​ সাংবাদিক নেতাদের ব্যাংক হিসাব কেন তলব, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:২২

যাযাদি ডেস্ক

 

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদকসহ ৪ সংগঠনের ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব কেন তলব করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

 

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক নেতাদের যে ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে, সেটি আপনাদের মতো আমিও পত্রিকার পাতায় দেখেছি।’

 

আমি খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কেন করা হলো, এটি আমার কাছে বড় প্রশ্ন।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাংবাদিক সংগঠনের সব প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে তলব দেওয়া হয়েছে। সরকার অবশ্যই যে কারো ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব তলব করতেই পারে। এমডিদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়, রাজনৈতিক নেতাদের তলব করা হয়, ব্যবসায়ীদেরও তলব করা হয়। কিন্তু কেন করা হলো, এটি আমার কাছে বড় প্রশ্ন।’

 

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এতে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। যেসব সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি এবং চিনি। তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কেও আমার জানা আছে। তাদের উদ্বেগের কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। যাদের ব্যাংক হিসাব চাওয়া হয়েছে, তারা হয়তো পরবর্তীতে বুঝতে পারবেন কেন তাদের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে।’

 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দেশের মানুষের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে। কেউ যদি ডিজিটাল মাধ্যমে হয়রানি এবং অপদস্ত হয়ে থাকে তাহলে সে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে আইনি সহয়তা পাবে।’

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম উন্নয়নশীল বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অধিক স্বাধীন। দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রয়োজন রয়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে অনেকের না বলা কথা সাংবাদিকদের মাধ্যমে সামনে আসে। তবে অনেকেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে কারো কারো ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নষ্ট করেন।’

 

গণমাধ্যমের শৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমে যে ধরনের বিশৃঙ্খলাগুলো ছিল আপনাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে, শৃঙ্খলা আনার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রাইভেট টিভি চ্যানেলগুলোকে প্রতি মাসে ক্যাবল অপারেটরদের কাছে ধর্না দিতে হতো, তাদের টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল ঠিক রাখার জন্য। ক্যাবল অপারেটরদের টাকা দিলে সিরিয়াল উপরের দিকে থাকতো। টাকা না দিলে ভারতীয় চ্যানেলের পরে সিরিয়াল চলে যেত ৫০ এর উপরে। এই বিশৃঙ্খলা প্রায় বিশ বছর ছিল। আমাকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পরে আপনাদের সহযোগিতায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে এখন আর ক্যাবল অপারেটরদের কাছে ধর্না দিতে হয় না।’

 

তিনি বলেন, ‘১ অক্টোবর থেকে বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন যেন বাংলাদেশে সম্প্রচার করতে না পারে সেজন্য দেশের প্রচলিত আইন, সেটি কার্যকর করতে যাচ্ছি। দেশে অনেকগুলো আইপিটিভি কাজ করছে। খুব সহসাই আইপিটিভি রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করব। গত দুই বছরে ৪০০ পত্রিকার একটি সংখ্যাও ডিএফপিতে জমা দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে ১২০টি পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করা হয়েছে। এই পত্রিকাগুলো বের হয় না কিন্তু বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করে। বিজ্ঞাপন পেলে সেদিন ছাপায়। এতে করে যে পত্রিকাগুলো সত্যিকার অর্থে প্রকাশিত হয়, তারা বিজ্ঞাপন বঞ্চিত হয়। বিজ্ঞাপন বঞ্চিত হওয়ার কারণে সেসব পত্রিকার সাংবাদিকরা বেতন পান না। সাংবাদিক নেতাদের সহায়তায় এসব বিশৃঙ্খলা বন্ধের চেষ্টা করছি।’

 

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে বার্ষিক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

 

 

যাযাদি/এসআই