শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে : ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ২১:১৭

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের কর্তৃক মানুষ হত্যা, খুন, জখমসহ রক্তাক্ত সহিংসতার কারণে দেশে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে গত রাতে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানা গেটে পাঁচবিবি পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনকে আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল-এর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ কর্তৃক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগে শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের এবং ফেনীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক কাজে ফেনী সফররত মহিলা দল কেন্দ্রীয় সভাপতি বেগম আফরোজা আব্বাসসহ তার সফরসঙ্গীদেরকে পুলিশ ফেনীর কোনো হোটেলে থাকতে না দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের কর্তৃক মানুষ হত্যা, খুন, জখমসহ রক্তাক্ত সহিংসতা ইত্যাদি কারণে দেশে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশব্যাপী এক ভয়াবহ দুঃশাসন কায়েম করার কারণেই জনপদের পর জনপদ রক্তাক্ত হচ্ছে। বিরোধী দল দমনের জন্যই সরকার এক মরণখেলায় অবতীর্ণ হয়েছে। সেই রক্তাক্ত খেলার অংশ হিসেবেই জয়পুরহাটে ছাত্রদল নেতা ফারুক হোসেনকে হত্যা করেছে যুবলীগের সন্ত্রাসীরা।

ফখরুল বলেন, দেশে ধারাবাহিকভাবে এ ধরণের হত্যার ঘটনা ঘটলেও সরকারি আনুকুল্যে দলীয় সন্ত্রাসীরা রেহাই পেয়ে যায় বলেই আরো অতি উৎসাহে শহর থেকে গ্রামে মানুষের রক্তে হাত রঞ্জিত করছে দুস্কৃতিকারীরা। পুলিশ ফারুক হোসেনকে কৌশলে থানায় ডেকে এনে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার সুযোগ করে দেয়। জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ছাত্রদল নেতা ফারুক হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আমি ফারুক হোসেনের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

অপর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিএনপি’র একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার থাকেন। সেজন্যই সরকার তাকে টার্গেট করে ছাত্রলীগ নেতাকে দিয়ে শাহবাগ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। অথচ বর্তমানে বিদেশে একটি হাসপাতালে মূমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ন্যায়সঙ্গত সমালোচনা করার জন্যই তাকে হয়রানি করতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকার আসলে কর্তৃত্ববাদী শাসন চিরস্থায়ী করার জন্যই বিভিন্ন কালাকানুন প্রনয়ণ করে এসেছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তার মধ্যে অন্যতম। এখন এই কালাকানুনে বিএনপি নেতাদেরকে জড়িয়ে দেশে একটি নির্বাক পরিস্থিতি সৃষ্টির আয়োজন চলছে। চারিদিকে এখন বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকারের পতনের ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে বলেই সরকার দ্বিকবিদিক জ্ঞানশুন্য হয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নানান কায়দায় জুলুম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সেটিরই বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, আমি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল-এর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।

অপর এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত পরশু ফেনীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক কাজে ফেনী সফররত মহিলা দল কেন্দ্রীয় সভাপতি বেগম আফরোজা আব্বাসসহ তার সফরসঙ্গীদেরকে পুলিশ ফেনীর কোনো হোটেলে থাকতে না দেয়ার ঘটনা প্রমাণ করে সরকারের পায়ের নিচের শেষ মাটিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই। মানুষের নাগরিক অধিকার এখন ধুলোয় মিশে গেছে। বিএনপি নেতা-নেত্রীদেরকে রাতযাপনের অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটি সরকারের গণবিরোধী চন্ডনীতিরই বহিঃপ্রকাশ। আমি ফেনী পুলিশের এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তীব্র ধিক্কার ও নিন্দা জানান।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে