৩০ বছরের রেকর্ড স্পর্শ করলেন জহির

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১২:১২

যাযাদি ডেস্ক

দৌড় শেষ করার পর হাতের সাত আঙুল দেখিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিলেন, জাতীয় অ্যাথলেটিকসে তিনি টানা সাতবারের চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু যেটি তার নিজেরই জানা ছিল না, সেটি হচ্ছে অ্যাথলেটিকসে ৩০ বছরের এক রেকর্ড স্পর্শ করে ফেলেছেন তিনি। এই 'তিনি' হচ্ছেন জহির রায়হান।

 

গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় অ্যাথলেটিকসের ৪০০ মিটার স্প্রিন্ট পুরুষ বিভাগে ৪৭.২০ সেকেন্ড (হ্যান্ড টাইমিং) সময় নিয়ে সবার আগে দৌড় শেষ করেন নৌবাহিনীর এই অ্যাথলেট, যা ছিল তার টানা সপ্তম চ্যাম্পিয়নশিপ। হ্যান্ড টাইমিংয়ে নিজের ক্যারিয়ারসেরা স্কোর গড়ার পর জহির জানতেন না যে, তিনি আরেকটি কীর্তিও গড়েছেন। ১৯৯১ সালে কাস্টমসের মেহেদি হাসানের টাইমিংও ছিল একই। ৩০ বছরের রেকর্ড স্পর্শ করা জহির স্বপ্ন দেখছেন এশিয়ান গেমসে পদক জেতার, '৪০০ মিটারে এশিয়ান গেমস থেকে একটি পদক জিততে চাই। এজন্য আমাকে ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে দৌড় শেষ করতে হবে। বিদেশে গিয়ে উন্নত ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ পেলে এটা অবশ্যই সম্ভব। এজন্য আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বাংলাদেশে থেকে প্রশিক্ষণ নিলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব না।'

 

জহিরের রেকর্ড ছোঁয়ার দিনে মেয়েদের ৩ হাজার মিটার দৌড়ে ১৭ বছরের রেকর্ড ভেঙেছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর রিংকি বিশ্বাস। রেকর্ড গড়া রিংকি ১০ মিনিট ৪৩ দশমিক ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হয়েছেন। এই ইভেন্টে ২০০৩ সালে হালিমা খানম বিথি সময় নিয়েছিলেন ১১ মিনিট ৮ দশমিক ১৫ সেকেন্ড।

 

২০১৭ সালের জুলাইয়ে শুরু। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ২০ বছর বয়সী জহিরকে। গত পাঁচ বছরে টানা সাতবার জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা হয়েছেন তিনি। ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে বাংলাদেশের মধ্যে জহিরই সেরা। তার ধারেকাছেও কেউ নেই। সামনে বাংলাদেশ গেমসে আরও ভালো করার আশা তার। তবে নেপালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সাউথ এশিয়ান গেমসে এই ইভেন্টে খেলতে না পারার আক্ষেপ সারাজীবন মনে থাকবে বলে জানান জহির। অধিক উচ্চতার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে অসুস্থ হওয়ায় ওই ইভেন্টে অংশই নিতে পারেননি। তার পরও সামনে নিজেকে আরও ছাপিয়ে যাওয়ার আশা তার। দৌড়ে যেন ভালো করতে পারেন সেই জন্য বিখ্যাত একটি কোম্পানির নীল রঙের রানিং শুট বিদেশ থেকে সাত হাজার টাকা দিয়ে এনেছেন জহির। যাতে করে দৌড়াতে কমফোর্ট ফিল করেন।

 

সকালে হার্ডলসে ১৪.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেরা হওয়া তামান্নার এটি টানা চতুর্থ স্বর্ণ। মেয়েদের ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবিয়া আল সোহা প্রথম হয়েছেন। লং জাম্পে প্রত্যাশানুযায়ী প্রথম হয়েছেন নৌবাহিনীর মোহাম্মদ আল আমিন। তিনি ৭.০৪ মিটার উচ্চতায় লাফিয়েছেন। লং জাম্পে নারী বিভাগে স্বর্ণের হাসি হেসেছেন নৌবাহিনীর সনিয়া আক্তার।

 

বর্শা নিক্ষেপে নৌবাহিনীর মনিরুজ্জামান, হ্যামার থ্রোয়ে নৌবাহিনীর মাহফুজ হাসান, ১১০ মিটার হার্ডলসে (পুরুষ) সেনাবাহিনীর মির্জা হাসান স্বর্ণ জিতেছেন। দ্বিতীয় দিন শেষে ১২টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য এবং ৯টি ব্রোঞ্জসহ মোট ২৯টি পদক নিয়ে তালিকার শীর্ষে নৌবাহিনী। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জিতেছে ৯টি স্বর্ণ, ১৪টি রৌপ্য এবং ৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ২৯টি পদক। একটি স্বর্ণ ও একটি ব্রোঞ্জসহ মোট দুটি পদক নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি।

 

যাযাদি/এসএইচ