এশিয়া কাপে কাল মুখোমুখি বাংলাদেশ-পাকিস্তান

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৯

যাযাদি ডেস্ক
ফাইল ছবি

আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারলেই বাদ, বড় ব্যবধানে জিততে না পারলেও শঙ্কা থাকবে বাদ পড়ার - এমন সমীকরণের সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল টাইগাররা। বাংলাদেশ দলকে নিয়ে সবার যখন শঙ্কায় বুক দুরুদুরু, ব্যাট হাতে ওপেনিং করতে এলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লোয়ার অর্ডার ব্যাটারকে মেইকশিফট ওপেনার হিসেবে খেলানোর ঝুঁকি নিয়ে বাজিমাত করেছে সাকিব আল হাসানের দল। আফগানদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে নিশ্চিত করেছে সুপার ফোর।

আগামী বুধবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই ফের পরীক্ষা শুরু বাংলাদেশের। সুপারফোরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক পাকিস্তান। আফগানদের পেস আক্রমণের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী পাকিস্তানের পেস আক্রমণ। মিরাজ কি প্রস্তুত এই আসরের তর্কাতীত সেরা পেস আক্রমণের মুখোমুখি হতে?

হাস্যোজ্জ্বল মিরাজের সপ্রতিভ উত্তর, ‘আমি যে কোনো বোলারের মুখোমুখি হতে সব সময়ই প্রস্তুত।’

মিরাজ আত্মবিশ্বাসী হতেই পারেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে মিরাজের ১১৯ বলে ১১২ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশকে এশিয়া কাপে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ এনে দিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষেও হয়তো তাকেই ওপেন করতে পাঠাবেন অধিনায়ক সাকিব। সে ক্ষেত্রে শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফ, নাসিম শাহর মতো পেসারদের তাকেই সামলাতে হবে।

শাহিন আফ্রিদিকে নতুন বলে সামলানো যে কোনো ব্যাটারের জন্যই এখন দুঃস্বপ্ন। নিয়মিতই নতুন বলে উইকেট তুলে নিচ্ছেন এই পেসার। ভারতের বিপক্ষে তো নতুন বলে ফিরিয়েছেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে। নতুন বলে তাকে সামলানো নিয়ে কোনো চাপ অনুভব করছেন মিরাজ?
সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মিরাজ বলেন, ‘আমি কোনো বোলারকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না। আমি মিডল অর্ডারে ভালো খেলতে চাই। হ্যাঁ, পরের ম্যাচটা আমার জন্য দারুণ সুযোগ। টপ অর্ডারেও খেলতে পারব। টিম ম্যানেজমেন্ট সে সুযোগ দিলে ভালোই হবে।’

বাংলাদেশের সুপারফোর নিশ্চিত। এই গ্রুপ থেকে এখনো শ্রীলংকার সুপারফোর এখনো নিশ্চিত না হলেও সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে তারা। সুপারফোরে যদি শ্রীলংকা ও ভারত কোয়ালিফাই করে তবে তাদের বিপক্ষে কলম্বোয় দুটি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে লংকানদের বিপক্ষে টাইগারদের নাগিন ড্যান্সের দেখা মেলেনি।

নিদাহাস ট্রফিতে টাইগারদের হাত ধরে নাগিন ড্যান্সের শুরু। পরে সেই নাচ লুফে নেয় লংকানরাও। তারপর থেকে তো দুদলের ম্যাচ রূপ পেয়েছে লংকান ডার্বিতে। ফিরতি দেখায় হবে নাচের প্রতিযোগিতা? হাসতে হাসতে মিরাজ বলেন, ‘সবসময়। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার মধ্যে সবসময়ই এটা নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। এটা নিদাহাস ট্রফিতে শুরু হয়েছিল।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভিন্ন এক কৌশলে ব্যাটিং পজিশন সাজিয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে টাইগার ক্রিকেটার মিরাজকে সাত কিংবা আটে দেখা যায়, তিনি কিনা রোববার ওপেনিংয়ে নেমে করলেন শতক। তবে এবারই প্রথম নয় যে মিরাজ ওপেনিং করেছেন। 

ওয়ানডেতে এর আগেও একবার ওপেন করতে নেমেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেটাও ছিল এশিয়া কাপের আসরে। ২০১৮ সালের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে লিটন দাসের সঙ্গে নেমে দলের চাহিদা মিটিয়েছিলেন তিনি। তবে এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে যা করলেন সেটা ছাড়িয়ে গেছে আগের সব কীর্তি। সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের নায়ক জানালেন, টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসা পেয়ে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন তিনি।

ম্যাচে দুটি পুরস্কার পেয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমি খুব খুশি। আমার মনে হয়, টিম ম্যানেজমেন্ট আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে। এটা দারুণ উইকেট ছিল, বল সহজেই ব্যাটে এসেছে। আমি শুধু লাইন বুঝে খেলতে চেষ্টা করছি। শান্তর সঙ্গে জুটিটা দারুণ ছিল।’

ওয়ানডে ক্রিকেটে মিরাজ তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা করলেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আর বল হাতেও তুলে নিয়েছেন একটি উইকেট। যার কারণেই ম্যাচসেরার পুরস্কারটা তার হাতে গিয়েছে। এর সঙ্গে আরও একটি পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ৩টি ছক্কা হাঁকানো ব্যাটার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন মিরাজ।

যাযাদি/ এস