ব্রোকারেজ হাউসে অব্যবহৃত জমা টাকায় মিলবে সুদ

প্রকাশ | ২২ জুন ২০২১, ১৯:০৯

যাযাদি ডেস্ক

এখন থেকে নিজের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স-বিও অ্যাকাউন্টে জমা থাকা নগদ টাকার ওপরে বছর শেষে সুদ পাবেন বিনিয়োগকারীরা।

 

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এমন পদক্ষেপ নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে গ্রাহকদের জমা দেওয়া অ্যববহৃত অর্থের বিপরীতে সুদ দিতে নির্দেশনা দিয়েছে।

 

সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসির দেওয়া এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, গত বছর পাস হওয়া সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুল ২০২০ এর নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

এর ফলে এখন যদি একজন বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউসে টাকা জমা রাখেন, কিন্তু সব টাকার শেয়ার না কিনে থাকেন এবং সেই টাকা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাউসের গ্রাহক সমন্বিত অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকলে তিনি সুদ পাবেন।

 

এত দিন বিনিয়োগকারীরা কোনো সুদ পেতেন না। তবে তাদের জমা দেওয়া অর্থের বিপরীতে ব্যাংক থেকে সুদ পেত হাউসগুলো।

 

নতুন নির্দেশনায় ব্রোকারেজ হাউস এখন সেই টাকার উপরে ব্যাংক থেকে যে সুদ পাবে, তা থেকে খরচ বাদ দিয়ে একটি অংশ বিনিয়োগকারীকে দিয়ে দেবে।

 

নিয়ম অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের জমা দেওয়া অর্থ থাকে কোনো ব্যাংকে ব্রোকারেজ হাউসের পক্ষ থেকে খোলা গ্রাহক সমন্বিত অ্যাকাউন্ট যা কাস্টমার কনসলিডেটেড অ্যাকাউন্টে (সিসিএ) নামে পরিচিত।

 

এই অর্থ গ্রাহকের শেয়ার কেনা ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই হাউসের।

 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউসের এই অ্যাকাউন্টে টাকার ঘাটতি থাকতে দেখা গেছে।

 

অনিয়মের মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা ব্যবহার করায় এ জন্য বেশ কিছু হাউসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে বিএসইসি।

 

কিছু হাউস সিসিএতে জমা থাকা বিনিয়োগকারীদের টাকা ভেঙে ব্যবহার করেছে। অর্থ লোপাটের ঘটনাও ঘটেছে।

 

এই টাকা বেআইনিভাবে ব্যবহার করতে গিয়ে হাউসগুলো বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

 

এমন প্রেক্ষাপটে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিনিয়োগকারীদের পড়ে থাকা টাকার সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি অব্যবহৃত টাকা থেকে সুদ প্রদানের ব্যবস্থা করতে বলেছে।

 

এতদিন বিনিয়োগকারীদের এই অর্থ থেকে সুদবাবদ মুনাফা পেত হাউসগুলো।

 

নতুন এই নির্দশনায় আরও বলা হয়েছে, যদি বিনিয়োগকারীদের মুনাফা নিয়ম অনুয়ায়ী বুঝিয়ে দেওয়ার পরও ব্রোকারেজ হাউসের টাকা থেকে গেলে তা স্টক এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে জমা দিতে হবে।

 

সিসিএ এর টাকা স্থায়ী আমানত-এফডিআরও করা যাবে না বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

 

কারা এই টাকা পাবেন?

 

যেসব বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্টে এক লাখ টাকা একমাসের জন্য থাকবে, তারা সুদ পাবেন।

 

অথবা সুদের পরিমাণ ন্যুন্যতম ৫০০ টাকা হলে তা বিনিয়োগকারীকে দিতে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

 

সুদ হিসাব হবে যেভাবে?

 

ব্রোকারেজ হাউস প্রথমে সিসিএতে জমা থাকা টাকা থেকে কত সুদ পাওয়া গেল সেটা হিসাব করবে। তারপর সেটা থেকে সব খরচ বিয়োগ করে প্রাপ্ত আয় বের করবে।

 

এরপর বিনিয়োগকারীকে কি হারে টাকা দেবে সেটা বের করতে হবে।

 

সেটা বের করতে প্রাপ্ত সুদ থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে পাওয়া আয়কে সিসিএতে থাকা দৈনিক গড় টাকা দিয়ে ভাগ করতে হবে ।

 

প্রাপ্ত ফলাফলকে ১০০ দিয়ে গুণ করে সুদের হার বের করতে হবে।

 

তারপর দেখতে হবে একাজন বিনিয়োগকারীর দিন শেষে অ্যাকাউন্টে কত টাকা ছিল।

 

এভাবে সারা বছরে গড়ে দৈনিক কত টাকা ছিল সেটা বের করে, সেটিকে সুদের হার দিয়ে গুণ করে সুদের টাকা দিতে হবে।

 

যাযাদি/এসআই