তিন আ'লীগ নেতা ক্ষমা পেলেও পদ ফিরে পাবেন না

প্রকাশ | ৩১ মে ২০২৩, ০৯:৩১

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর দুই আওয়ামী লীগ ও এক কৃষক লীগ নেতাকে ক্ষমা প্রদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। 

মঙ্গলবার (৩০ মে) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত ক্ষমাপ্রাপ্তদের নামে ইস্যুকৃত পৃথক তিন পত্রের মাধ্যমে ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ক্ষমাপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি মো.আবুল কালাম আজাদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম ও ফরিদপুর জেলা কৃষক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. লিটন মৃধা। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় অব্যাহতিপ্রাপ্ত ওই তিন নেতার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলেও তাদের পূর্বেকার স্ব স্ব দলীয় পদ ফিরিয়ে দেয়া হয়নি বলে মত প্রকাশ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল।

প্রসঙ্গত, চেয়ারম্যান পদে শেখর ইউপি নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ এবং বোয়ালমারী পৌরসভার মেয়র পদে ফরিদপুর জেলা কৃষক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. লিটন মৃধা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। আর উপজেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম ময়না ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত পত্রে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিযোগে ইতোপূর্বে ওই তিন নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আনীত সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করায় এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কোন কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

 ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিিিটর সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠছনের গঠনতন্ত্রের ১৭(৬) এবং ৪৭(২) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রেরিত লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাদের ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

এ ব্যাপারে ক্ষমাপ্রাপ্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম বলেন, 'আমি দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। আমি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। পরে ভুল বুঝতে পেরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে  নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন করে নির্বাচনের আগে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। সে সময় উপজেলা আওয়ামীলীগ আমাকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছিলো। পরে কেন্দ্রের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে কেন্দ্র ক্ষমা প্রদর্শন করেছে।’

জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মীরদাহ পিকুল বলেন, 'দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ওই তিন নেতাকে সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্র থেকে আমাদের কিছু জানায়নি। তবে ওই তিন  নেতাকে সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন করলেও তাদের পূর্বেকার স্ব স্ব পদে বহাল করেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত পত্র অনুসারে তেমনটিই মনে হয়েছে।’

যাযাদি/ এস