আনসারের টানা পঞ্চম শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশ গেমসে

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০২১, ২০:০৮

যাযাদি ডেস্ক

বাংলাদেশ গেমসে পদক তালিকায় প্রথম হওয়ার লড়াইটা ছিল মূলত বাংলাদেশ আনসার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ আনসার গেমসে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।

 

সর্বশেষ পদক তালিকা অনুযায়ী বাংলাদশে আনসার ১৩২টি স্বর্ণ, ৮০টি রুপা ও ৫৭টি ব্রোঞ্জসহ ২৬৯টি পদক নিয়ে বাংলাদেশ গেমসে টানা চতুর্থবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১১৫টি স্বর্ণ, ৯৯টি রুপা ও ৮৩টি ব্রোঞ্জসহ ২৯৭টি পদক নিয়ে রানার্সআপ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ৬৩টি স্বর্ণ, ৩৯টি রুপা ও ২৫টি ব্রোঞ্জসহ ১২৭টি পদক নিযে তৃতীয়স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

 

২০১৩ সালের বাংলাদেশ গেমসে ১১১টি স্বর্ণ, ৭৫টি রুপা ও ৬৪টি ব্রোঞ্জসহ ২৫০টি পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আনসার। ৬৯টি স্বর্ণ, ৪১টি রুপা ও ৩৮টি ব্রোঞ্জসহ ১৪৮টি পদক নিয়ে সেনাবাহিনী ছিল রানার্সআপ। বিজেএমসি ৩৬টি স্বর্ণ, ৪৯টি রুপা ও ২৮টি ব্রোঞ্জসহ ১১৩টি পদক নিয়ে তৃতীয়স্থানে ছিল বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)। অবশ্য বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে খেলেনি এই সংস্থাটি।

 

৩১ ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৬ ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়ে আনসার ১৩২ স্বর্ণ নিয়ে সবার শীর্ষে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১১৫ স্বর্ণ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। সেনাবাহিনী রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ আনসারের চেয়ে বেশি হলেও স্বর্ণে কম হওয়ায় গেমসের সেরা হওয়া হয়নি।

 

বাংলাদেশ আনসার হকি, বাস্কেটবল, রোইং, ক্রিকেট ছাড়া বাকি সব ডিসিপ্লিনেই অংশ নিয়েছে। রোলার স্কেটিং, তায়কোয়ান্দো, উশু এই কয়েকটি ডিসিপ্লিনে মোট ইভেন্টের ৭০-৮০ শতাংশ স্বর্ণ পদক আনসার জিতেছে। মূলত এই জায়গাতে আনসার সেনাবাহিনীকে পেছনে ফেলেছে।

 

বাংলাদেশ আনসারের ক্রীড়া বিভাগের সহকারি পরিচালক রায়হান ফকির আনসারের এই সাফল্যের কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের দলকে আমরা সব সময় অনুশীলনে রাখি। খেলোয়াড় ও কোচদেরও অনেক সুযোগ-সুবিধা দেই। এজন্য আমাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বেশি।’

 

রায়হানের তথ্য মতে ১৯৯২, ৯৬, ২০০২ , ২০১৩ সালেও বাংলাদেশ আনসার গেমসে প্রথম হয়েছে। বাংলাদেশ গেমসের নয়টি আসরের মধ্যে পাঁচটি আসরেই সেরা আনসার।

 

১৯৯২ সালে ৫০ স্বর্ণ, ৪৯ রৌপ্য,৩৬ ব্রোঞ্জ মোট ১৩৫  পদক, ৯৬ সালে ৭০ স্বর্ণ, ৪৪ রৌপ্য, ৩৪ ব্রোঞ্জ মোট ১৪৮, ২০০২ সালে ৬৫ স্বর্ণ, ৬১ রৌপ্য, ৬৪ ব্রোঞ্জ মোট ১৯০, ২০১৩ সালে ১১১ পদক ,৭৫ রৌপ্য ৬৪ ব্রোঞ্জ মোট ২৫০ পদক।

 

আনসারের হয়ে খেলা রেকর্ড ভারত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত বলেন, ‘আনসার আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা দেয়। এজন্য আমরা ক্রীড়াবিদরাও আনসারকে সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করি।’

 

গেমসে স্বর্ণজয়ী ও রেকর্ড করা ক্রীড়াবিদদের বিশেষ অর্থ পুরস্কার থাকছে বলে জানালেন পরিচালক রায়হান, ‘যারা আমাদেরকে স্বর্ণ এনে প্রথম করেছেন। তাদের অবশ্যই আমরা পুরস্কৃত করব। আর্থিক পুরস্কারের অঙ্কটা এখনো ঠিক হয়নি।’

 

ক্রীড়াবিদদের আনসারের হয়ে খেলার কারণটি ব্যাখ্যা করলেন রায়হান, ‘আমরা প্রতি ডিসিপ্লিনে খেলোয়াড় অন্বেষণ করি। যারা আমাদের ক্যাম্পে সুযোগ পায়। তাদের মাসিক ভাতা দেই। এরপর তারা যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করে তখন তাদের রাজস্ব খাতে অর্ন্তভূক্ত করে দেই। রাজস্ব খাতে অর্ন্তভূক্ত করলে তারা অন্য সব সরকারি চাকুরির মতোই সুবিধা পায়।’

 

খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের জন্য প্রয়োজন উন্নত প্রশিক্ষক। কোচদের সম্পর্কে রায়হান বলেন, ‘খেলোয়াড়দের আমরা মাসিক ১২ হাজার সম্মানী দেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে। আর কোচদের ক্ষেত্রে সেটা ১৩ হাজার। এছাড়া আরো সুবিধা রয়েছে।’

 

এবারের গেমসে খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাসহ আনসারের হয়ে ৬০৩ জন এই গেমসে অংশ নিয়েছেন।

 

যাযাদি/এসআই