যারা ভোটাধিকার হরণে সহযোগিতা করেছে, তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনতে হবে: জয়নুল আবদীন ফারুক

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ১৭:০৬

যাযাদি ডেস্ক
'তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন’ আয়োজিত সমাবেশ

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক বলেছেন, শুধুমাত্র সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করলেই হবে না, যারা ভোটাধিকার হরণে সহযোগিতা করেছে, তাদের সবাইকেই আইনের আওতায় আনতে হবে।

আজ সোমবার (২৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন’ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশটির মূল দাবি ছিল— ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জড়িত কর্মকর্তাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্বে না রাখা।

জয়নুল ফারুক বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র ধ্বংসে ভূমিকা রেখেছে, যারা ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তারা কেউ যেন আইনের বাইরে না থাকে। দেশের জনগণ ভোট দিতে পারেনি, এটা কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান একদিনে হয়নি। বিগত ১৬ বছর বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলের নেতাকর্মীরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে, গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, বাড়ি ছাড়া হয়েছে। তারপরেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশে ১৬ বছর আন্দোলনের সেই সমর্থনে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লব। সেই বিপ্লবের কারণে ছাত্র-জনতাকে ধন্যবাদ অবশ্যই জানাবো।’

দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে জয়নুল বলেন, ‘সারা বছর যারা আমার সঙ্গে রাজপথে হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন- শুধু আন্দোলন করে খবরদারি করলে চলবে না, চাঁদাবাজি করলে চলবে না, মানুষের জমি দখল করলে চলবে না।’

তিনি বলেন, ‘যদি সরকার গঠন করি, আমি রক্ত দিয়েছি, পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেছি, তাই বলে হাসিনার মতো, হাসিনার আওয়ামী লীগের মতো ব্যবহার করব- এটা যদি কেউ করে, তা কখনো হতে দেওয়া যাবে না, হতে পারবে না।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে বেছে নিতে দিন কারা সরকার গঠন করবে, কারা নিরপেক্ষভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করবে- সেই সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর ছেড়ে দিন। জোর করে কেউ আর ক্ষমতা দখল করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। অতীতে হাসিনা কাজ করতে দেয়নি, তার পরিণাম জেলখানা, তার পরিণাম মামলা।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘আজ বাংলাদেশে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন সজ্জন ব্যক্তি। তার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে দেশে সেই দল সরকার গঠন করবে, যে দল শহীদদের আত্মত্যাগকে সফল করেছে। সেই সংগ্রামী দলগুলো নিয়ে আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মফিজুর রহমান লিটন। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য একেএম মোজাম্মেল হক, মৎস্যজীবী দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।