বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যারিবীয়দের বাংলাওয়াশ টাইগারদের

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:২৬
আপডেট  : ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ২১:১৫

সিরিজ তিন ম্যাচের। প্রথম দুই ম্যাচে আগে ব্যাট করে দেড়শ রানও তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সোমবার চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ম্যাচে পরে ব্যাট করেছে সফরকারী দল।

জয়ের জন্য লক্ষ্য ছিল ২৯৮—কিন্তু ‘শিক্ষানবিস’ ওয়ানডে দল গড়া ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং দেখে কখনো মনে হয়নি, লক্ষ্যটা নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা আছে! অন্তত ব্যাটিংয়ের ধরন দেখে তা মনে হয়নি।

তাতে যা হওয়ার তাই হলো। তৃতীয় ম্যাচে ১২০ রানের জয়ে ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়দের প্রত্যাশামতোই বাংলাওয়াশ করল তামিম ইকবালের দল।

খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০০৯ সালে করা ধবলধোলাই ছিল প্রশংসা-বিদ্রুপ মিশ্রিত। উইন্ডিজের মাটিতে ৩-০ ব্যবধানের ওই সিরিজ জয় ছিল প্রাপ্তি-তৃপ্তিরও। সেই তুলনায় অনভিজ্ঞ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এবারের সিরিজটি ছিল পানসে। তবে করোনা পরবর্তী ক্রিকেটে ফেরার এই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর ফলটা মিষ্টি।

কারণ ২০২৩ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পাওয়ার এই ওয়ানডে সুপার লিগ আসরে পূর্ণ ৩০ পয়েন্ট তুলে নিয়েছে টাইগাররা। সঙ্গে যোগ হয়েছে সবার চেয়ে বেশি নেট রান রেট। ১২০ রানের এই জয়ে ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয়বার ধবলধোলাই করেছেন সাকিবরা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের ১৪তম ধবলধোলাই পূর্ণ করেছে। ঘরে তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দশ ওয়ানডে সিরিজের পাঁচটি।

মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটিতে পরে ব্যাট করে যথাক্রমে ৬ ও ৭ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে তাই শুরুতে ব্যাট করা বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। শুরুতে লিটন দাস ও নাজমুল শান্ত ফিরে যাওয়ায় জোরালো হয় সেই শঙ্কা। তবে চার পাণ্ডব তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদুল্লহর ফিফটিতে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান তুলতে পারে স্বাগতিকরা।

জবাব দিতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৪.২ ওভারে তুলতে পারে ১৭৭ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ৩৬ ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রোভম্যান পাওয়েল। এছাড়া এনকুরুমা বোনার ৩১ রানের ইনিংস খেলেন। রেমন রেইফারের ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান। আর কেউ ২০ রানের ঘরে নাম তুলতে পারেননি।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২৯৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। চার ব্যাটসম্যান পঞ্চাশোর্ধ স্কোর করেছেন। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৮০ বলে ৬৪, সাকিব আল হাসান ৮১ বলে ৫৫, মুশফিকুর রহিম ৫৫ বলে ৬৪ এবং মাহমুদউল্লাহ ৪৩ বলে অপরাজিত ৬৪* রান করেন। ২টি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেপ আর রেমন রেইফার।

জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৭ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা। প্রথম আঘাত হানেন 'কাটার মাস্টার' খ্যাত মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি হন কিওর্ন ওটলি (১)। মুস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকার সুনিল অ্যামব্রিস। দলীয় ৪১ রানে মুস্তাফিজের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন ১৩ রান করা এই ওপেনার।

মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাত সামলে পাওয়ার প্লেতে খুব একটা রান তুলতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০ ওভারে ২ উইকেটে এসেছে ৪৪। ত্রয়োদশ ওভারে শিকার ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দ্বিতীয় ওয়ানডের ম্যাচসেরা এই স্পিনার কাইল মেয়ার্সকে (১১) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন। এরপর জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন জেসন মোহাম্মদ (১৭) এবং এনক্রুমা বনারকে (৩১)।

ক্যারিবীয়দের ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে মেহেদী মিরাজের ঘূর্ণিতে। মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরে যান জামার হ্যামিল্টন (৫)। এর মাঝেই কুঁচকিতে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন ৪.৫ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকা সাকিব আল হাসান। গত দুই ম্যাচে বোলিং বা ব্যাটিং কিছুই না করা সৌম্য সরকার এরপরের শিকারী। এই পার্টটাইম মিডিয়াম পেসারের বলে হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে আউট হন রোভম্যান পাওয়েল (৪৭)।

আলজারি জোসেপ (১১) হয়ে যান রান-আউট। পেসার আকিল হোসেনকে (০) ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শেষ উইকেট হিসেবে ছেঁটে দিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তাসকিন আহমেদ। ৪৪.২ ওভারে ১৭৭ রানে অল-আউট হয় উইন্ডিজ। ৫.৪ ওভার হাতে রেখেই ১২০ রানের বড় জয় পায় বাংলাদেশ। মোট ৮ জন বোলারকে দিয়ে বল করিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান আর মেহেদী মিরাজ। ১টি নিয়েছেন সৌম্য সরকার আর তাসকিন আহমেদ। একমাত্র সাইফউদ্দিন ছাড়া (৫.৬৭ ইকনোমি) কেউই ৪ এর ওপর রান দেননি।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে