সাকিবের ক্রিকেটে ফিরে আসার পথগুলো কী?

প্রকাশ | ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১৭:১৮

যাযাদি ডেস্ক

 

সাকিব আল হাসান যে কোনো পর্যায়ের পেশাদার ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন এখন।

 

সাকিব আল হাসান যে কোনো পর্যায়ের পেশাদার ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন এখন।

 

২০১৯ সালের ২৯শে অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে।

 

যার মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। অর্থাৎ প্রথম বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নজরদারিতে ছিলেন সাকিব এবং সেই এক বছর পূর্ণ হয়েছে।

 

এখন সাকিব দলে সুযোগ পেলেই বাংলাদেশ বা যে কোনো পেশাদার লিগে ক্রিকেট খেলতে পারবেন।

 

সাকিবের ফিরে আসার পথ

 

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বাংলাদেশের নানা পর্যায়ের ক্রিকেট দল পরিচালনা করেছেন।

 

সাকিব আল হাসান নানা টেকনিকাল ও ক্রিকেটিয় সমস্যায় যাদের দ্বারস্থ হন তাদের একজন তিনি।

 

তিনি জানান, সাকিব যে মাপের প্লেয়ার তাতে করে সময় ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন তিনি।

 

সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপিতে একটি উঁচুমানের ট্রেনিংও সম্পন্ন করেন সাকিব আল হাসান।

 

এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্বকাপের আগেও সাকিব আল হাসান এমন একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যান। তখন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে খেলতেন সাকিব।

 

মি. ফাহিম মনে করছেন সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট দিয়েই ফিরবেন।

 

সাকিব আল হাসান ২০১৭ সাল থেকেই নানা সময়ে ছুটি চেয়ে আসছিলেন একটা। কিন্তু নানা গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের কারণে কাঙ্খিত ছুটি পাননি তিনি।

 

এই এক বছরের বিরতি সাকিবের জন্য শাপেবর হতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, নিষিদ্ধ হওয়াটা কখনোই কোনো ক্রিকেটারের কাছে সুখকর কোনো বিষয় নয়। কিন্তু সাকিব জানে যে পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিতে হয়।

 

এই একটা বছরে একটা বড় সময়ই সাকিব দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। এসময় কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন।

 

মি. ফাহিম বলেন, সাকিবের ক্যারিয়ার অনেক লম্বা। গত এক দশকে সাকিব বিশ্বজুড়ে ক্রিকেট খেলে বেড়িয়েছেন। তাই খুব একটা সমস্যা হবে না সাকিবের।

 

"ও খুব তাড়াতাড়ি ফিরতে পারবে। বিকেএসপির যে ট্রেনিংটা ছিল সেটা ছিল এক্সক্লুসিভ, হাই কোয়ালিটির।"

 

"এই ঘরোয়া ক্রিকেটে মাঠে নেমেই বুঝে যাবে যে ও কোন পর্যায়ে আছে," বলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

 

এই নিষেধাজ্ঞা থেকে শিক্ষণীয়

 

ঘটনার পরপরই আইসিসির দেয়া বিবৃতিতে সাকিব আল হাসান বলেন, "আমি খুব দুঃখিত, আমার নিষেধাজ্ঞার জন্য। আমি খেলাটি ভালোবাসি, তবে আমার বিরুদ্ধে আনা দায় আমি মেনে নিয়েছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইসিসির যে অবস্থান সেখানে আমি আমার দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে পারিনি।"

 

অ্যালেক্স মার্শাল, যিনি আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার, তিনি বলেন, "সাকিব অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার, সে অনেক প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন, এটা তার দায়িত্ব ছিল এই প্রস্তাবগুলো রিপোর্ট করা।"

 

আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার আশা ব্যক্ত করেন, সাকিব আর এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না এবং ভবিষ্যতে আইসিসির দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করবেন।

 

এই একটা বছর সাকিব আল হাসানের খেলাধুলার দিক থেকে খুব একটা ক্ষতি হয়নি, নিষেধাজ্ঞার পরপরই বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের সাথে দুটো সিরিজ খেলে বাংলাদেশ।

 

এরপর জিম্বাবুয়ের সাথে একটি সিরিজে সাকিব আল হাসান খেলতে পারেননি।

 

কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় ক্রিকেট খেলা মাঠে গড়ায়নি।

 

ফলে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা যতটা দীর্ঘ সময় মনে হওয়ার কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও সাকিবের জন্য। ঠিক ততটা হয়নি।

 

ক্রিকেটারদের যোগাযোগ এবং ক্রিকেটারদের মাঠের বাইরের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা কঠিন তবে এনিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন্সের প্রধান আকরাম খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ক্রিকেট বোর্ড বয়সভিত্তিক সময় থেকেই এই কাজ শুরু করে।

 

এখানে আসলে ক্রিকেটারদের অজানা কিছুই নেই বলেন মি. আকরাম খান।

 

সাকিব আল হাসানের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন এখানে অন্য ক্রিকেটারদের ওপর প্রভাব পড়বে না কারণ সবাই ধারাগুলো জানে।

 

তারপরও যদি কেউ এমন কাজ করে তাহলে সেটার দায় তার নিজের পুরোপুরি, বলেন আকরাম খান।

 

আকরাম খান বলেন, "আকসু কী, এটার কাজ কী, এটা কী উপায়ে কাজ পরিচালনা করে সেসব ব্যাপারে প্রতি বড় টুর্নামেন্টে তো বলা হয়ই। তার সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও ব্রিফ করা হয়ে থাকে যাতে এই ধরণের কোনো কাণ্ড ক্রিকেটাররা টের পেলে সেটা তৎক্ষণাৎ বোর্ডে জানায়।"