ব্যাট ও বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ফরচুন বরিশালকে জিতিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সঙ্গে ছিল স্পিনার নাঈম হাসানের ঘূর্ণি জাদু, ডোয়াইন ব্রাভোর জোড়া আঘাত। তাতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স পাত্তা পায়নি বরিশালের কাছে।
ইমরুল কায়েসের দলকে ৩২ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বরিশাল। এই নিয়ে টানা ৪ ম্যাচে জয় তুলে নিলেন সাকিবরা। মাঝে এক ম্যাচ বৃষ্টির হানায় পরিত্যক্ত হয়েছিল। সাকিব ব্যাট হাতে ৫০ রানের পাশাপাশি বল হাতে ২০ রান খরচায় নেন ২ উইকেট।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে সাকিবের হাতে। এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচ তিনি ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেলেন। এখন পর্যন্ত ৮ ম্যাচে ৫ জয়ে বরিশালের পয়েন্ট ১১। আর এক ম্যাচ কম খেলে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে কুমিল্লা।
কুমিল্লার বিপক্ষে ঢাকায় প্রথম দেখায় বরিশাল হেরেছিল ৬৩ রানে। সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচেই যেন মধুর প্রতিশোধ নিলো সাকিবের দল। বরিশালের দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রানে থামে কুমিল্লা।
দলটি আজ নেমেছিল অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফাফ ডু প্লেসিকে ছাড়া। সেই খেসারত দিতে হয়েছে ব্যাটিংয়ে। দ্বিতীয় ওভারেই ইমরুল কায়েসকে (১) ফেরান সাকিব। লিটন দাস মুজিবকে এক ওভারে ২ চার মেরে ঝড়ের আভাস দিলেও ১৯ রানের বেশি করতে পারেননি। সাকিবের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে।
এক প্রান্তে মুমিনুল হক আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে দেখা যায় উইকেটের মিছিল। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের উইকেটে স্পিনাররা কিছুটা বাউন্স পাচ্ছিলেন। তবে একবারে রান করা যায় না, এমন উইকেটও ছিল না এটি। ব্যাটসম্যানদের শট বাছা্ইয়ের ভুলের খেসারত দিয়েছে দল। মাহমুদুল হাসান জয় (৫), মঈন আলী (৬), নাহিদুল ইসলাম (১) ও সুনীল নারাইন (৩) ফেরেন দুই অঙ্কের ঘর ছোঁয়ার আগেই।
মুমিনুল থিতু হয়েও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারেননি। ৩০ বলে সর্বোচ্চ ৩০ রান করে ফেরেন সাজঘরে। শেষ দিকে করিম জানাত ১৩ বলে ১৭ ও তানভীর ইসলাম ১৪ বলে ২১ রান করে হারের ব্যবধানটুকুই কমিয়েছেন শুধু।
বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন নাঈম হাসান। শফিকুল ইসলামের পরিবর্তে তাকে একাদশে রাখা ছিল বরিশালের বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া ২ উইকেট করে নিয়েছেন সাকিব-ব্রাভো।
এর আগে সাকিবের ফিফটি ও ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াকু স্কোর গড়েছে ফরচুন বরিশাল। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৫৫ রান করে থামে তারা।
শাহরিয়ার-ক্রিস গেইলে বরিশালের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। শাহরিয়ারের ঝড়ে ৩ ওভারে দলটি ২৮ রান তুলে ফেলে। চতুর্থ ওভারে তানভীরের প্রথম বলে ৪ হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দেন গেইলও। তবে ঝড় তুলতে পারেননি। চতুর্থ বলে পয়েন্টে ধরা পড়েন সুমন খানের হাতে। গেইল ফিরলেও থামেনি শাহরিয়ারের ঝড়। সুমনের করা পঞ্চম ওভারে নেন ১৬ রান!
ক্রিজে এসে নাজমুল হোসেন শান্ত ফেরেন ১ রান করে। শাহরিয়ারের সঙ্গী হন সাকিব। দুজনে বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারির সঙ্গে সিঙ্গেলস ডাবলস নিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। কিন্তু মঈনের বলে ছন্দপতন ঘটে। ফ্লিক করতে গিয়ে মিড অনে ধরা পড়েন শাহরিয়ার। ২৫ বলে ৪৫ রান করেন তিনি।
এরপর সাকিব ও তোহিদ হৃদয়ের ব্যাটে এগোতে থাকে বরিশাল। সাকিব রানের চাকা সচল রাখলেও হৃদয়ের ব্যাট ছিল ধীরগতির। ৩৬ বলে ৪ চার ও ২ ছয়ে সাকিব ফিফটি করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। জুটি থেকে আসে ৫৫ বলে ৬৭ রান। সাকিব আউট হলেও হৃদয় শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৩১ রান করে। মাঝে ৬ বলে ১০ রান করে আউট হন ডোয়াইন ব্রাভো।
কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন তানভীর ইসলাম। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান, মঈন ও করিম।
যাযাদি/ এস