সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের বাড়ির ফটকের সামনে বাঁশের বেড়া ঝুলছে সাইবোর্ড
প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৮ | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৩

প্রায় দশ বছর আগে জমি বিক্রির টাকা না পেয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির প্রধান ফটকের সামনে বাঁশের বেড়া নির্মান এবং সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন জমি বিক্রেতারা। জাহাঙ্গীর আলমের ওই বাড়িটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নগরীর ছয়দানা এলাকায়।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়ের জাহাঙ্গীর আলম, তার মা সাবেক মেয়র জায়েদা খাতুনসহ পরিবার সদস্যদের নিয়ে এক সময় বাসন সড়ক এলাকার লেহাজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেখানে ভাড়া থেকে ছয়দানা এলাকায় জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মান করেন। বাড়ির সামনে তিনটি দোকান ঘর জমির মালিক বিক্রি করতে না চাইলে তিনি কিছুটা বেকায়দায় পড়ে যান। পরে জাহাঙ্গীর আলমের মামা ও স্থানীয়দের মাধ্যেমে আলোচনা করে জমির মালিক সাইফুল ইসলাম ও তার স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সোয়া ১ শতাংশ জমি ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন। প্রায় দশ বছর হয়ে গেলেও তিনি সেই জমির টাকা পাননি।
শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িটি বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। মূল গেইটটি লাগানো। সামনে কয়েকটি সিমেন্টের খুটি দিয়ে বাঁশ দিয়ে এমন ভাবে বেড়া দেয়া হয়েছে ভেতরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামনে একটি একটি সাইনবোর্ড দেয়া। সেখানে লেখা আছে, ‘পেত্রিক সূত্রে এই জমির মালিক সাইফুল ইসলাম, মাসুদা বেগম, মাসুদ মন্ডল, মামুন মন্ডল, কামরুন নাহার ও সামসুন নাহার। এছাড়া সেখানে জমির মৌজা ও পরিমানও লেখা আছে।’ সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় মানুষ কৌতুল নিয়ে ওই সাইনবোর্ডটি দেখছেন এবং পড়ছেন।
এলাকাবাসী জানায়, বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুড়ে যায় বাড়ির সব আসবাবপত্র। এরপর থেকে জাহাঙ্গীরও ওই বাড়িতে যাননি। এই সুযোগে জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনে ফাঁকা থাকা জমিতে জমির মালিক সাইফুল ইসলাম বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। সেখানে নিজের এবং ভাতিজা এবং স্বজনদের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড সাটিয়ে দিয়েছেন। সাইনবোর্ডে নিজের নাম্বারও লিখে দিয়েছেন।
জানতে চাইলে জমির মালিক দাবিদার সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওইস্থানে মার্কেট নির্মান করে একটিতে নিজে দোকান করতাম এবং অন্য দুইটি দোকান ভাড়া দিয়েছিলাম। ২০১৫ সালে জাহাঙ্গীর আলম পিছনের জমি কিনলেও আমার জমি ছাড়া পিছনে যেতে পারছিলেন না। জাহাঙ্গীরের মামা ও স্থানীয়দের চাপাচাপিতে ৩০ লাখ টাকা মূল্যে ওই জমি বিক্রি করতে রাজি হই। পরে ৫ লাখ টাকা বায়না দিয়ে তিনি বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আর কোনো টাকা দেননি তিনি। তার মায়ের কাছে বেশ কয়েকবার গিয়েছি তারপরও তিনি টাকা দেননি। দেশের এখন আইনের শ্বাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেজন্য আমি জমি দখল কের সেখানে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। তার লোকজন দিয়ে দুই বার বেড়া ফেলে দিয়েছে। এবার ভালো করে দিয়েছি পাশে সিসি ক্যামেরাও লাগিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমাকে বর্তমান বাজার মূল্যে টাকা দিলে এবং এতোদিন দোকান থেকে আমি যে ভাড়া পেতাম সেই টাকা দিলে এখনও আমি তাকে জমি দিতে রাজি আছি।
এব্যাপারে কথা বলতে জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনের এবং হুয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মো. রাশেদ বলেন, এব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি, কেউ সহযোগিতাও চায়নি।
যাযাদি/ এস