শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক নির্দেশনায় পুঁজিবাজারে বড় উত্থান

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ এপ্রিল ২০২১, ১৮:০৪

করোনার সংক্রম রোধে লকডাউন ঘোষণার দিন রোববার (৪ এপ্রিল) এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন হয় পুঁজিবাজারে। পুঁজিবাজারে নিজস্ব বিনিয়োগের বিপরীতে মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও বৃদ্ধি সংক্রান্ত নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে সেই চিত্র পাল্টে গেছে।

রোববার (০৪এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি) এ মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর সোমবার উভয় বাজারে বড় উত্থান হয়েছে। এদিন ব্যাংক, বীমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় সব শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৮৮ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ২৫০ পয়েন্ট।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লকডাউনের ভয় ও আতঙ্কে যেখানে রোববার বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি হিড়িক ছিল। সোমবার ব্রোকারেজ হাউজগুলোয় বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি শূন্য ছিল। কিন্তু মার্চেন্ট ব্যাংক, এবং ব্রোকার হাউজগুলোর শেয়ার কেনার পাশাপাশি ফোর্সসেল কমে যাওয়ার ফলে পুঁজিবাজারে চিত্র পাল্টে যায়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও বাড়ানো ফলে ফোর্সসেল বন্ধ হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ক্যাপাসিটি বেড়েছে। তাতে পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছে।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভয় ছিল যে, লকডাউন হলে, পুঁজিবাজার বন্ধ হয়ে যাবে। সেই ভয় কেটেছে, পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেল প্রেসারও কমেছে। এসব কারণে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।

উল্লেখ্য, চলমান দরপতনে মার্জিন ঋণ নিয়ে লেনদেন করা বিনিয়োগকারীদের ফোর্সড সেল কমবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কারণ রোববার (৪ এপ্রিল) নতুন করে পুঁজিবাজারে নিজস্ব বিনিয়োগের বিপরীতে মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও বাড়িয়েছে কমিশন।

বিষয়টি বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ব্যক্তি বিনিয়োগের বিপরীতে মার্জিন ঋণ প্রদানের রেশিও এক অনুপাত শূন্য দশমিক ৫০ থেকে বাড়িয়ে এক অনুপাত শূন্য দশমিক ৮০ করা হবে। এ নির্দেশনা ডিএসইএক্স সূচক ৭ হাজার পর্যন্ত কার্যকর হবে। এর উপরে বা বেশি সূচকের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ রেশিও হবে এক অনুপাত শূন্য দশমিক ৫০। দরপতনের এই বাজারে কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের ফলে ফোর্সড সেল কমে যাবে।

বাজার চিত্র

সোমবার (৫ এপ্রিল) লকডাউনের কারণে দেশের পুঁজিবাজারে ২ ঘণ্টা লেনদেন হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। বহুজাতিক কোম্পানির পাশাপাশি ব্যাক-বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় মাত্র ১৫ মিনিটে সূচক বাড়ে ৬৪ পয়েন্ট। এরপর এই সূচক বৃদ্ধির ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে দিনের বাকি সময় লেনদেন হয়।

দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮৮ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস৩০-সূচক বেড়েছে ৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক বেড়েছে ১৬ পয়েন্ট। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১টির, কমেছে ১৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৬ টি কোম্পানির শেয়ারে দাম। এর আগের দিন (৪ এপ্রিল) সাড়ে ৪ ঘণ্টায় লেনদেন হয়েছিল ৫২১কোটি ১৭ লাখ টাকা।

সোমবার ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষে থাকা দশটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে-অ্যাপোলো ইস্পাত,কেয়া কসমেটিকস, এসিআই ফরমুলেশন,ভিএএমএলআরবিবি ফান্ড,সিএপিএমআইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড, আমান ফিড, হাওয়েলটেক্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, আইডিএলসি এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

দাম বাড়ার শীর্ষে যথারীতি রয়েছে বেক্সিমকো, রবি আজিয়াটা, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, এশিয়া ইন্সুরেন্স,ব্রিটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকো,স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স এবং প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে(সিএসই) সার্বিক সূচক আগের দিনের চেয়ে সোমবার (৫ এপ্রিল) ২৫০ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৯৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ২৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।

যাযাদি/এসআই

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে