শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিতে আন্দোলনের চেয়ে জোরালো নির্বাচনী প্রস্তুতি

হাসান মোল্লা
  ০৯ মে ২০২২, ০০:০০
আপডেট  : ০৯ মে ২০২২, ০৯:০২

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচনে যেতে চায় দলটি। অথচ এই দাবি আদায়ে কার্যকরী আন্দোলনের কোনো প্রস্তুতি না থাকলেও নির্বাচনী প্রস্তুতি থেমে নেই দলটিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পরেই কঠোর আন্দোলনে নামার পূর্ব ঘোষণা থাকলেও তা বাস্তবায়নে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বিএনপিতে। এছাড়া সুরাহা হয়নি শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় সরকার ইসু্যরও। সঙ্গত কারণে সুসংগঠিত হয়ে পরিকল্পিত আন্দোলনে কবে নাগাদ বিএনপি নামতে পারবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আন্দোলনের কার্যক্রমে অগ্রগতি না থাকলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি থেমে নেই দলটির। এরইমধ্যে ঈদকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনের প্রাথমিক কাজগুলো সেরে নিচ্ছেন। গত দুই বছরে বৈশ্বিক মহামারির কারণে বাড়ি যাওয়া সম্ভব না হলেও এবারের ঈদে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ঈদ করেছেন। এই সুযোগে নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজনীতিবিদরাও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলন ও সংবর্ধনার আয়োজন করেন। ঈদুল ফিতরের পর বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন ঈদ পুনর্মিলন, ধর্মীয় ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে। তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মানুষকে নানা ধরনের প্রতিশ্রম্নতিও দিচ্ছেন। একইসঙ্গে সরকার বিরোধী আগামী আন্দোলনে দলের নেতাকর্মী ও জনগণকে সম্পৃক্ত করার কাজও করছেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পর চার দিন কেটে গেলেও বিএনপির কেন্দ্রীয় বেশিরভাগ নেতা এখনো ঢাকা ফেরেননি। অনেকের পরিকল্পনা রয়েছে আরও ১ সপ্তাহ থেকে ১০ দিন নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করার। নির্বাচনী এলাকায় ঈদকে কেন্দ্র করে দীর্ঘমেয়াদে কর্মসূচি পালন করা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, বরিশাল-৫ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নেত্রকোনা-২ আসনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ারুল হক, নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও ইঞ্জিনিয়ার আমিরুল মোমিন (বাবলু), টাঙ্গাইল-২ আসনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাবো) আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, নেত্রকোনা-৩ আসনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও একাদশ নির্বাচনের প্রার্থী ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী, পটুয়াখালী-৪ আসনে এবিএম মোশাররফ হোসেন, জামালপুর-৩ আসনে দলের সহ জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে সাবেক মন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের সহধর্মিণী কামরুন্নাহার শিরিন ও বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, খুলনা-৩ আসনে খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী রাকিবুল ইসলাম বকুল, পটুয়াখালী-২ আসনে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, ঝিনাইদহ-৪ আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে ডক্টর ফেরদৌস আহমেদ চৌধুরী (লাকী), বাগেরহাট-৩ আসনে ডক্টর শেখ ফরিদুল ইসলামসহ আরও অনেক নেতা। সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা ছাড়া রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন আসনেও বিএনপির নেতারা গণসংযোগ চালিয়েছেন, ঈদের দিন ও তার পরদিন নির্যাতিত, গুম পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এর মধ্যে আছেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের নেতা আমান উলস্নাহ আমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবীন, সাইফুল আলম নীরব, এসএম জাহাঙ্গীর, মামুন হাসান, শেখ রবিউল আলম রবি, এসএ সিদ্দিক সাজু প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে