নজিরবিহীন বৃষ্টিপাত জাপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৬

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক কয়েকদিনের প্রবল বষের্ণর পর নদীর পানি উপচে জাপানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কারুশিকির একটি হাসপাতালে থাকা প্রায় ১০০ জনসহ অন্তত এক হাজার বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জলাবদ্ধ নাগরিকদের উদ্ধারে রোববার জরুরি বিভাগের কমীর্রা হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করেছেন। এদিকে, দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে টানা বৃষ্টির পর সৃষ্ট বন্যা ও ভ‚মিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৬ জনে পেঁৗছেছে। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্ প্রতিবছর জুলাই মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়, পশ্চিম জাপানের কিছু কিছু এলাকায় এবার সে তুলনায় তিনগুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির আবহাওয়াবিদরা। প্রায় পঁাচ লাখ বাসিন্দার শহর কারুশিকি বৃষ্টিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেলিভিশনের ফুটেজে শহরটির মাবি মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যালকনিতে রোগী ও হাসপাতাল কমীের্দর উদ্ধারের আশায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ফুটেজে অসংখ্য গাড়িকে কদর্মাক্ত পানিতে ভাসতে এবং বৃদ্ধাশ্রম থেকে একজনকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধারের চিত্রও দেখানো হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টিপাতের পর বন্যার পানিতে ঘরছাড়া হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। বন্যা ও ভ‚মিধসে মৃতের সংখ্যাও একরাতের মধ্যেই ৪৯ থেকে ৬৬ জনে পেঁৗছেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম ও জাপানের অগ্নি ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকের খবরে এখনো আরও ৬০ জন নিখেঁাজ বলে জানানো হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় অন্তত আরও একদিন বৃষ্টিপাত হবে বলেও পূবার্ভাস তাদের। বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভ‚মিধসের কারণে অনেকেই বাড়িঘরের ভেতরে কিংবা ছাদে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। জাপানের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা জেএমএ-র এক কমর্কতার্ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এ ধরনের বৃষ্টির অভিজ্ঞতা আগে কখনোই হয়নি আমাদের। এটি খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি।’ নিখেঁাজদের মধ্যে ৯ বছর বয়সী একটি শিশুও আছে বলে জানিয়েছেন কমর্কতার্রা। ভ‚মিধসের পর বাড়ির ভেতরেই ছেলেটি আটকা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই ভ‚মিধসে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে কতৃর্পক্ষ। উদ্ধারের পর এনএইচকে টেলিভিশনকে এক নারী বলেন, ‘যা পরনে আছে, শুধু তাই এখন আমার কাছে আছে। আমরা দোতলায় উঠে গিয়েছিলাম, কিন্তু পানি বেড়ে যাওয়ার পর বাধ্য হয়ে তিনতলায় উঠে যাই।’ দুযোর্গ পরিস্থিতির খেঁাজখবর ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে জাপানের সরকার প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ে জরুরি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র খুলেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা ও ভ‚মিধস কবলিত বিস্তীণর্ এলাকায় সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও দমকল বাহিনীর প্রায় ৫৪ হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, ‘এখনো অনেকেই নিখেঁাজ, অন্যদের দরকার সাহায্য। আমাদের সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে হচ্ছে।’ শিকোকু দ্বীপের তিনটি এলাকায় বৃষ্টি সতকর্তা জারি রাখা হয়েছে। আজও ওইসব এলাকাগুলোতে আরও ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টি থেমে গেলেও এবং বেশিরভাগ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও ২০ লাখের মতো বাসিন্দাকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নিদের্শ এখনো বলবৎ রাখা হয়েছে। আরও ২৩ লাখ অধিবাসীকে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যখানে থাকার পরামশর্ দেয়া হয়েছে। ভ‚মিধস বিষয়ে সতকর্তা জারি করা হয়েছে দেশটির এক-চতুথার্ংশেরও বেশি এলাকায়। টানা বৃষ্টির কারণে পশ্চিম জাপানের কিছু এলাকার সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার স্থগিত থাকলেও পরে নিষ্কাশনের বুলেট ট্রেন যোগাযোগ ছোট পরিসরে চালু করা হয়েছে।