চৌত্রের তপ্ত বিকালে ঘোড়দৌড় উপভোগে মানুষের ঢল

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০২৩, ১৩:৪৪

এস আর এ হান্নান, মহম্মদপুর প্রতিনিধি

চৈত্রের তপ্ত দুপুর। বিভিন্ন গ্রাম থেকে নানান পথে সব শ্রেণিপেশা ও বয়সের মানুষ দিগন্ত বিস্তৃত ফাঁকা মাঠে এসে জড়ো হচ্ছেন। চৈত্ররোদ মাথায় নিয়ে হাজার হাজার মানুষের অপেক্ষা। তাদের অপেক্ষমান চোখ এবং অবয়বে উৎসব আনন্দ আর উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। মনে অফুরন্ত আনন্দ স্পষ্ট। এই অপেক্ষা-আনন্দ ও উৎসবমুখরতা ঘোড়দৌড় উপভোগের জন্য। মাগুরার মহম্মদপুরের ঢুষরাইল গ্রামের দিগন্তবিস্তৃত খোলা মাঠে বুধবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয় গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ, ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। হাজার হাজার মানুষ উপভোগ করেন মনোমুগ্ধকর ঘোড়দৌড়। শিশু-কিশোর, ছেলে-বুড়ো ও নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বিভিন্ন সড়ক এবং মেঠো পথে আসেন গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড় দৌড় উপভোগ করতে।

ঘড়ির কাটা তখন চারটা ছুঁই ছুঁই। একে একে ১৫টি ঘোড়ার উপস্থিতি চোখে পড়লো। ঘোড়দৌড়ের রাস্তায় ঘোড়া মালিক, ফকির ও ছোয়াররা (জকি) ঘোড়াকে তার নির্দিষ্ট পথপরিক্রমা চেনাতে ও দেখাতে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। স্থানীয় এবং যশোর, নড়াইল ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘোড়াগুলোতে প্রতিযোগিতায় এনেছেন ঘোড়া মালিকরা। ঠিক চারটায় শুরু হয় কাঙ্খিত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। ছোয়ারের বাঁশির ছন্দময় আওয়াজে খোলা মাঠের ধুলো উড়িয়ে টগবগিয়ে ঘোড়া ছুঁটছে দুর্দান্ত গতি ও ছন্দে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তা ও বিশাল মাঠে দাঁড়িয়ে মনোমুগ্ধকর এ দৃশ্য উপভোগ করেন।

আমাদের দেশে নানান কারণে ক্রমশ: ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন কমছে। বহূ এলাকার প্রাচীণতম অধিকাংশ ঘোড়দৌড় মেলা বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও তা হলেও খুব একটা জমজমাট হয় না। কারণ হিসেবে জানাগেছে, আগে যেসব রাস্তায় ঘোড়দৌড় হতো সেসব রাস্তার অধিকাংশই কার্পোটিং হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিকল্প হিসেবে বিলের মধ্যে এ আয়োজন এখনও চলমান রয়েছে। সেই তুলনায় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই প্রতিযোগিতার এখনও ব্যাপক চল রয়েছে। প্রতি বছর এই উপজেলার অন্তত: ১০ থেকে ১২টি এলাকায় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

যাযাদি/ এস