মানুষ এখন সত্য কথা লেখেও না, বলেও না : মির্জা ফখরুল 

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৩ | আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:৪১

যাযাদি ডেস্ক
ফাইল ছবি

আজকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশে ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মানুষ এখন সত্য কথা লেখেও না, বলেও না। যারা প্রতিবাদী তারাও আর সত্য কথা বলে না। তারা আওয়ামী লীগের অন্যায়ের প্রতিবাদও করে না। বর্তমানে দেশে এতগুলো টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা। কই তারা তো ভিন্নমতের খবর দেখাতে ও বলতে পারে না। 

রোববার দুপুরে এক সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা ভণ্ড ও প্রতারক। এভাবে চলতে থাকলে তা হবে জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। দলমত নির্বিশেষে সকলের একটা মত ছিল যে বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক। জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা হওয়ার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেরাই ১৯৭৫ সালে সেই পদ্ধতি নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ আওয়ামী লীগ সবসময় সামন্ততন্ত্রে থাকতে চায়। তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না। সেজন্যই ওই সময় তিরিশ হাজার তরুণ যুবককে হত্যা করেছে। কারণ তারা সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়েছিল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ভয় পেলে চলবে না। আবারো আমাদেরকে জেগে উঠে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। যাতে আমরা জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি। তা না হলে আওয়ামী লীগ নির্বাচন নিয়ে আবারো পুরনো ফাঁদ পেতেছে। তারা দেখাচ্ছে যে সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে। আসলে এগুলো হচ্ছে তাদের শয়তানি। তারা দেশের মানুষকে বোকা ভাবছে। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের ফাঁদে পা দেবে না।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানলে সারাদেশে মানুষ যে যেখানে আছেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। এবার তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো একতরফা নির্বাচন করতে পারবে না। দেশের মানুষ কঠোরভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। সুতরাং আমাদেরকে হামলা-মামলা দিয়ে লাভ নেই। আমরা এই সরকারের পতন ছাড়া ফিরবো না।

আবদুস সালাম বলেন, আমাদের আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে আওয়ামী লীগ সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু তাদের যে রক্ষা হবে না। ইতোমধ্যেই দেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে গেছে।

সভাপতির বক্তব্যে জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে পিষ্ট করে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। তবে দেশের মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। ইনশাআল্লাহ, সম্মিলিতভাবে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত করেই আমরা ঘরে ফিরবো।

জাগপার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাত হোসেনের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএম শাওন সাদেকী, জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দিনাজপুর জেলার সভাপতি রকিব চৌধুরী মুন্না, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি আসম মিসবাহ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা: আওলাদ হোসেন শিল্পী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ হুমায়ূন রশিদসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা।

যাযাদি/ এস