হামজার দুর্দান্ত অভিষেকে ভুটানকে হারাল বাংলাদেশ

প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ২১:৪৫

যাযাদি ডেস্ক
ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে মাত্র ষষ্ঠ মিনিটেই দুর্দান্ত এক গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। 

বাংলাদেশের ফুটবলে এখন সবচেয়ে আলোচিত নাম হামজা চৌধুরী। জাতীয় দলে তার আগমন যেন নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে এনেছে দেশের ফুটবলে। 

সেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত এল আজ, যখন দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলের জার্সিতে মাঠে নামলেন এই ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডার। 

আর অভিষেক ম্যাচেই নিজের জাত চেনালেন হামজা।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে মাত্র ষষ্ঠ মিনিটেই দুর্দান্ত এক গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন হামজা চৌধুরী। 

শুরুতেই গোল পেয়ে দলেও আসে স্বস্তি, স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরাও হয়ে ওঠে উচ্ছ্বসিত। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে সোহেল রানার পা থেকে আসে বাংলাদেশের দ্বিতীয় গোলটি। 

শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা।

ঢাকার মাঠে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে ইংলিশ লিগে খেলা ডিফেন্ডার হামজা চৌধুরীর। 

একই ম্যাচে ইতালি প্রবাসী ফাহমিদুল ইসলাম এবং ডিফেন্ডার তাজ উদ্দিনেরও অভিষেক হয়েছে।

ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই ৪-২-৩-১ ছকে রক্ষণে উচ্চ লাইন রেখে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। 

আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও গোল এসেছে মাত্র একটি।

তৃতীয় মিনিটেই গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। সৈয়দ কাজেম শাহের কাটব্যাক থেকে ঠিকমতো বলটি ছুঁতে পারেননি তিনি। তবে তিন মিনিট পরই আসে কাঙ্ক্ষিত গোল।

 জামালের কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে দলকে এগিয়ে দেন অভিষিক্ত হামজা চৌধুরী।

প্রথমার্ধে আরও কয়েকটি ভালো সুযোগ পেলেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। 

রাকিব, ফাহমিদুল ও কাজেম শাহের কিছু আক্রমণ প্রতিহত করেন ভুটানের গোলরক্ষক বা ব্যর্থ হয় নিজেদের লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে। 

বিরতির আগে তাজ উদ্দিনের ক্রসে ফাহমিদুলের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশ হয় গ্যালারি ভর্তি দর্শকরা।

বিরতির পর কোচ ক্যাবরেরা তিনটি পরিবর্তন আনেন— মাঠে নামেন ইব্রাহিম, মোরসালিন ও হৃদয়। 

তাদের জায়গা করে দেন হামজা, কাজেম ও তারিক। পরে আরও তিনটি পরিবর্তন করেন কোচ, যার মধ্যে ছিল আল আমিনের অভিষেকও। 

ভারতের বিপক্ষে দলে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি এই তরুণ স্ট্রাইকারের।

দ্বিতীয়ার্ধে গোল ব্যবধান বাড়ানোর অনেক সুযোগ তৈরি হলেও ভুটানের গোলরক্ষক গেইলশেন জাংপো ছিলেন অনন্য। 

৪৮ মিনিটে ফাহমিদুলের ক্রসে মোরসালিনের শট, ৫১ মিনিটে রাকিবের অপচয় এবং ৬৩ মিনিটে আল আমিনের কাটব্যাকে মোরসালিনের শট প্রতিহত করেন ভুটান ডিফেন্স।

৭২ মিনিটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুল প্রথমবারের মতো বড় পরীক্ষা দেন এবং ফ্রি কিক আটকে দেন দক্ষতার পরিচয়। 

৭৩ মিনিটে গ্যালারিতে ঘটে বিচিত্র এক ঘটনা, এক দর্শক নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে হামজার সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে ধরা পড়েন। কিছুক্ষণ পর একই চেষ্টা করে ব্যর্থ হন আরেকজন।

শেষদিকে ইব্রাহিমের শটও আটকে দেন ভুটান গোলরক্ষক। 

যোগ করা সময়ে মিতুল একবার বল আটকে দলকে গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন।

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ জুনের এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের আগে এই ম্যাচে জয় পেলেও গোলের সুযোগ নষ্ট এবং ফিনিশিং সমস্যা কোচ ক্যাবরেরার জন্য চিন্তার কারণ হতে পারে। 

তারপরও একাধিক নতুন খেলোয়াড়ের অভিষেক ও জয়, দুটি দিক থেকেই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক এক প্রস্তুতি।