বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

​ চৌমুহনীতে হামলার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত চাই: বুলু

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৪০

নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনীতে হিন্দুদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু। এ ঘটনায় তিনি বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করে ফুটেজ দেখে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

আজ শনিবার বিকালে গণমাধ্যমের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ দাবি করেন।

সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, প্রশাসনের উচিত, সেখানখার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের কথা ফুটেজ দেখে দোষীদের খোজে বের করা। এ ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও করছি। বিএনপি একটি অসম্প্রদায়িক দল। আমরা সব সময় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। এই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সৃষ্টি করেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। চৌমুহনীতে মারা যাওয়া দুইজনের জন্য গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মূল্যবোধ হচ্ছে ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী কিন্তু সকল ধর্মের মানুষ তাদের স্ব স্ব ধর্ম পালন করতে পারবে। সকল ধর্মের মানুষের অধিকার রক্ষা করা। ‘৯১ সালে আমরা যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসি তখন আমি নোয়াখালীতে সংসদ সদস্য ছিলাম। সেই সময় ভারতে বাবরী মসজিদ ভাঙার পর নোয়াখালীর বেগম গঞ্জের ২৬টি ইউনিয়নে গান্ধী ও রাম ঠাকুর আশ্রমসহ হিন্দুদের সকল মন্দির আমরা পাহারা দিয়েছি। বিডিআর, পুলিশসহ আমাদের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত হিন্দু পরিবারের পাশে দাড়িয়েছে। সবাইকে আশ্বস্ত করেছি, বেগমগঞ্জে কিছু হবে না।

তিনি বলেন, আমরা সেদিন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলাম। সেই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা ৭০‘ এর এমএনএ ও সংসদ সদস্য নূরুল হক। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে প্রধান অতিথি ছিলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ এম এ হানিফ। এছাড়াও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নান্টু সাহাসহ বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাসদ, বাসদ ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দসহ সেদিন সব পক্ষের প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ২০ হাজার মানুষ সেদিন রেলওয়ে ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। সেদিন কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, শুক্রবার বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে। কার উস্কানিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা খোজে বের করতে হবে। আমি সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ইসকনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। পুরহিতের সঙ্গে কথা বলেছি। বিএনপি নেতারাও ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখতে পেলাম বিএনপি, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে। আটক হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ছেড়ে দিতে হবে।

বরকত উল্লাহ বুলু আরও বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রদায়িক সম্প্রতির জেলা হিসেবে নোয়াখালীর একটি ঐতিহ্য আছে। বৃটিশ আমল থেকে এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। আমি এই এলাকার চারবার সংসদ সদস্য ছিলাম, মন্ত্রী ছিলাম। এবারও আমি ষষ্ঠীর দিন সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের পূজামন্ডপ পরিদর্শন করে এসেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখান থেকে এসে আমি টাঙ্গাইলে কুমুদিনীতে গিয়েছি। এরপর কেরানীগঞ্জেও গিয়েছি। ঢাকেশ্বরী ও বনানী পূজামন্ডপও পরিদর্শন করেছি। বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরাও হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এই উৎসবে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে