আসালাঙ্কার সেঞ্চুরি
টাইগারদের বোলিং দাপটে ২৪৪ রানেই শেষ শ্রীলংকা
প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৫ | আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫, ২০:১৫

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসের পর বাংলাদেশের মন খারাপ হতেই পারে। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সর্বশেষ চার ম্যাচে তারাই জিতেছে, যারা টস জিতেছে। সেই বিজয়ী দলের নাম আবার শ্রীলংকা। তবে, বাংলাদেশি বোলাররা আশা হারাননি।
যদিও এদিন চারিথ আসালাঙ্কা দায়িত্বশীল এক সেঞ্চুরি হাঁকালেন। তা না হলে আরও আগেই হয়তো লংকানদের আটকে দিতে পারতো বাংলাদেশ। আসালাঙ্কার সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৪৪ পর্যন্ত গেছে শ্রীরংকার ইনিংস। ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে তাদের অলআউট করেছেন তাসকিন-সাকিবরা। অর্থাৎ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৪৫ রান।
আজ বুধবার (২জুলাই) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলংকাা। শুরু থেকেই শক্তহাতে বোলিং করতে থাকেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। যে কারণে উইকেট পেতেও দেরি হয়নি তাদের।
টেস্টে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন শ্রীলংকার ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। এবার লঙ্কান ব্যাটারকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশ। খালি হাতে তাকে ফিরিয়েছেন টাইগার পেসার তানজিম হাসান সাকিব। ৮ বলে ০ রানে সাজঘরে ফেরেন নিশাঙ্কা।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে নিশাঙ্কাকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান সাকিব। ব্যাক অব লেন্থের বলে কাট করতে গিয়েছিলেন লঙ্কান ওপেনার। কিন্তু ব্যাটের বাইরের পাশ ঘেষে বল চলে যায় লিটনের গ্লাভসে।
পরের ওভারে আরেক ওপেনার নিশান মাদুশকাকে বোল্ড করে দেন তাসকিন আহমেদ। ১৩ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১১ রানে ২ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
তাসকিন নিজের পরের ওভারে এসে কামিন্দু মেন্ডিসকেও আউট করেন। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে মিডঅফে মাথার ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন কামিন্দু। কিন্তু বল সেভাবে ভাসেনি, সেখানে ফিল্ডিং করা মেহেদী হাসান মিরাজের নাগালের মধ্যে পড়ে যায়।
দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেননি মিরাজ। কামিন্দুর সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলীয় ২৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এরপর হাল ধরেন চারিথ আসালাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস। লঙ্কানদের অনেকটা পথ এগিয়ে দেন তারা।
বেশ ভালো টার্ন পাচ্ছিলেন তানভীর ইসলাম। বেশ কয়েকবার ব্যাটারকে পরাস্ত করেন। অবশেষে ওয়ানডে অভিষেকে দ্বিতীয় ওভারে উইকেট তুলে নেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
তানভীরের ঘূর্ণিতে পা পেতে দিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন কুশল মেন্ডিস। বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন তিনি। তবে ৪৩ বলে ৪৫ রানে থামতে হয়েছে তাকে। চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে ৭৭ বলে ৬০ রানের জুটি ভাঙে তাতে। ৮৯ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটে শ্রীলঙ্কার।
জুটি গড়ে উঠছিল আবার। ৩২তম ওভারে পার্টটাইম অফস্পিনার নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে বল তুলে দিলেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম বলেই শান্ত হজম করেন বাউন্ডারি। তবে দুই বল পর এনে দেন উইকেট।
শান্তকে ডাউন দ্য উইকেটে হাঁকিয়ে লংঅনে তানজিম হাসান সাকিবের সহজ ক্যাচ হন জানিথ লিয়ানাগে। ৪০ বলে তিনি করেন ২৯ রান। আসালাঙ্কার সঙ্গে ৭৬ বলে ৬৪ রানের জুটি ভাঙে তাতে।
এরপর সেট হয়ে যাওয়া মিলান রথনায়েকেকে (২২) বোল্ড করেন তানজিম সাকিব। হাসারাঙ্গাকেও ব্যক্তিগত ২২ রানেই সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন। একই ওভারে মাহিশ থিকশানাকেও (১) তুলে নেন এই পেসার।
তবে চারিথ আসালাঙ্কাকে ঠেকানো যায়নি। দেখেশুনে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে ১১৭ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি।
ইনিংসের শেষ ওভারে তাকে ফেরান তানজিম সাকিব। ১২৩ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে ৬টি চার আর ২টি ছক্কা হাঁকান আসালাঙ্কা। তাসকিন আহমেদ ৪৭ রানে ৪টি এবং তানজিম সাকিব রানে নেন ৪৫ রানে নেন ৩টি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলংকা : ৪৯.২ ওভারে ২৪৪/১০ (নিশাঙ্কা ০, মাদুশঙ্কা ৬, কুশাল মেন্ডিস ৪৫, কামিন্দু মেন্ডিস ০, আসালাঙ্কা ১০৬, লিয়াঙ্গে ২৯, রত্নায়াকে ২২, হাসারাঙ্গা ২২, থিকশানা ১, মালিঙ্গা ৫, ফার্নান্দো ০*; তাসকিন ১০-২-৪৭-৪, সাকিব ৯.২-০-৪৫-৩, মুস্তাফিজ ৬-১-২৪-০, মিরাজ ১০-০-৪৭-০, তানভীর ১০-০-৪৪-১, শান্ত ৪-০-৩২-১)