অথর্নীতিতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা কমছে

কাযর্কর পদক্ষেপ নিতে হবে

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৫৪

অনলাইন ডেস্ক
জিডিপির সঙ্গে বাংলাদেশের গৃহ ঋণের প্রবৃদ্ধি অসঙ্গতিপূণর্ হলে তা স্বাভাবিকভাবেই ইতিবাচক নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অথর্নীতির অন্যতম সূচক হচ্ছে গৃহ ঋণ। কিন্তু জিডিপির তুলনায় বাংলাদেশের এ গৃহ ঋণ প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে এমন বিষয় যখন সামনে আসছে, তখন তা উদ্বেগের। জানা যায়, গত ১৪ বছরের মধ্যে সবির্নম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। অথচ সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া দরকার যে, গতিশীল অথর্নীতির জন্য এটি সঙ্গতিপূণর্ নয়। কেননা এর অথর্ দঁাড়ায় দেশের সাধারণ মানুষের অথৈর্নতিক সম্পৃক্ততা দিন দিন কমছে। যা গোটা অথর্নীতিতে নেতিবচাক প্রভাব ফেলতে পারে এমন আশঙ্কার বিষয়ও সামনে উঠে এসেছে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সের (আইআইএফ) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এশিয়ার অন্যদেশের তুলনায় অথর্নীতিতে পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ। অথর্নীতির অন্যতম সূচক দেশের গৃহ ঋণ জিডিপির শতকরা হার হিসেবে ২০০৫ সালের সবোর্চ্চ অবস্থান থেকে সবির্নম্ন স্থানে এসে পেঁৗছেছে। আমরা মনে করি, যখন এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তখন তা আমলে নেয়ার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। ফলে সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। উল্লেখ্য, পারিবারিক গৃহ ঋণ অথর্ হচ্ছে গাড়ি ও আবাসন সম্পকির্ত সম্পদ ক্রয়ে যে অথর্ ব্যয় করা হয়। গৃহ ঋণ ২০০৫ সালে যেখানে জিডিপির ৫ দশমিক ১ শতাংশ ছিল সেখানে ২০১০ সালে কমে ৪ দশমকি ১ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৫ সালে তা আরও কমে ৩.৫ শতাংশে এবং ২০১৮ সালে এসে জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সবির্নম্ন। বলা দরকার, বিশ্বব্যাপী ৭০টি দেশের সদস্য নিয়ে আইআইএফ একটি আন্তজাির্তক সংস্থা। এই সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের অথর্নীতি বিস্তৃত হলেও এই চিত্র স্পষ্টত বলে দেয় যে, অথৈর্নতিক কমর্কাÐে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা কমছে। সাধারণত পারিবারিক বা গৃহ ঋণ অথৈর্নতিক সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গতিপূণর্ হয়। এর পতনপ্রবণতা অথর্নীতিতে একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। এ ছাড়া আমলে নেয়া দরকার, আইআইএফের তথ্যানুযায়ী, ভারতে এই প্রবণতা ঊধ্বর্মুখী হলেও পাকিস্তানে তা নিম্নমুখী, যদিও তাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মতো নয়। এশিয়ার অন্যতম দ্রæত বধর্নশীল অথর্নীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া, যেখানে পারিবারিক ঋণ জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূণর্। যখন অথর্নীতিবিদরা বলছেন, এই চিত্র বাংলাদেশের অথর্নীতির গভীরতা যে কম, তাই প্রমাণ করে, তখন এটাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অথর্নীতিবিদরা এও বলছেন, আথির্ক খাত খেলাপি ঋণ নিয়ে যে সংগ্রামের মধ্যে রয়েছে তাতে করে তারা পারিবারিক ঋণের দিকে মনোযোগ দিতে পারছে না। আমরা মনে করি সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নেয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহাযর্। সবোর্পরি বলতে চই. অথর্নীতির অন্যতম সূচক গৃহ ঋণ ১৪ বছরের মধ্যে সবির্নম্ন পযায়ে, ৮০ শতাংশ ব্যাংক শহরকেন্দ্রিক অথার্য়ন করছে, অথচ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এই চিত্র সঙ্গতিপূণর্ বলেই জানা যাচ্ছে। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি। পলিসি রিসাসর্ ইনস্টিটিউটের নিবাহীর্ পরিচালক বলেছেন, বাংলাদেশের আথির্ক বাজার এখনো পারিবারিক ঋণ বাড়ানোর মতো গভীরতা অজর্ন করেনি। কেননা পারিবারিক ঋণ জামানত বা বন্ধকীর সঙ্গে জড়িত এবং এখনো এ দেশে এ ধরনের ঋণের বিকাশ সেভাবে ঘটেনি। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের প্রধান অথর্নীতিবিদও বলেছেন, বাংলাদেশের আথির্ক বাজার এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনুন্নত। যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এই সূচকে। ফলে সামগ্রিক এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করবে এমনটিই কাম্য।