ঝিনাইদহ থেকে খুলনা অভিমুখে বিএনপির রোডমার্চ

সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরবো না : মির্জা আব্বাস 

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২০ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২২

তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ থেকে বিএনপির খুলনা অভিমুখে রোডমার্চ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১.৫০ মিনিটে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের উদ্বোধনী সমাবেশ শেষে রোডমার্চ শুরু হয়। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে শুরু হওয়া রোডমার্চটি ঝিনাইদহ থেকে মাগুরা ও যশোর হয়ে খুলনা পৌছানোর কথা রয়েছে। ৯.৪০ মিনিটে বাসটার্মিনালে স্থাপিত মঞ্চে কোরআন তেলোয়াতের মধ্যে দিয়ে কর্মসূচীর সূচনা করা হয়। এরপর ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এমএ মজিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা। 

১১.২৯ মিনিটে বক্তব্য দিতে মঞ্চে আসেন রোড মার্চের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস।  মীর্জা আব্বাস বলেন, আমি আড়াই কিলোমিটার দুরে গাড়ি রেখে হেটে এসেছি। আমার মনে হচ্ছে ঝিনাইদহে আজ বিজয় উৎসব হচ্ছে। দেশের মানুষ আজ ক্ষুদ্ধ ও উদ্দেলিত। আমি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাথে কয়েকদিন আগে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তার সাখে প্রায় ৪০ বছর হলো রাজনীতি করি। ওনার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমি বলেছি, দেশবাসি আপনার জন্য দোয়া করছে, দেশবাসি আপনাকে ভুলবে না। দেশবাসি আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে পতন ঘটাবে। সরকারকে পতন না ঘটিয়ে রাজপথ ছাড়বো না। আজ দেশের অর্থনীতি খুবই খারাপ অবস্থা, রিজার্ভ নাই। ২০০৯ সালে দেশের  ঋণ খেলাপি ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা, আজ শত শত কোটি টাকা ঋণ খেলাপি। কারা এসব টাকা খেয়ে ফেললো। এই টাকা কোথায় গেল জনগণ জানতে চাই। সময় মত নাম প্রকাশ হয়ে যাবে। গলমাধ্যমে জানতে পারলাম, দেশের এক যুবরাজ এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা ধরা খেয়েছে। এসব টাকা কার জনগণ জানতে চাই। এসব টাকা জনগণের টাকা। আমরা এসব কথা বললে মামলা দেওয়া হয়, খুন ও গুম করা। এজন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। কোন রাজা-রানীর জন্য এ দেশ নয়। বাংলাদেশ হিরক রাজার দেশে পরিনত হয়েছে। হিরক রাজার মসনদ ভেঙ্গে ফেলার সময় এসেছে। আপনারা তৈরি হন। 

এর আগে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকতুল্লাহ বুলু বলেন,  আজকে আমরা এক দফা দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছি। সরকারের নির্দেশে ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করছে, খুন গুম করা হয়েছে কিন্তু রাজপথ ছাড়িনি। সরকার পতন ছাড়া আমরা রাজপথ ছাড়বো না। আওয়ামীলীগ কখনো মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে পারেনি। তারা লুটপাটের রাজনীতি করেছে। অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে এ সরকারের পতন হবে। তারেক রহমান ফিরে আসবেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই জালিম সরকারকে যতক্ষণ বিদায় না করতে পারবো ততক্ষন রাজপথ ছাড়বো না। ্আপনি আপনার লোকের নামে মামলা হলে জামিন দেন। অথচ বিএনপি নেত্রী সাবেক রাষ্ট্র প্রধানকে পাঁচটি বছর অমানবিকভাবে আটকিয়ে রেখেছেন। আপনি বলেছেন, আপনার ছেলের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করুক। ওই সম্পদ কি আপনার বাপের। ওই সম্পদ বাংলাদেশের মানুষের। এখনো সময় আছে পদত্যাগ করেন। আন্দোলন শেষে তারেক রহমান আসবেন এই দাওয়াত আপনাদের আগেই দিয়ে রাখলাম।
এসময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আজকের সমাবেশে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। আপনার সবাই এই অবৈধ সরকারের পতন চান। আমি দৃঢ় কন্ঠে বরতে চাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে। 

ঝিনাইদহ বাসটার্মিনালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহদী আহম্মেদ রুমী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদ (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড আসাদুজ্জামান ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আমিরুজ্জামন খান শিমুল, ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় বিএনপির সভাপতি তোজাম্মেল হকসহ শতাধীক কেন্দ্রীয় নেতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা। 

রোডমার্চের আয়োজক জেলার বিএনপির সভাপতি এ্যাড এমএ মজিদ বলেন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসুচি হিসেবে এই রোডমার্চের আয়োজন করা হচ্ছে।  রোডমার্চের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন ঘটানো হবে বলেও যোগ করেন।       

যাযাদি/এস