টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পথে তাসকিন?

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১৬

যাযাদি ডেস্ক

চোট প্রবণতায় পেসার তাসকিন আহমেদকে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভাবতেই হচ্ছে। দীর্ঘদিন সার্ভিস দেওয়ার জন্য শুধু সাদা বলের ক্রিকেট খেলে যেতে চাচ্ছেন তিনি। আর তাই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) অনুরোধ করেছেন টেস্টে বিবেচনায় না রাখতে।  

ক্রিকবাজ জানিয়েছে, তাসকিন এ ব্যাপারে অনুরোধ করে বিসিবিকে লিখিত একটি চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে লিখেছেন, তাকে যেন শুধু সাদা বলের ক্রিকেটে বিবেচনায় নেওয়া হয়। সেটা হলে আরও বেশিদিন ক্রিকেট খেলতে পারবেন। পাশাপাশি কাঁধে যে চোট বয়ে বেড়াচ্ছেন, সেটা সারিয়ে ফেলতে পর্যাপ্ত সময় পাবেন বলে মনে করেন তিনি।


বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘তাসকিন এই মর্মে চিঠি দিয়েছে যে সে আর লংগার ভার্সনে খেলতে চায় না। বিপিএল শেষ করেই আমরা তার সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করব।’

জানা গেছে, তাসকিনের বিষয়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও জানতে পেরেছেন। তাসকিনকে অনুরোধ করেছেন বিষয়টা আবার ভেবে দেখার। জালাল ইউনুস আরও বলেছেন, ‘এখন কোচকে আসতে দিন। তাকে নিয়েও বিষয়টার সমাধানে আলাদা করে আমাদের বসতে হবে।’
বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছেন, এ বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে তাদের কথা বলতে হবে। তার পরই একটা সিদ্ধান্তে আসা যাবে।  বিশ্বকাপের সময় কাঁধে চোট পান তাসকিন। যে কারণে বৈশ্বিক ইভেন্টে বেশকিছু ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। ওই টুর্নামেন্টে পর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ মিস করেছেন। খেলতে পারেননি সাদা বলের ফিরতি সিরিজেও। বর্তমানে বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে খেললেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকেই সবকিছু করতে হচ্ছে তাকে।

তাসকিন মনে করছেন, শুধু বিপিএলে নয়, টেইল এন্ডার ব্যাটাসম্যানরা উন্নতি করতে পারলে সেটা সামনের টি২০ বিশ্বকাপেও কাজে লাগবে। দুর্দান্ত ঢাকার ডানহাতি এই পেসার বলেন, ‘আল্টিমেটলি আমরা টেইল এন্ডাররা যদি উন্নতি করি, এটা আমাদের অনেক ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখবে। এটাই চাই। কারণ সামনে আমাদের টি২০ বিশ্বকাপ আছে। তো একটু মেহনত করলে হয়তো ভালো টেইল এন্ডার হওয়া সম্ভব। এ রকম দু-একটা ইনিংস হলে নিজেরও একটু ভালো লাগে। কারণ মাঝেমধ্যে যখন এমন হয়, তখন মনে হয় যে বাড়তি যে অনুশীলন করছি, পরিশ্রম করছি, এর ফল পেলাম। এখনো অনেক উন্নতি বাকি আছে।’

বিপিএলে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে পেস বোলিং জুটি গড়েছেন তাসকিন আর শরিফুল। জাতীয় দলেও তারা জুটি হয়ে খেলেন। বিপিএলের এই জুটি পরও সাহায্য করবে কিনা? তাসকিন বলেন, ‘অবশ্যই, সাহায্য তো করবেই। আমরা ৫-৬ জন গত কয়েক বছর ধরে একসঙ্গেই খেলছি। কারও কোনো ঘাটতি থাকলে একজন আরেকজনেরটা ধরায় দিতে পারি। এই জিনিসগুলো কিন্তু আমাদের বন্ধনকে আরও শক্ত করছে। যেটা আমাদের সামনের দিনে অনেক খেলা আছে, ওখানেও সাহায্য করবে। আশা করি ভালো হবে।’

বোলাররা তাদের কাজটা করেছেন। সিলেট স্ট্রাইকার্সকে মাত্র ১৪২ রানেই আটকে দেন তাসকিন-শরিফুলরা। কিন্তু এই রানও তাড়া করতে পারেনি দুর্দান্ত ঢাকা। ৯ উইকেটে ১২৭ রানে থামে তাদের ইনিংস। মোসাদ্দেক হোসেনের দল ম্যাচ হারে ১৫ রানে। হারের ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত। ঢাকার স্বীকৃত ব্যাটাররা যে হতাশা উপহার দিয়েছেন আবারও। শেষদিকে তাসকিন আহমেদ ১১ বলে ৬টি চার হাঁকিয়ে করেন অপরাজিত ২৭ রান।

একশর আগে (৯২ রানে) ৯ উইকেট হারিয়ে বসে ঢাকা। তারপর তাসকিন তেড়ে-ফুঁড়ে মারছিলেন। যদিও ততক্ষণে জয়ের আশা শেষ। সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের ওপর রাগ করেই মারছিলেন নাকি? রাগের প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, ‘ব্যাটারদের ওপর রাগ করব কেন (হাসি)? ওরা তো আমাদের সতীর্থ। হ্যাঁ, একটু হতাশ। যেহেতু কম রানের ম্যাচও আমরা তাড়া করতে পারিনি। অবশ্যই তাড়া করা উচিত ছিল। আমি নিশ্চিত, আমাদের দলের ব্যাটাররাও হতাশ। দিনশেষে আসলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট, সবার ক্যারিয়ারেরও বিষয়। অবশ্যই ভালো অনুভূতি নয়।’

নিজের ইনিংস নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘এ রকম দু-একটা ইনিংস হলে নিজেরও একটু ভালো লাগে। কারণ মাঝেমধ্যে যখন এমন হয়, তখন মনে হয় যে বাড়তি যে অনুশীলন করছি, পরিশ্রম করছি, এর ফল পেলাম। এখনো অনেক উন্নতি বাকি আছে। আল্টিমেটলি আমরা টেইল এন্ডাররা যদি উন্নতি করি, এটা আমাদের অনেকগুলো ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখবে। এটাই চাই। কারণ সামনে আমাদের টি২০ বিশ্বকাপ আছে। তো একটু মেহনত করলে হয়তো ভালো টেইল এন্ডার হওয়া সম্ভব।’

যাযাদি/ এস