অপরাজিতই থেকে গেলেন মুশফিক, ৩৬৫ রানে অলআউট বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২৪ মে ২০২২, ১৪:০২

যাযাদি ডেস্ক

 

 

মুশফিকুর রহিম একাই লড়াই করছিলেন ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ডাবল সেঞ্চুরির দিকে কিন্তু এগার নম্বর ব্যাটার এবাদত হোসেনকে স্ট্রাইক দেবেন না বলে ডাবলস নিতে গিয়েই বাধলো বিপত্তি ননস্ট্রাইকে রানআউট হয়ে গেলেন এবাদত () মুশফিকের ডাবলের স্বপ্ন পূরণ হলো না, ১৭৫ রানে অপরাজিতই থেকে গেলেন ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ৩৬৫ রানে

 

এর আগে দিনের প্রথম ঘণ্টায় সাজঘরে ফিরে যান লিটন দাস মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত চাপ সামাল দেওয়ার পর তাইজুল ইসলাম খালেদ আহমেদও আউট হয়ে যান দ্রুত সময়ের মধ্যে তবু রণে ক্ষান্ত দেননি মুশফিকুর রহিম শেষ ব্যাটার এবাদত হোসেনকে নিয়েই লড়ে গেছেন নয় ওভারের বেশি, যোগ করেছেন ১৬ রান

 

আজ নতুন সকালের শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ কিন্তু বেশিক্ষণ সেটি ধরে রাখতে পারেননি লিটন দাস দিনের অষ্টম ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলা উইকেটরক্ষক ব্যাটার তার বিদায়ে ভাঙে ২৭২ রানের ইতিহাসগড়া জুটি লিটন ফেরার পর একই ওভারে আউট হয়ে গেছেন প্রায় সাড়ে তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত

 

আগেরদিনের করা উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে আজকের খেলা শুরু করেছিলেন মুশফিকুর রহিম লিটন দাস রাজিথার করা দিনের চতুর্থ ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আগের দিনের আধিপত্যের বার্তাই দেন মুশফিক কিন্তু নিজের পরের ওভারেই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান ডানহাতি পেসার

 

ইনিংসের ৯৩তম ওভারের প্রথম বলটি ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে লেন্থ ডেলিভারি খোঁচা দিতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো কুশল মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়ে যান লিটন মাত্র রানের জন্য প্রথমবারের মতো দেড়শ রানের মাইলফলক ছুঁতে পারেননি তিনি তবে ২৪৬ বলে ১৬ চার এক ছয়ে সাজানো ১৪১ রানের ইনিংসটি তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ

 

লিটনের বিদায়ের ভেঙেছে ২৭২ রানের জুটি বাংলাদেশের পক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি এটি সবমিলিয়ে এর চেয়ে বেশি রানের জুটি আছে কেবল দুইটি ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক সাকিব আল হাসান ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইমরুল কায়েস তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটি ছিল ৩১২ রানের

 

একইভাবে বলের সংখ্যায়ও এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ মুশফিক-লিটনের জুটিতে ৩৮৪ মিনিট খেলে মোকাবিলা করেছে ৫১৩ বল ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১৮ বল খেলে ২৬৭ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিক মোহাম্মদ আশরাফুল গতবছর একই দলের বিপক্ষে মুমিনুল হক নাজমুল হোসেন শান্তর ২৪২ রানের জুটি হয়েছিল ৫১৪ বল খেলে

 

লিটন-মুশফিকের জুটি ভাঙার পর তিন বল টিকতে পেরেছেন মোসাদ্দেক অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হয়েছেন তিনি যার সুবাদে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন রাজিথা চট্টগ্রাম টেস্টেও একমাত্র ইনিংসে বোলিং করে চারটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি

 

একই ওভারে জোড়া ধাক্কা খেলেও দমে যাননি মুশফিক বরং লেজের সারির ব্যাটার তাইজুলকে নিয়ে শুরু করেন নতুন লড়াই উইকেটে আঁকড়ে পড়ে থাকার চেয়ে বরং রানের প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানোর দিনেই মন দেন মুশফিক রমেশ মেন্ডিসের করা ৯৯তম ওভারে মুখোমুখি ২৮৪তম বলে গিয়ে প্রথম রিভার্স সুইপ মারেন তিনি, পেয়ে যান বাউন্ডারি

 

সেই ওভারেই পরের বলে দৃষ্টিনন্দন এক কভার ড্রাইভে ১৪০- ঘরে ঢুকে যান মুশফিক প্রবীণ জয়াবিক্রমের পরের ওভারে মুশফিকের পাশাপাশি তাইজুলও হাঁকান বাউন্ডারি যা স্বস্তির বাতাস বইয়ে দেয় টাইগার শিবিরে তবে সেই ওভারে দেড়শো হয়নি মুশফিকের, অপেক্ষা করেন ১৪৯ রানে দাঁড়িয়ে

 

রমেশের করা ১০১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অনসাইডে খেলে দ্রুত দুই রান নিয়েই ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো দেড়শো ছাড়িয়ে যান মুশফিক বাংলাদেশের পক্ষে তিনবার দেড়শো ছাড়িয়েছেন মুমিনুল হক, তামিমের রয়েছে দুইটি দেড়শো রানের ইনিংস দুজনের চেয়ে বেশ এগিয়েই রইলেন মুশফিক

 

তিনশোর আগেই জোড়া ধাক্কা খেলেও, তাইজুলকে নিয়ে মুশফিকের জুটিটি ছিলো দারুণ বোঝাপড়ার ফল অভিজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে প্রতি ওভারেই তাইজুলকে পরামর্শ দিচ্ছিলেন মুশফিক এমনকি তাইজুলের উইকেট বাঁচিয়ে রাখার জন্য ওভারের শুরুর দিকে তাকে স্ট্রাইকও দিচ্ছিলেন না অভিজ্ঞ ব্যাটার

 

মনে হচ্ছিল, মুশফিক-তাইজুলের জুটিতে মধ্যাহ্ন বিরতিতে চলে যাবে বাংলাদেশ দল কিন্তু বিরতির মিনিট দশেক আগেই ঘটে বিপত্তি আসিথা ফার্নান্দোর বাউন্সারে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তাইজুল তার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ১৪ রান তাইজুলের বিদায়ে ভাঙে ৪৯ রানের অষ্টম উইকেট জুটি

 

এরপর খালেদ আহমেদ টিকতে পারেননি উইকেটে এক ওভার পর আসিথার চতুর্থ শিকারে পরিণত হয়ে ফেরার আগে রানের খাতা খুলতে পারেননি লেজের সারির ব্যাটার বাংলাদেশের ইনিংসে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে শূন্য রানে আউট হন খালেদ এবাদত ফিরলে সংখ্যাটা হয় ছয়

 

যাযাদি/এসএইচ