​আব্দুল কাদের মির্জার হুঁশিয়ারি

‘ভোটে অনিয়ম হলে প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসারকে ঠ্যাং ভেঙে রূপালী চত্বরে লটকানো হবে’

প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:২৫ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১৯:৩৫

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী

 

 

নিজ দলের নেতা, নির্বাচনব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিয়ে একের পর এক তির্যক বক্তব্য দিয়ে দেশব্যাপী আলোচিত, সমালোচিত নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা এবার প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের লাঠিপেটা করে বেঁধে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার সকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে এক পথসভায় তিনি আগামী শনিবার অনুষ্ঠিতব্য বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়ম এবং গোলযোগের আশঙ্কা প্রকাশ করে এ মন্তব্য করেন।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা বলেন- ‘যারা প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্বে আছেন- এখানে নির্বাচনী দায়িত্বে আছেন নির্বাচন অফিসার; যদি কোনো কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি হয়, কোনো অনিয়ম যদি ভোটে হয়, কোনো রক্ত যদি এখানে ঝরে, কারো কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে- কারো থেকে সুবিধা নিয়ে যদি জালভোট হয়- যদি কোনো অনিয়ম করেন কোম্পানীগঞ্জের মাটি থেকে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না স্পষ্ট বলে দিচ্ছি। ঠ্যাংগের নিচেদি ভাঙিচুরি লটকাই থুমু এই রূপালী চত্বরে (পায়ের নিচে দিয়ে ভেঙে রূপালী চত্বরে ঝুলিয়ে রাখব)। ভোট নিয়ে কোনো ছিনিমিনি খেলবেন না বলে দিচ্ছি।’

 

প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের বেশির ভাগই বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক উল্লেখ করে তাদেরকে কার পরামর্শে দায়িত্ব দেওয়া হলো প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন- ‘প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার ম্যাক্সিমাম জামাত-বিএনপির। এদেরকে কেন দেওয়া হলো? কার পরামর্শে দিয়েছেন?। মাইজদী থেকে প্রেসক্রিপশন এনছেন? না ফেনী থেকে এনছেন। হুঁশিয়ার।’

 

পথসভায় ফরিদপুরের সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর সমালোচনা করে তিনি (নিক্সন চৌধুরী) গুন্ডাপান্ডা দিয়ে ভোট চুরি করে নির্বাচিত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন আব্দুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন- ‘নিক্সন চৌধুরী সাহেব। আপনি বলেছেন- চুনোপুঁটিদের কথা কে শোনে। শেখ হাসিনার কাছে যাওয়ার এদের কোনো সুযোগ নাই- কিছু বলারও সুযোগ নাই। তো নিক্সন চৌধুরী সাহেবরে জিগ্গাই (জিজ্ঞাসা করি) আপনার বয়স কত হ্যাঁ এমপি হইছেন যে! আঁর (আমার) রাজনীতির বয়স হবেনি আপনার বয়স। ঠিক আছে আমি চুনোপুঁটি-আমরা গ্রামে থাকি। ভাষা অসুন্দর হলেও ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম। আপনি ভালো মানুষটা আপনি আমাদের ত্যাগী নেতা জাফর উল্লা সাহেবের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র দাঁড়াই এমপি হইছেন (হয়েছেন) ভোট চুরি করি। দৈহিক শক্তি আছে, ওই আন্ডুগান্ডু এরা আছে এইজন্য আমনে ভোটে জিতছেন।’

 

দলের কয়েকজন এমপির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন- ‘রাতে কি করেন এমপি সাহেবেরা, মদ আর নারী নিয়ে থাকেন। স্যালুট মারে পুলিশ যাই সেখানে, হায়রে দেশ। এই মিয়ারা হেই মিয়ারা না।’

 

এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় জাসদ এবং বামপন্থিরা ডা. মিলনকে হত্যা করে আন্দোলন চাঙ্গা করেছে মন্তব্য করে বসুরহাটেও ভোট বানচালের জন্য এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন আব্দুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন- ‘ওই যে মিলন হত্যা হইছে (হয়েছে) এরশাদবিরোধী আন্দোলনে স্মরণ আছেনি? কারো কারো স্মরণ আছে, ছাত্র নেতা যারা তারা জানেন। মিলনরে কারা হত্যা করেছে? আসলে বামেরা এই হত্যা করেছে। কিয়েরলাই (কিজন্য) আন্দোলনটাকে চাঙ্গা করার জন্য। এখানে ভোটটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য- ভোট বানচাল করার জন্য এই ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারে। আপনারা সাবধান থাকবেন।’

 

যাযাদি/এস