আকসারের বিস্ফোরক ইনিংসে ভারতের সিরিজ জয়

প্রকাশ | ২৫ জুলাই ২০২২, ১০:১০

যাযাদি ডেস্ক

শততম ওয়ানডে খেলতে নেমে সেঞ্চুরিতে রাঙিয়েছিলেন শেই হোপ, অধিনায়ক নিকোলাস পুরান খেলেছিলেন সত্তর পেরুনো ইনিংস। তাতে তিনশো ছাড়ানো পুঁজি পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই পুঁজি নিয়ে একটা পর্যায়ে জেতারও আশা জাগিয়েছিল তারা। তবে আকসার প্যাটেলের বিস্ফোরক ইনিংসে ভারতের কাছে আরেকটি হারের স্বাদ পেতে হয়েছে ক্যারিবিয়ানদের।

রোববার ত্রিনিদাদের পোর্ট অফ স্পেনে দ্বিতীয় ওয়ানডের ফয়সালাও হয়েছে শেষ ওভারে। ২ বল হাতে রেখে ভারত ম্যাচ জিতেছে ২ উইকেটে। হোপের সেঞ্চুরিতে আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ৩১১ রান। শ্রেয়াস আইয়ার আর সঞ্জু স্যামসনের ফিফটির পর ম্যাচ জেতানোর ইনিংস খেলেন আকসার। মাত্র ৩৫ বলে ৩ চার, ৫ ছক্কায় করেন ৬৪ রান।  এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ বাকি থাকতেই নিজেদের করে নিল সফরকারীরা। ৩১২ রান তাড়ায় নেমে উড়ন্ত সূচনা আনতে পারেনি ভারত। শুভমান গিল সড়গড় থাকলেও অধিনায়ক শেখর ধাওয়ান ধুঁকতে থাকেন। রানের চাকা শুরু থেকেই হয়ে পড়ে মন্থর।

একাদশ ওভারে রোমারিও শেফার্ডের বলে কাইলমেয়ার্সের দারুণ ক্যাচে শিকার হয়ে যখন ধাওয়ান ফিরছেন দলের রান তখন কেবলই ৪৮। ধাওয়ান ১৩ রান করতে লাগিয়ে দেন ৩১ বল।  আগের ম্যাচে ফিফটি করা গিল এদিনও ছিলেন সে পথে। তবে ৪৯ বলে ৪৩ করে তাকে থামতে হয় মেয়ার্সের বলে।

সূর্যকুমার যাদবও প্লেইড অন হয়ে যান মেয়ার্সের বলে। ম্যাচে তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাধান্য। এমন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ জুটি আসে আইয়ার-স্যামসনের। চতুর্থ উইকেটে ৯৪ বলে তারা যোগ করেন ৯৯ রান। রানরেটের ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে যায়। আলজেরি জোসেফের বলে ৬৩ করে আইয়ার বিদায় দিলে স্যামসন জুটি বাধেন দীপক হুডার সঙ্গে। এই জুটিতে ২৭ যোগ হওয়ার পর ফিফটি করা স্যামসন কাটা পড়েন রান আউটে।

ভীত নড়ে উঠে ভারত এরপর জেগে উঠে আকসার-হুডার জুটিতে। ৩৩ বলে তারা যোগ করেন ৫১ রান। যাতে আকসারেরই অবদান বেশি। ঝড় তুলে এই বাঁহাতি ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে থাকেন দ্রুত। ৩৬ বলে ৩৩ করা হুডা আকিল হোসেনের শিকার হয়ে ফিরে ফেলেও চিন্তা বাড়তে দেননি আকসার। টেল এন্ডারদের এক পাশে রেখে ঝড় তুলে ম্যাচ করে দেন সহজ। শেষ ২ ওভারে ১৫ রানের প্রয়োজন মেটান ১০ বল খেলেই। এর আগে ব্যাটিং বেছে উড়ন্ত শুরু আনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মেয়ার্স-হোপের জুটিতে প্রথম পাওয়ার প্লে নিজেদের করে নেয় তারা। টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ২৩ বলে ৩৯ করে থামেন মেয়ার্স।

উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫ বলে ৬২ আসার পর দ্বিতীয় উইকেটে শামরাহ ব্রোকস ৭৪ বলে ৬২ যোগ করেন হোপ। থিতু হওয়া ব্রোকসকে ফেরান আকসার। ব্র্যান্ডন কিং নেমেই বোল্ড হয়ে যান যুজভেন্দ্র চেহেলের লেগ স্পিনে। দ্রুত ২ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা এরপর পেয়ে যায় বড় জুটি। চতুর্থ উইকেটে হোপ-পুরান মিলে ১২৬ বলে যোগ করেন ১১৭ রান। যাতে ৭৪ রান পুরানেরই। থিতু হতে সময় নেওয়া ক্যারিবিয়ান কাপ্তান একের পর এক ছক্কায় পুষিয়েছেন রানরেটের ঘাটতি। শার্দুল ঠাকুরের বলে আউট হওয়ার আগে ৭৭ বলের ইনিংসে এক চারের সঙ্গে মেরেছেন হাফ ডজন ছক্কা।

হোপ আশি পেরুনোর পর গতি আরও কমিয়ে দিলে চাপ বাড়ে। তবে ছক্কা মেরে তিনি তিন অঙ্কের ঠিকানায় পৌঁছান ১২৬ বলে। ১৩তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তার জন্য বিশেষ। ওয়ানডে ইতিহাসের দশম ব্যাটার হিসেবে শততম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে এর আগে এমন কীর্তি ছিল গর্ডন গ্রিনিজ, ক্রিস গেইল ও রামনারেশ সারওয়ানের।

সেঞ্চুরির পর খুব বেশি ঝড় তোলা হয়নি তার। আরেক পাশে রভম্যান পাওয়েল নেমে এদিনও ছিলেন ব্যর্থ। ৪৯তম ওভারে হোপ ফেরেন ১১৫ রান করে। এদিনও ব্যাট হাতে ভাল অবদান রোমারিওর। তার ১১ বলে ১৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পার হয় তিনশোর গণ্ডি। আকসারের ঝড়ে যদিও এই রান আর যথেষ্ট থাকেনি। 

যাযাদি/ এসএইচ