আমরা বন্দর লিজ দেব না: প্রিন্স

প্রকাশ | ২৮ জুন ২০২৫, ১৯:৫৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম বন্দরে রোডমার্চের সমাপনীর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স: ছবি যায়যায়দিন

চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা ও করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে পাঁচ আগস্টের পর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বামজোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। 
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, এক সেকেন্ড দেরি না করে ঘোষণা দেন যে আমরা বন্দর লিজ দেব না। আপনারা দেশবিরোধী, সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে পাঁচ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবসের পর আমরা আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।

শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে ঢাকা থেকে শুরু হওয়া দুইদিনের রোডমার্চের সমাপনীর সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 
চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি কোম্পানিকে যুক্ত করার পদক্ষেপ, রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোরের উদ্যোগ, স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রে’ জড়ানোর চেষ্টা বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের কথা বলার অধিকার, ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে স্বৈরাচার হটিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রামে জয়ী হলাম। 
আমরা শোষণমুক্তির কথা বললাম। আমরা আশা করেছিলাম, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের সেই দায়িত্ব পালন করবে। 
এত বড় হত্যাকাণ্ড, তার বিচারের কাজ দৃশ্যমান করবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে, নির্বাচনের জন্য যা যা সংস্কার করা দরকার, তা-ই করবে। আর গণতন্ত্রের পথে যাত্রার জন্য নির্বাচন দেবে।’

সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমরা ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করলাম, সরকার এখতিয়ার বর্হিভূতভাবে এমন কতগুলো কাজ শুরু করলেন, যা তাদের সংস্কারের আলোচনায় নেই। 
ওই যে বন্দর ভবন দেখা যায়, আপনারা চট্টগ্রামের মানুষ, বন্দর কি সংস্কারে ছিল? না, এটা তো ছিল না। তাহলে বন্দর লিজের কথা উঠল কেন? বন্দর কি লোকসানি প্রতিষ্ঠান? না, এটা তো লাভজনক প্রতিষ্ঠান।’

করিডোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার-রোহিঙ্গায় ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের জনগণ। তা রোহিঙ্গাদের নিয়ে যায় না কেন ? জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছিলেন- এখানে বহুপাক্ষিক সমাধান করতে হবে, উনারা করলেন না। 
বরং নতুন করে কি বললেন? রাখাইনকে না কি করিডোর দেবেন, চ্যানেল দেবেন। আমরা বলছি, সেখানে যুদ্ধ চলছে, সেখানে করিডোর দেওয়া মানে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলা। এটা আমরা হতে দেব না।’

চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা’র সভাপতিত্বে এবং বাসদের জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, 
বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও গণতান্ত্রিক বাম জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, 
ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।