হাসান, সহ-সভাপতি ও বর্তমান মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী ইসাহাক আলী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ তালুকদার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র ও জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমেদ, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক দানি মোল্লা। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ৫ জন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুর কায়েম সবুজ, রাশিদুল হাসান রঞ্জন, মুন্সি জাহিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান ও জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু নামও শোনা যাচ্ছে। অন্য দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণাসহ কোন গণসংযোগ দেখা যায়নি। তবে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আলহাজ্ব এ্যাড. কে.এম হোসেন আলী হাসান বলেন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার আমি নিজেই একজন মেয়র প্রার্থী। তারপারও কেন্দ্রীয়ভাবে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তাকে জয়ী করার জন্যই আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, কেন্দ্র থেকে পৌরসভা নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে দলের অনেকেই মনোনয়নের আশায় মাঠে সরব হয়েছেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্যই কাজ করবে নেতাকর্মীরা। দলের বাহিরে কেউ না। সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, এই পৌরসভায় বিএনপির সমর্থক বেশী রয়েছে, দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার জন্য বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। আশা করি দল মনোনয়ন দিলে আমি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হবো ইনশাআল্লাহ।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, জেলায় ৭টি পৌরসভার মধ্যে শাহজাদপুর পৌরসভা বাদে বাকি ৬টি পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বর্তমান মেয়রদের মেয়াদের পাঁচ বছর শেষ হতে যাওয়ায় এসব পৌরসভায় ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে ভোটের কথা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে