কঁাচামরিচ ও পেঁয়াজের উচ্চমূল্য

বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিন

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮, ১৭:৫০

অনলাইন ডেস্ক
রাজধানীর বাজারগুলোতে কঁাচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫ টাকা। আর কঁাচামরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-৩০ টাকা। বাজারভেদে কঁাচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৫-৩০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ অনেক ব্যবসায়ীই এখন পেঁয়াজ মজুদ করছে। তাদের ধারণা পেঁয়াজ মজুদের এখন উপযুক্ত সময়। এখন পেঁয়াজ মজুদ করলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মূলত মজুদের কারণেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর কঁাচামরিচের দাম বেড়েছে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই। অন্যদিকে সবজির দাম কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে শাকের দাম। লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাক আগের সপ্তাহের মতো ১০-১৫ টাকা অঁাটি বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক ও লাউ শাকের অঁাটি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। বাজার এখন সব ধরনের সবজিতে ভরপুর। কোনো সবজির কমতি নেই। পটোল, কঁাকরোল, বরবটি আগে থেকেই বাজারে পযার্প্ত পরিমাণে রয়েছে। এখন নতুন করে বাজারে এসেছে বঁাধাকপি। সবজির এমন সরবরাহ বাড়ার কারণেই দাম কমেছে। তবে পেঁয়াজ কঁাচামরিচের চিত্র ভিন্ন। আমাদের মনে রাখতে হবে পেঁয়াজ কঁাচামরিচ নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় অতি গুরুত্বপূণর্ পণ্য। কৃষিভিত্তিক এ দুটি পণ্য ছাড়া শাক-সবজি, মাছ-মাংস, তরিতরকারিÑ এক কথায় রান্নাবান্না একেবারে অচল। রান্না করা খাদ্যের স্বাদের মান বাড়াতে কঁাচামরিচ পেঁয়াজ অদ্বিতীয়। এ কারণে যুগ যুগ ধরে রান্নাঘরে কঁাচামরিচ-পেঁয়াজ একটা অনন্য আসন অধিকার করে আছে। ধনী-গরিব সবার ঘরে এই পণ্যের চাহিদা সমান। সেই সঙ্গে গুরুত্বও সমান। পেঁয়াজ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। অন্যদিকে কঁাচামরিচ এন্টি অক্সিডেন্টাল। এটিও রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে সাহায্য করে, এতে রয়েছে ভিটামিন সি। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে চাহিদা মেটে না বলেই বাধ্য হয়ে আমাদের পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মৌসুমে ফলন ভালো থাকলে আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা থাকে না বললেই চলে। এবারের চিত্র অবশ্য ব্যতিক্রম। তবে দেশি পেঁয়াজের ঘাটতি হলেই বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রচুর পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়ে থাকে। গত বছর বাজার অস্থিতিশীল করে ব্যবসায়ীরা ফায়দা লুটেছেন। তখন পেঁয়াজের কেজি ১৫০ টাকায় উঠেছিল। ওই সময়ে জনগণের পকেট থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ এদেশের একশ্রেণির অসৎ ও অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সুযোগ পেলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় কারণহীনভাবে। এ কথা বলা অসঙ্গত হবে না, এদেশের এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর অতি বাণিজ্যিক মানসিকতা রয়েছে। কীভাবে ক্রেতাসাধারণের পকেট কাটা যায়, সে দিকেই তাদের মনোযোগ বেশি। সারা বছরই তারা কোনো না কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এই হীন ও ঘৃণ্য কাজটিই অতি মাত্রায় করে থাকে। এ ক্ষেত্রে সততা ও নৈতিকতার কোনো বালাই নেই। তারা যখন-তখন এই সুযোগটা গ্রহণ করে থাকে। সে কারণে সবার আগে দেশের অসৎ ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের মানসিকতার পরিবতর্ন ঘটাতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে বাজার এবং এর বিকল্প নেই।